দু-মাস আগেই পুজোর বিজ্ঞাপন কেন? সাবধান! এবার ‘কড়া’ পদক্ষেপ করতে পারে পুরসভা

দু-মাস আগেই পুজোর বিজ্ঞাপন কেন? সাবধান! এবার ‘কড়া’ পদক্ষেপ করতে পারে পুরসভা

পুজোর দুমাস বাকি থাকতেই দেদার বিজ্ঞাপন। যে সে বিজ্ঞাপন নয়, এটা কিন্তু পুজোর বিজ্ঞাপন। তাতে বিজ্ঞাপন বেশি, পুজো কম। এইরকম বিজ্ঞাপনের ব্যানারের বিরুদ্ধেই পুজো কমিটির একাংশের প্রতিবাদ। এবার অভিযানে নামছে পুরসভা।

কলকাতার পুজো এখন বিশ্বমানের। পুজোকে আন্তর্জাতিক স্তরে তুলতে পুজো কমিটিগুলোকে নানাভাবে সহযোগিতা করে রাজ্য সরকার। পুজোর বিজ্ঞাপনে কর থেকে আগেই ছাড় দিয়েছে কলকাতা পুরসভা। অভিযোগ, সেই সুযোগেই পুজোর দুমাস আগে থেকেই শহর জুড়ে পুজোর ব্যানার। নামেই পুজোর ব্যানার, তাতে বিজ্ঞাপন বেশি, পুজো কমিটির নাম দূরবিন দিয়ে দেখতে হয়। চাঁদা তুলে আর পুজো হয় না। বিজ্ঞাপন দাতারাই এখন কলকাতার আন্তর্জাতিক পুজোর ভরসা। সারা বছরই পুজো কমিটিগুলির সমাজসেবায় থাকে বিজ্ঞাপনদাতারা। তাই বিজ্ঞাপন দাতাদের আবদার ও রাখতে হয়। স্পষ্ট জবাব পুজো উদ্যোক্তাদের।

সন্তোষপুর লেকপল্লী পুজো কমিটির তরফে সোমনাথ দাস বলেন, সারা বছর পুজো কমিটির নানা আবদার মেটাল এই বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলি। পুজোর সময় তাদের কিছুটা আবদার তো মেটাতেই হয় আমাদের। তাছাড়া পুজোর কিছুদিন আগেই এই ব্যানার পোস্টার দেওয়া কলকাতার প্রথা। পুজোকে আন্তর্জাতিক মানে নিয়ে যেতে বিজ্ঞাপন দাতাদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। এখন তো আর পাড়ায় পাড়ায় চাঁদা তুলে এই আন্তর্জাতিক মানের পুজো করা সম্ভব নয়। তাই পুজোয় বিজ্ঞাপন থাকবে এটাকে অস্বীকার করা যায় না।

কলকাতার প্রায় ৫০০ পুজো কমিটির মাথায় রয়েছে ফোরাম ফর দুর্গোৎসব। সেই ফোরামের কর্তারা অবশ্য এ ধরনের বিজ্ঞাপনের বিরোধী। ২০১৯ সালেও কলকাতা পুরসভাকে সতর্ক করেছিল ফোরাম। এই ধরনের বিজ্ঞাপন কোনওভাবেই সমর্থন করে না ফোরাম ফর দুর্গোৎসব। ফের কলকাতা পুরসভাকে দিয়ে এই ধরনের বিজ্ঞাপনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেছে তারা।

ফোরাম ফর দুর্গোৎসবের সাধারণ সম্পাদক শাশ্বত বসু বলেন, পুজোয় বিজ্ঞাপনের বিরোধী নন তিনি। কারণ বিজ্ঞাপন ছাড়া পুজো সত্যিই অসম্ভব। কিন্তু বিজ্ঞাপন দাতারাই নিয়ন্ত্রণ করবেন, তার বিরোধী ফোরাম। সামঞ্জস্য রেখে পুজো কমিটি ও বিজ্ঞাপন দাতাদের এগোতে হবে পূজোর উৎসবে।  তাই ২০১৯ সালের মতো এবারেও কলকাতা পুরসভ কে চিঠি দিয়ে বেনিয়মের বিজ্ঞাপনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে ফোরাম।

পুজোর আগে থিমের লড়াই থাকে ব্যানার জুড়ে। এতদিন শহর জুড়ে বিজ্ঞাপনে ছিল পুজো কমিটির একমাত্র ভরসা। এখন বেশিরভাগ জায়গায় নিয়েছে সোশ্যাল সাইট। তবুও পুজো এলেই বিজ্ঞাপনে মুখ ঢেকে যায়। কলকাতা পুরসভার তরকে পুজোর আগে এ ধরনের বিজ্ঞাপনে কোনও বিনোদন কর নেওয়া হয় না। তাই বলে দুমাস আগে নামে বিজ্ঞাপন দাতাদের রমরমা মানবে না কলকাতা পৌরসভা, জানিয়ে দিলেন বিজ্ঞাপন এর দায়িত্বে থাকা মেয়র পারিষদ।

মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, এ বিষয়ে কলকাতা পুরসভা সতর্ক। পুজো কমিটির উদ্যোক্তাদের সংগঠন ফোরাম ফর দুর্গোৎসবও এই ধরনের বিজ্ঞাপনের পরিপন্থী। পুজোর আগে পুজোর বিজ্ঞাপনে অবশ্যই কর ছাড় রয়েছে। কিন্তু দুমাস আগে বিজ্ঞাপনের জন্য বিজ্ঞাপন দিলে তা খুলে ফেলবে কলকাতা পৌরসভা। ইতিমধ্যেই অভিযান শুরু হয়েছে বলে জানান মেয়র পরিষদ।

(Feed Source: news18.com)