জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: এক যুবক তাঁর স্ত্রীকে মারধর করলেন এবং বের করে দিলেন বাড়ি থেকে। কী মহিলার ‘অপরাধ’? একটাই অপরাধ, তিনি তাঁর শ্বশুরের কাছে ধর্ষিতা হয়েছেন! তাই তাঁর ‘আদর্শবাদী’ স্বামী তাঁকে বলেছেন, যেহেতু বাবা তোমার সঙ্গে সঙ্গম করেছেন, সেহেতু তুমি এখন আমার ‘মা’ হয়ে গেলে, তোমাকে স্ত্রী হিসেবে আর মেনে নিতে পারছি না!
মাত্র এক বছর আগেই তাঁর বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু, আর পাঁচজনের মতো সুখে সংসার করা সম্ভব হয়নি ২৬ বছরের ওই যুবতীর। স্বামীর অনুপস্থিতিতে তাঁকে ধর্ষণ করেছে তাঁর শ্বশুর, এমনই অভিযোগ যুবতীর। এই পরিস্থিতিতে অবশ্য স্বামীকে পাশে পাননি স্ত্রী। বরং, শ্বশুরের অপকর্মের জন্য শাস্তি পেতে হয়েছে তাঁকেই। ধর্ষণকাণ্ডের কথা জেনে বাবার উপর বিন্দুমাত্র না রেগে উল্টে স্ত্রীকেই বাড়ি থেকে বের করে দিলেন স্বামী। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর প্রদেশের মুজফ্ফরনগর জেলায়। তবে ওই যুবতীর অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর স্বামী ও শ্বশুরের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে পুলিস।
পুলিসের কাছে যে অভিযোগ জানিয়েছিলেন ওই যুবতী, তাতে তিনি জানান, ঘটনার সূত্রপাত এই বছরেরই অগস্টে। সেদিন তাঁর স্বামী বাড়ি ছিলেন না। সেই সুযোগে শ্বশুর তাঁকে ধর্ষণ করেন। শুধু তাই নয়, তিনি বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য বউমাকে হুমকিও দেন বলে অভিযোগ। পরে জানা যায়, ওই মহিলা মাসসাতেকের অন্তঃসত্ত্বা। যদিও পুলিসের কাছে অভিযোগ লেখাতে গিয়ে সেটা তিনি উল্লেখ করেননি। তবে স্ত্রীর অভিযোগ পাওয়ার পরে পুলিস বিভিন্ন ধারায় স্বামী ও শ্বশুরের নামে মামলা করে।
এদিকে অভিযুক্ত শ্বশুর তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে উল্টে দাবি করেন, নির্যাতিতা টাকা পয়সা দাবি করার লোভে তাঁর বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ এনেছে।
ফৌজদারি বিধি মেনে জেলাশাসকের সামনে নির্যাতিতার বয়ান নথিবদ্ধ করা হয়। মহিলার স্বামী ও শ্বশুরের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির আওতায় ধর্ষণ, ইচ্ছাকৃত আঘাত, অপরাধমূলক হুমকির মতো অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে পুলিস।
প্রসঙ্গত, ২০০৫ সালের প্রায় একই ধরনের এক ঘটনায় গ্রামে খাপ পঞ্চায়েত বসানো হয়েছিল ঘটনার বিহিত করতে। সেখানে অভিযুক্ত শ্বশুরের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ তো করা হয়ইনি, উল্টে নির্যাতিতাকে বলা হয়েছিল, যেহেতু তাঁর শ্বশুর তাঁর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছেন সেহেতু তিনি এখন ঘটনাচক্রে শ্বশুরের বউ, ফলে স্বামীকে তিনি যেন সন্তানের মতো দেখেন!
(Feed Source: zeenews.com)