খালিস্তানপন্থীর মৃত্যুতে কানাডাকে তথ্য জোগায় আমেরিকাই, দাবি ঘিরে শোরগোল

খালিস্তানপন্থীর মৃত্যুতে কানাডাকে তথ্য জোগায় আমেরিকাই, দাবি ঘিরে শোরগোল
নয়াদিল্লি: খালিস্তানপন্থী শিখ নেতার মৃত্যুতে ভারত এবং কানাডার মধ্যে সংঘাত চরমে। সেই আবহেই এবার চাঞ্চল্যকর দাবি সামনে এল। খালিস্তানপন্থী, বিচ্ছিন্নতাকামী নেতা হরদীপ সিংহ নিজ্জরের (Nijjar Murder Case) মৃত্যুতে আমেরিকাই নাকি কানাডাকে তথ্য দিয়ে সাহায্য করে, দাবি আমেরিকার জনপ্রিয় সংবাদপত্রের। বলা হয়েছে, আমেরিকার থেকে তথ্য হাতে পাওয়ার পরই হত্যার নেপথ্যে ভারতের যুক্ত থাকার ইঙ্গিত পায় কানাডা। তাতেই দেশের সংসদে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সরাসরি দিল্লির দিকে আঙুল তোলেন। (India-Canada Relations)

আমেরিকা, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা এবং নিউজিল্যান্ড-এই পাঁচ দেশের জোটকে বলা হয় ‘ফাইভ আইজ পার্টনার্স’। আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নজরদারি থেকে গোয়েন্দাদের থেকে প্রাপ্ত তথ্য পরস্পরের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নেয় এই পাঁচ দেশ। জোটের এক আধিকারিককে উদ্ধৃত করে আমেরিকার জনপ্রিয় সংবাদপত্র নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, হরদীপের মৃত্যু নিয়ে কানাডাকে তথ্য দেয় আমেরিকাই।

নিউ ইয়র্ক টাইমসের রিপোর্টে ওই আধিকারিককে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, ‘হত্যাকাণ্ডের পর পর, আমেরিকার গোয়েন্দারা কানাডীয় সহযোগীদের তথ্য সরবরাহ করে। তার উপর ভিত্তি করেই ভারতের যুক্ত থাকার সম্ভাবনা পর্যন্ত পৌঁছতে সক্ষম হয় কানাডা’। যদিও আমেরিকা ভারতের যুক্ত থাকার সম্ভাবনা নিয়ে ওয়াকিবহাল ছিল না, সেই সংক্রান্ত কোনও প্রমাণও তাদের হাতে আসেনি। বরং আড়ি পেতে ভারতীয় কূটনীতিকদের কথোপকথন শুনতে শুরু করে। তাতেই নাকি ভারতের যুক্ত থাকার ইঙ্গিত মেলে।

চলতি বছরের ১৮ জুন ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় খুন হন হরদীপ। কানাডার নাগরিকত্ব ছিল তাঁর। পঞ্জাবকে ভেঙে পৃথক খালিস্তান রাজ্যের দাবি করে আসছিলেন তিনি। নিউ ইয়র্ক টাইমসের খবর অনুযায়ী, হত্যাকাণ্ডের আগেই হরদীপকে সতর্ক করেছিলেন কানাডার আধিকারিকরা। প্রাণের ঝুঁকি রয়েছে বলে মন্দির বা বাইরে কোথাও একা যেতে নিষেধ করা হয় তাঁকে। সেই আশঙ্কাই সত্য প্রমাণিত হয়।

বিষয়টি নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি আমেরিকা সরকার। তবে কানাডায় আমেরিকার রাষ্ট্রদূত ডেভিড কোহেনও একই দাবি করেছেন। কানাডার একটি টেলিভিশন চ্যানেল তাঁকে উদ্ধৃত করে জানায়, আমেরিকা, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা এবং নিউজিল্যান্ড-এই পাঁচ দেশের ‘ফাইভ আইজ পার্টনার্স’ জোট আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নজরদারি থেকে গোয়েন্দাদের থেকে প্রাপ্ত তথ্য ভাগাভাগি করে নেয়। সেই তথ্য়ের উপর নির্ভর করেই ওই দাবি করেন ট্রুডো।

হরদীপের মৃত্যুতে ভারতের ভূমিকা ছিল বলে দাবি করেছেন ট্রুডো। ভারতীয় এজেন্টরা সে দেশে হিংসাত্মক কাজকর্মে লিপ্ত হচ্ছেন, তাতে কানাডার নিরাপত্তা এবং সার্বভৌমিকতা নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন দেশের পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে। দিল্লি যদিও তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে খালিস্তানপন্থী, ভারতবিরোধী শক্তিকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে। এই টানাপোড়েনের মধ্যে তদন্তে ভারতকে সহযোগিতা করতে আর্জি জানায় আমেরিকা। ব্রিটেন এবং অস্ট্রেলিয়াও একই কথা বলে। দিল্লির তরফে যদিও এখনও পর্যন্ত তেমন কোনও ইঙ্গিত নেই।

(Feed Source: abplive.com)