ইংরেজ আমলে মধ্য দিল্লির যে ভবনটি ফ্ল্যাগস্টাফ হাউজ নামে পরিচিত ছিল, স্বাধীনতার পর ওই বাড়িটিই হয়ে ওঠে দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী নেহরুর বাসভবন। তাঁর মৃত্যুর পর ওই ভবনটিকে লাইব্রেরি এবং মিউজিয়ামে রূপান্তরিত করা হয়। ২০১৪ সালে মোদি ক্ষমতায় আসার পর সেটিকে রূপান্তরিত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। প্রথমে সেখানে গড়ে তোলা হয় ‘প্রধানমন্ত্রী সংগ্রহালয়’, যেখানে ক্রমানুসারে এযাবৎকালীন দেশের সমস্ত প্রধানমন্ত্রীর কৃতিত্ব তুলে ধরার ব্যবস্থা করা হয়। গত বছর সেই মিউজিয়ামের উদ্বোধন হয়। এবার নাম থেকে সরিয়ে দেওয়া হল নেহরুর অস্তিত্ব।
PMML-এর ভাইস চেয়ারম্যান সূর্যপ্রকাশ মঙ্গলবার, ১৪ অগাস্ট বিষয়টি নিয়ে ট্যুইট করেন। তিনি লেখেন, ‘নেহরু মেমোরিয়াল মিউজিয়াম অ্যান্ড লাইব্রেরি, আজ এখন থেকে প্রাইম মিনিস্টার্স মিউজিয়াম অ্যান্ড লাইব্রেরি সোসাইটি। সমাজে গণতন্ত্র এবং বৈচিত্র প্রতিষ্ঠার জন্যই এমন সিদ্ধান্ত। স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা’।
From today, an iconic institution gets a new name. The world renowned Nehru Memorial Museum and Library (NMML) becomes PMML—Prime Ministers’ Memorial Museum and Library.
Mr. Modi possesses a huge bundle of fears, complexes and insecurities, especially when it comes to our first…
— Jairam Ramesh (@Jairam_Ramesh) August 16, 2023
এর পরই নেহরু মেমোরিয়াল মিউজিয়ামের নাম পরিবর্তনের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করতে শুরু করেন বিরোধীরা। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশের কথায়, ‘আজ থেকে ঐতিহাসিক প্রতিষ্ঠানের নয়া নাম হল। বিশ্বপ্রসিদ্ধ নেহরু মেমোরিয়াল মিউজিয়াম অ্যান্ড লাইব্রেরির নাম হল প্রাইম মিনিস্টার্স মেমোরিয়াল মিউজিয়াম অ্যান্ড লাইব্রেরি। মোদির মনে আতঙ্ক ভর করেছে, হীনম্মন্যতা এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন উনি, বিশেষ করে দেশের প্রথম এবং দীর্ঘমেয়াদি প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে। একটাই লক্ষ্য ওঁর, নেহরু এবং তাঁর উত্তরাধিকার অস্বীকার, বিকৃত, কলঙ্কিত এবং বদনাম করা। N-এর মুছে P লিখিয়েছেন উনি, এতে ওঁর Pettiness (সঙ্কীর্ণতা) এবং Peeve(অবজ্ঞাভরা আচরণ)ই প্রকাশিত হয়’। কিন্তু যত চেষ্টাই করুন না কেন, দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেহরুর অবদান, তাঁর পর্বতসমান কৃতিত্ব, ধর্মনিরপেক্ষ, বিজ্ঞানসম্মত, মুক্তমনা চরিত্রের ধারে কাছেও মোদি পৌঁছতে পারবেন না বলে জানান জয়রাম।
#WATCH | Shiv Sena (UBT) leader Sanjay Raut says, “What else are they left with?…You may change the name of the building but you can’t change the name of Pandit Nehru that is mentioned in history. You can’t change the history created by Mahatma Gandhi, Pandit Nehru, Netaji… https://t.co/p7SQ1qIHM8 pic.twitter.com/lZbruVloyW
— ANI (@ANI) August 16, 2023
শিবসেনা (উদ্ধবপন্থী) নেতা সঞ্জয় রাউতের বক্তব্য, “মহাত্মা গাঁধী, পণ্ডিত নেহরু, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, বিনায়ক সাভারকরের মতো ইতিহাস রচনার ক্ষমতা নেই ওদের। চাই নাম পাল্টে চলেছে। এ ছাড়া আর কী করতেই পারে ওরা? নাম পাল্টালেও, ইতিহাস পাল্টাতে পারবেন না আপনারা।”
আম আদমি পার্টির সৌরভ ভরদ্বাজ বলেন, “মৃত্যুর পর কাউকে অসম্মান করার রেওয়াজ নেই আমাদের সংস্কৃতিতে। এই দেশগঠনে জওহরলাল নেহরুর বিরাট অবদান রয়েছে। ওদের সঙ্কীর্ণ রাজনীতিই প্রতিফলিত হচ্ছে।” যদিও কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে এর পাল্টা সাফাইও দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় ভট্টের দাবি, নেহরুকে অসম্মান করা হয়নি। নাম পাল্টানোর ফলে প্রত্যেক প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীই সমান সম্মান পাবেন। কিন্তু সরকারের তরফে সাফাই দেওয়া হলেও, দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রীর নামে নামাঙ্কিত মিউজিয়ামের নাম পরিবর্তন নিয়ে সব মহল থেকেই প্রশ্নের মুখে পড়ছে কেন্দ্র।
(Feed Source: abplive.com)