ভালবেসেছিলেন ওয়াহিদাকে, কেন এত অল্পবয়সেই চলে গেলেন গুরু দত্ত ?

ভালবেসেছিলেন ওয়াহিদাকে, কেন এত অল্পবয়সেই চলে গেলেন গুরু দত্ত ?

কলকাতা: সমাজের যে স্তরেই পৌঁছনো যাক না কেন, মানসিক অবসাদে ভোগেননি এমন মানুষের সংখ্যা খুব কম। তাই সেই তালিকায় সাধারণের পাশাপাশি রয়েছেন সেলেবরাও। সাম্প্রতিককালে ডিজিট্যাল লাইফ আসার পর সেই সংখ্যাটা অনেকটা পরিমাণে বাড়লেও, ৯০ দশকের আগেও খুব একটা কম ছিল না। এবং এই মানসিক অবসাদের কারণ হিসেবে আর্থিক অবস্থা থেকে শুরু করে প্রেমের সম্পর্কেই পাল্লা ভারী। ডিপ্রেশন থেকে অনেকেই আত্মহত্যা করেছেন। অনেকেই আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। বলিউডের আকাশে বাতাসে ভাসে আরও একটা নাম। শোনা যায় আর সেই তালিকায় রয়েছেন খোদ ভারতের ক্লাসিক সিনেমার জনক গুরু দত্ত (Guru Dutta)।

সালটা ১৯৫০। সেইসময় বিখ্যাত গায়িকা গীতা রায় চৌধুরীর প্রেমে পড়েছিলেন গুরু দত্ত। তার প্রথম ছবি বাজির-র প্লে ব্যাক সিঙ্গার ছিলেন গীতা। সেই শুরু ভালবাসার পথ চলার। আর প্রেম থেকেই পরিবারের অমতে ১৯৫৩ সালে গীতা রায় চৌধুরীকে বিয়ে করেছিলেন।কিন্তু তার মাঝেই আসে নয়া মোড়। বিয়ের মাত্র তিন বছরের মাথাতেই ১৯৫৬ সালে গুরু দত্তর সঙ্গে পরিচয় হয় ওয়াহিদা রহমানেরতখন সবে তেলেগু ছবিতে নাম করেছেন ওয়াহিদা।। ওয়াহিদাকে দেখেই মনে দাগ কেটে গিয়েছিল গুরু দত্তর। ব্যাস আর কি, তখনই তাঁকে নিয়ে মুম্বই চলে আসেন গুরু দত্ত। এরপরেই পিছনে ফিরে তাঁকাননি। নিজেরই প্রযোজিত সিআইডি ছবিতে খলচরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ করে দেন ওয়াহিদাকে।

এরপর পিয়াসা, চৌধভি কা চাঁদ-সহ একের পর এক ছবিতে ওয়াহিদাময় ফ্রেম। তবে চৌধভি কা চাঁদ ছবিতে ওয়াহিদার বিপরীতে অভিনয় করে সকলকে অবাক করে দেন গুরু দত্ত। যদিও এটা আদতেই অভিনয়, নাকি আসলেই মনে কথা , সেটা ক্রমশই বাইরে বেরিয়ে আসে। কারণ ততদিন ওয়াহিদার প্রেমে পড়ে গিয়েছে গুরু দত্ত। তবে আরও দশটা দাম্পত্য সম্পর্কের মতোই তারও ব্যক্তিগত জীবনে ঝড় উঠেছিল। গীতা দত্ত তাঁকে ছেড়ে চলে যান। বিবাহ বিচ্ছেদ ছাড়াই আলাদা থাকা শুরু করেন। কিন্তু এখানে গিয়েছে এক সমান্তরাল রেখা। যেখানে গুরু দত্ত ভালবেসেছেন দুই তরফেই সমানে। তবে এই ঝড় গুরু দত্তের জীবন ছাড়খার করে দেয়।

অসাধারণ অভিনয়, চিত্রনাট্য, পরিচালনা সত্ত্বেও মুখ থুবড়ে পড়ে গুরু দত্ত এবং ওয়াহিদা রহমানের ছবি কাগজকে ফুল। ছবিটি বাণিজ্য়িক সাফল্য পায়নি। তাঁদের এই প্রেম অনেকেই মেনে নিতে পারেননি।  একদিকে ক্যারিয়ার এর পরেই ক্রমশ মুখ থুবড়ে পড়ে। আর এমন এক ভয়াবহ অন্ধকারের মধ্যেই ওয়াহিদাও তাঁকে ত্যাগ করেন। যদিও গুরু দত্ত যেহেতু তখনও বিবাহিত ছিলেন, তাঁর জীবনে শান্তি ফেরাতেই দূরে সরে যান ওয়াহিদা, বলেই তথ্য জানান দেয়। ১৯৬২ সালে তাঁদের শেষবারের মতো এক ফ্রেমে দেখতে পাওয়া যায়। ছবির নাম সাহেব বিবি অউর গোলাম। যদিও ততদিন প্রায় সবশেষ। অসীম শূন্যতা ঘিরে ধরেছে গুরু দত্তকে। ওয়াহিদা ছেড়ে চলে যাবার পরেই দু দুবার আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন গুরু দত্ত। ১৯৬৪ সালেই সব শেষ। আজকেই দিনেই চির ঘুমের দেশে পাড়ি দেন ক্লাসিক ভারতীয় ছবির জনক গুরু দত্ত।

(Feed Source: abplive.com)