‘চন্দ্রযান ২’-এর ব্যর্থতাই ছিল রসদ, অবশেষে ‘চাঁদ ছুঁলেন’ পূর্ব মেদিনীপুরের বিজ্ঞানী পীযূষকান্তি

‘চন্দ্রযান ২’-এর ব্যর্থতাই ছিল রসদ, অবশেষে ‘চাঁদ ছুঁলেন’ পূর্ব মেদিনীপুরের বিজ্ঞানী পীযূষকান্তি
আবির দত্ত, জয়ন্ত পাল, কলকাতা: ‘চন্দ্রযান ৩’ -এর গোটা অভিযানেই জেলার জয়জয়কার। ‘চন্দ্রযান ৩’-এর সাফল্যের সঙ্গে নাম জুড়ল পূর্ব মেদিনীপুরের। পাঁশকুড়ার উত্তর কাটাল গ্রামের ছেলে পীযূষকান্তি পট্টনায়ক। ইসরোর বিজ্ঞানী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন ‘চন্দ্রযান ৩’-এর তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের। গর্বিত বঙ্গসন্তান জানিয়েছেন, চন্দ্রযান ২-এর ব্যর্থতাই নতুন অভিযানের আশা জুগিয়েছে। ঘুরে দাঁড়িয়ে মিলেছে সাফল্য। ভবিষ্যতের গবেষণায় এই সাফল্য রসদ জোগাবে বলে মনে করছেন পাঁশকুড়ার প্রত্যন্ত গ্রামের ছেলে পীযূষকান্তি পট্টনায়ক।

‘চন্দ্রযান ৩’ -এর সফল অবতরণের পরে এবিপি আনন্দকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পীযুষ বলেন, ‘চন্দ্রযান ৩-এর সফরটা বেশ কঠিন ছিল। চন্দ্রযান ২-এর অভিযানের সময়ও আমি ইসরোয় ছিলাম। সেসময়ে ‘সফট-ল্যান্ডিং’-এ সমস্যা হচ্ছিল। তবে এবার আমরা আশাবাদী ছিলাম। ‘বিক্রম’-কে পাঠানোর আগে বারে বারে পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়েছিল। আমাদের আশা মতোই সবকিছু ঠিকভাবে হয়ে গিয়েছে, আমরা ভীষণ খুশি।’

বিজ্ঞানী পীযূষকান্তি পট্টনায়ক আরও বলেন, ‘ল্যান্ডিংটা ছিল সবচেয়ে কঠিন। তবে এই কাজটা তো আমার একার নয়। আমরা হাজার হাজার লোক একসঙ্গে, একই লক্ষ্যে কাজ করছিলাম। শেষ ৩-৪ বছর ধরে, প্রচুর মানুষের কঠিন পরিশ্রমের কারণেই এই সাফল্য এসেছে। তবে এখনও প্রোজেক্টটা শেষ হয়নি। আগামী ১৪ দিন গুরুত্বপূর্ণ কাজ করবে রোভার। ল্যান্ডিংয়ের সময় ঘড়িতে চোখ ছিল না কারও। সবাই যেন নিঃশ্বাস আটকে বসে রয়েছে। কি হয়.. কি হয় পরিস্থিতি। ৬টা ৩ বা ৬টা ৪.. মাথায় ছিল না কারও। কেবল স্ক্রিনে প্যারামিটারগুলো দেখছিলাম আমরা। অবতরণের সময় উচ্চতা, পরিবেশ কেমন.. সেদিকে চোখ রাখতে রাখতে, নিমেষের মধ্যেই যেন অবতরণটা হয়ে গেল।’

কেমন ছিল পাঁশকুড়া থেকে ইসরোর সফরটা? পীযূষকান্তি বলছেন, ‘ছোটবেলা থেকে বিজ্ঞানী হওয়ার লক্ষ্যেই যে পড়াশোনা করেছি এমনটা নয়। গ্রামের স্কুল থেকেই পড়াশোনা করেছি। কল্যাণী সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে বি টেক, তারপরে খড়গপুর আই আইটি থেকে এমটেক করি। এম টেক করা কালীনই ইসরোয় পরীক্ষা দিয়েছিলাম। সেই মতোই নির্বাচিত হয়েছিলা।’

পীযূষকান্তি জানাচ্ছেন, ইসরোয় তিনি যে দলে ছিলেন, তার কাজ মূলত ছিল চন্দ্রযানের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের। মহাকাশে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন তাপমাত্রা হয়ে থাকে। অথচ যন্ত্রপাতি কাজ করার জন্য প্রয়োজন সঠিক তাপমাত্রার। সেই বিষয়টাই নজরে ছিল পীযূষকান্তির দলের। অবশেষে সাফল্য.. তবে এখনও অনেকটা দৌড় বাকি পীযূষকান্তিদের।

(Feed Source: abplive.com)