‘একটা স্বপ্নের অকালমৃত্যু ঘটেছে, এই জীবন আমি চাইনি’, কেন কাঁদলেন বৈশাখী?

‘একটা স্বপ্নের অকালমৃত্যু ঘটেছে, এই জীবন আমি চাইনি’, কেন কাঁদলেন বৈশাখী?

বছর তিনেক আগে চাকরি থেকে ইস্তফা দেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। মিল্লি আল আমিন কলেজের অধ্যাপিকা এবং ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষা ছিলেন বৈশাখী। কিন্তু ফিরহাদ হাকিমের বিরুদ্ধে অভব্যতার অভিযোগ আনার পরই তাঁকে বদলি করা হলে চক্রান্ত ও হেনস্থার অভিযোগ এনে ইস্তফা দেন বৈশাখী। এরপর কেটেছে অনেকটা সময়। কিন্তু শিক্ষকতা না করার যন্ত্রণা প্রতি মুহূর্তে কুড়ে কুড়ে খায় শোভন-বান্ধবীকে। সম্প্রতি আনন্দবাজারের পুজো আড্ডার ফাঁকেই সেই মন খারাপের কথা ভাগ করতে গিয়ে চোখে জল বৈশাখীর।

পড়ানো কতটা মিস করেন? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,‘পুজো আসছে, সব জায়গায় একরাশ আনন্দ। যেদিন আমি ইস্তফা লিখছিলাম, সেই যন্ত্রণাটা আজও রয়ে গিয়েছে। মনে হয়েছিল একটা স্বপ্নের অকালমৃত্যু ঘটছে। এই কেরিয়ারটায় কোনও দাগ ছিল না।’ কোনও গডফাদার ছাড়া নিজের যোগ্যতায় ওইখানে পৌঁছেছিলেন বলে জানান বৈশাখী। তাঁর পালটা প্রশ্ন, ‘কিন্তু যাদের কারণে আমাকে ছাড়তে হল, যাদের সিদ্ধান্তকে ধিক্কার জানিয়ে আমি ছেড়ে বেরিয়ে এলাম, তাদেরকে নিয়ে আমার শুধু একটাই প্রশ্ন ছিল, আমি কি এটা ডিজার্ব করি? এই প্রশ্নটা এখনও আমাকে তাড়া করে বেড়ায়’। চোখের জল মুছতে মুছতেই তিনি বলেন, ‘ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে এখন দেখা হয় না। নতুন কিছু পড়লে তাদের সঙ্গে শেয়ার করতে পারি না। নিশ্চয়ই যন্ত্রণা রয়েছে। মনে হয়, এই জায়গাটা অবধি কেন যেতে হল?’

কঠিন সময়ে বান্ধবী বৈশাখীকে আগলেছিলেন শোভন। তাঁর পাশে দাঁড়াতে ফোন করেন দীর্ঘদিনের সহকর্মী তথা তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। বৈশাখী জানান, শোভন ফোন করে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে বলেন- ‘তুমি এটা কি করে করলে? তুমি তো সবার সামনে বলেছিলে বৈশাখী আমার দায়িত্ব। ওর গায়ে যাতে আঁচ না লাগে সেটা তুমি দেখছো। পার্থদা তখন ববি হাকিমের নাম নিয়ে বলল- ববি চাইছে, তাই ওকে সরাতে হল’। খানিক ক্ষোভের সুরে বৈশাখী জানান, ‘আমার চাকরিটা কিন্তু কোনও ববি হাকিম বা পার্থ চট্টোপাধ্যায় দেয়নি। তাহলে তাদের ইচ্ছেতে আমার কেরিয়ারটা শেষ হল কেন?’

কেরিয়ারের সব ডকুমেন্টস মিল্লি আল আমিনের লকারেই ফেলে এসেছেন বৈশাখী। নিজের সব সার্টিফিকেট জ্বালিয় দিতে গিয়েছিলেন তিনি। মনে মনে নিশ্চিত ছিলেন সরকারের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করবেন। কিন্তু শোভনের জন্য পিছিয়ে আসেন। জানান, ‘ও শুধু বলেছিল বৈশাখী আমিও এই সরকারের পার্ট ছিলাম। বুঝলাম, হয় ওর আনুগত্য জিতবে নয় আমার জেদ। কিন্তু আমি জানি কী পরিণতি হয়েছে, কী যন্ত্রণা হয়েছে…. এই জীবনটা আমি বাঁচতে চাইনি’ গলা ধরে আসে তাঁর।

(Feed Source: hindustantimes.com)