দুবাইয়ে মিলল রেশন দুর্নীতিতে ধৃত বাকিবুর রহমানের জোড়া ফ্ল্যাটের হদিশ, ছিল পালানোর পরিকল্পনা ?

দুবাইয়ে মিলল রেশন দুর্নীতিতে ধৃত বাকিবুর রহমানের জোড়া ফ্ল্যাটের হদিশ, ছিল পালানোর পরিকল্পনা ?
প্রকাশ সিনহা, কলকাতা : কলকাতা, বেঙ্গালুরুর পর দুবাই ! ED সূত্রে খবর, এবার মন্ত্রী ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী ধৃত বাকিবুর রহমানের (Bakibur Rahman) জোড়া ফ্ল্য়াটের হদিশ মিলল দুবাইয়ে। যার মোট আনুমানিক মূল্য ৮ থেকে ১০ কোটি টাকা ! ইতিমধ্যে বাকিবুরের ৩টি চালকল, ২টি গমকল, বেশকিছু পানশালা, একাধিক হোটেল, পোর্শের মতো একাধিক বহুমূল্যের গাড়ির খোঁজ পেয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। কীভাবে এই বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হলেন রেশন বণ্টন দুর্নীতিতে অভিযুক্ত বাকিবুর, সেই খোঁজই শুরু করেছে ইডি।

করোনাকালে রাজ্যের বহু জায়গায় রেশন বণ্টনে দুর্নীতির (Ration Distribution Scam) অভিযোগ ওঠে। তাতে বিপুল টাকা তছরুপের অভিযোগ ওঠায়, ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে ECIR দায়ের করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। সেই মামলায় ১১ অক্টোবর কাকভোর থেকে, কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা ও নদিয়ার মোট ১২টি জায়গায় হানা দেয় ED। যার মধ্যে ছিল কৈখালিতে বাকিবুর রহমানের অভিজাত আবাসনের ফ্ল্যাটও ! গত শুক্রবার গভীর রাতে ম্যারাথন তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁকে গ্রেফতার করে ইডি।

তারপর থেকেই একে একে সামনে আসতে শুরু করেছে বাকিবুরের ‘সাম্রাজ্য’। যার মধ্য়ে, কৈখালিতে রয়েছে অভিজাত আবাসনে ফ্ল্য়াট। এয়ারপোর্টের কাছে চিনার পার্কে সাততলা হোটেল। ইডি সূত্রে দাবি, কলকাতার পাশাপাশি বেঙ্গালুরুতেও হোটেল রয়েছে ধৃত মন্ত্রী ঘনিষ্ঠ বাকিবুরের। এবার বাকিবুরের সম্পত্তির তালিকায় জুড়ল দুবাইয়ের ফ্ল্য়াটও !

কিন্তু বিদেশে কেন ফ্ল্যাট কিনলেন ব্যবসায়ী বাকিবুর ? রেশন দুর্নীতি মামলায় আন্তর্জাতিক যোগ রয়েছে বলে সোমবারই আদালতে দাবি করেছিল ED। এবার দুবাইয়ে ফ্ল্য়াটের হদিশ মিলল। তবে কি বিদেশে পালানোর ছক ছিল বাকিবুরের ? সেই সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না ইডি-র অফিসাররা। বিদেশে ফ্ল্যাট কেনার মতো এত টাকাই বা এল কোথা থেকে ? দুর্নীতির কালো টাকাতেই কি বিদেশে ফ্ল্যাট কিনেছেন তিনি ? হেফাজতে থাকা বাকিবুরকে জিজ্ঞাসাবাদ ও বাজেয়াপ্ত নথি পরীক্ষা করে এখন এসব প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজছেন ইডির অফিসাররা।

যতই সম্পত্তি উদ্ধার হচ্ছে, ততই তুঙ্গে উঠছে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) কটাক্ষ, ‘ভাইপোরও দুবাইয়ে ফ্ল্যাট রয়েছে। বাকিবুরেও রয়েছে। নন্দীগ্রামের লোক মরেছে। আমরা খেটে মরেছি। আর এরকম বাকিবুররা তৈরি হয়েছে।’ গোটা ঘটনা নিয়ে তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন বলেছেন, ‘দলের পক্ষ থেকে আগেই জানানো হয়েছে বাকিবুরের সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই। তদন্তকারীরা তদন্ত করে দেখুক। তাঁরা বলছেন বিদেশে পালিয়ে যেতে পারত। কিন্তু মেহুল চোকসি, নীরব মোদিরা তো দেশের থেকে টাকা নিয়ে বাইরে গিয়ে বসে রয়েছে। তাঁদের ফেরাতে কেন কোনও কাজ করতে পারছে না বিজেপি।’

নেপথ্য়ে কোনও প্রভাবশালী না থাকলে এই বিপুল সম্পত্তির মালিক হতে পারতেন না বাকিবুর। এমনই অনুমান ইডি অফিসারদের। প্রশ্ন এখন, সেই প্রভাবশালী কে ? তাঁর হদিশ মিলবে কবে ?

(Feed Source: abplive.com)