‘বিশ্বাসঘাতকতা’ ক্ষমা করতে পারেন না পুতিন, ওয়াগনার-প্রধানের মৃত্যুর পর তুঙ্গে জল্পনা

‘বিশ্বাসঘাতকতা’ ক্ষমা করতে পারেন না পুতিন, ওয়াগনার-প্রধানের মৃত্যুর পর তুঙ্গে জল্পনা
মস্কো: মানুষের কোন ভুল ক্ষমা করতে পারেন না? প্রশ্ন করেছিলেন এক সাংবাদিক। খানিক থেমে জবাব আসে, ‘বিশ্বাসঘাতকতা। (Betrayal)’ বক্তার নাম? ভ্লদামির পুতিন (Russian President Vladimir Putin)। ওয়াগনার প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোঝিনের (Wagner Chief Yevgeny Prigozhin Death) মৃত্যুর খবর চাউর হতেই রুশ প্রেসিডেন্টের এই উত্তর মনে পড়ে গিয়েছে অনেকের। তা হলে কি মাসদুয়েক আগেকার পুতিন-বিরোধিতাই কাল হল ভাড়াটে সেনা সংগঠনের প্রধান প্রিগোঝিনের? এই মুহূর্তে সেই রকমই ইঙ্গিত নানা মহলে। যদিও যে বিমান দুর্ঘটনায় প্রিগোঝিনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর, সেটিকে ‘মর্মান্তিক’ বলে প্রতিক্রিয়া দেন রুশ প্রেসিডেন্ট। নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে সমবেদনাও জানান তিনি।

পুতিন, বিশ্বাসভঙ্গ, প্রতিশোধ…
২০১৮ সালে ‘কেজিবি’-এর প্রাক্তন অফিসার পুতিনকে নিয়ে একটি দু’ঘণ্টার তথ্যচিত্র হয়েছিল। সেখানেই তাঁকে এক সাংবাদিক জিজ্ঞাসা করেন, ‘ভুলচুক ক্ষমা করতে পারেন?’ পুতিন জবাব দিয়েছিলেন, ‘পারি, তবে সব ভুল ক্ষমা করতে পারি না।’ তখনই জানতে চাওয়া হয়েছিল, ‘মানুষের কোন ভুল ক্ষমা করতে পারেন না?’ সেই প্রশ্নের জবাব এখন ফের আলোচনার কেন্দ্রে। তবে প্রিগোঝিনের মৃত্যুই যে এই আলোড়নের একমাত্র কারণ তা নয়। ওয়াকিবহাল মহল মনে করাচ্ছে, অতীতেও পুতিনের কট্টর সমালোচক থেকে শুরু করে প্রাক্তন সহকর্মী, একের পর এক ব্যক্তিদের রহস্যজনক মৃত্যু বার বার সন্দেহের বাতাবরণ তৈরি করেছে। যেমন ধরা যাক, আলেকজান্দার লিতভিনেনকো-এর কথাই ধরা যাক। ২০০৬ সালে ওই প্রাক্তন এফএসবি অফিসারকে লন্ডনের এক হোটেল বারে চায়ের সঙ্গে তেজস্ক্রিয় উপাদান মিশিয়ে পান করানো হয়েছিল বলে অভিযোগ। তাতে মৃত্যু হয় লিতভিনেনকো-এর। ব্রিটেনের দাবি, এই ‘খুন’-এর নির্দেশ দিয়েছিলেন স্বয়ং রুশ প্রেসিডেন্ট। রুশ সেনা গুপ্তচর সংস্থা থেকে ফেরার সের্গেই স্ক্রিপালের উপর আবার হামলার অভিযোগ ওঠে ২০১৮ সালে। সে বারও ব্রিটেন অভিযোগ করে, সোভিয়েত-জমানার নার্ভ এজেন্ট ‘নোভিচক’ ব্যবহার করা হয়েছিল স্ক্রিপালের উপর। এছাড়াও ২০০৬ সালে পুতিনের জন্মদিনেই সাংবাদিক অ্যানা পোলিতকোভিস্কায়ার উপর গুলিচালনা, ২০১৫ সালে প্রধান বিরোধী নেতা বরিস নেমস্তভকে খুনের মতো ঘটনা ঘটে। বহু এমন মৃত্যুও ঘটেছে যার কারণ স্পষ্ট ভাবে জানা সম্ভব হয়নি। তবে পারিপার্শ্বিক প্রমাণ থেকে পশ্চিমি দুনিয়ার একাংশ সেগুলির জন্য বার বার পুতিনকেই দায়ী করেছে। সে সব মাথায় রাখলে প্রিগোঝিনের সঙ্গেও যে এমন হয়নি, তা জোর দিয়ে বলা কঠিন।

বিমান বিপর্যয়…
বুধবারের বিমান বিপর্যয় নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে মস্কো। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তদন্তকারীদের মুখে কুলুপ।এটিও জল্পনা বাড়িয়েছে। অন্য দিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি স্পষ্ট জানিয়েছেন ভাড়াটে সেনা সংগঠন ওয়াগনার প্রধানের মৃত্যুর সঙ্গে তাদের কোনও যোগ নেই। বৃহস্পতিবার পুতিন তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘প্রিগোঝিনকে বহু সময়, নব্বই দশকের গোড়ার দিক থেকে চিনি। চড়াই-উতরাইয়ের ভাগ্য ছিল তাঁর। অনেক ভুলত্রুটি করেছিলেন তিনি। তবে সঠিক ফলও পেয়েছেন।’ রুশ প্রেসিডেন্টের এমন কথায় আরও বেড়েছে গুঞ্জন। তাহলে কি…?

(Feed Source: abplive.com)