Arifin Shuvoo: ‘একটা কথা চিরকাল মনে থাকবে…’ ‘মুজিব’ প্রসঙ্গে আরিফিন শুভ

Arifin Shuvoo: ‘একটা কথা চিরকাল মনে থাকবে…’ ‘মুজিব’ প্রসঙ্গে আরিফিন শুভ

সৌমিতা মুখোপাধ্যায়

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের(Sheikh Mujibur Rahman) জীবনকাহিনী এবার বড়পর্দায়। বাংলাদেশে আগেই মুক্তি পেয়েছিল, শুক্রবার সারা ভারতে হিন্দি ও বাংলায় মুক্তি পেয়েছে ন্যাশনাল ফিল্ম ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন ইন্ডিয়া এবং বাংলাদেশ ফিল্ম ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন যৌথভাবে প্রযোজিত শ্যাম বেনেগাল(Shyam Benegal) পরিচালিত ‘মুজিব’(Mujib)। পর্দায় মুজিবর রহমানের চরিত্রে অভিনয় করেছেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেতা আরিফিন শুভ(Arifin Shuvoo)। বৃহস্পতিবার কলকাতায় ছিল ছবির স্পেশাল স্ক্রিনিং, হাজির ছিলেন শুভ। প্রায় পাঁচ দফার অডিশনের পর এই চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন শুভ। কলকাতার স্পেশাল স্ক্রিনিংয়ে ছবি শেষে দাঁড়িয়ে থেকে প্রত্যেক দর্শকের প্রতিক্রিয়া শুনলেন অভিনেতা। স্ক্রিনিংয়ের পর পর্দার মুজিব হয়ে ওঠার খানিক গল্প শেয়ার করলেন জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটালের সঙ্গেও।

প্রশ্ন: ছবি যত এগিয়েছে ততই আরিফিন শুভ পরিণত হয়েছেন…

আরিফিন শুভ: আমি জানি না কী বলা উচিত, তবে আমি আবেগাপ্লুত। আমার মনে হয়, বাংলাদেশের পর এই বাংলার মানুষেরা আরও ভিন্নভাবে কানেক্ট করতে পারবে। সেদেশে জন্ম নেওয়া অনেক মানুষ এদেশে চলে এসেছেন। তাঁরাও নিজেদের গল্প দেখতে পাবেন। আমি চেষ্টা করেছি, আপনারাই বলবেন কেমন লাগছে।

প্রশ্ন: মুজিব করার আগে আর পরে শুভর মধ্যে কতটা পরিবর্তন হয়েছে?

আরিফিন শুভ: যেকোনও চরিত্র করলেই তার একটা ছাপ তো থেকেই যায়। এটা আমার মধ্যে অনেকটা রয়ে গেছে। ২০২২ সালে কাজ শেষ করেছি। তবে এগিয়ে তো যেতেই হবে, আরও কাজ বাকি আছে।

প্রশ্ন: শেখ মুজিবর হওয়া ওঠা কতটা কঠিন ছিল?

আরিফিন শুভ: অন্য সব চরিত্র কাল্পনিক হয়, সেগুলোর আলাদা চ্যালেঞ্জ থাকে। এটা প্রথমত রক্ত মাংসের এক মানুষের চরিত্র, দুই নম্বর হল জাতির জনকের চরিত্র, যিনি দুই বাংলার চোখে লেগে আছেন। ওঁর চেহারা, ওঁর অবয়ব এখনও সবার চোখে স্পষ্ট। সেখান থেকে আপনারাই বলবেন কতটা পেরেছি আর কতটা পারিনি।

প্রশ্ন: প্রস্তুতি কেমন ছিল?

আরিফিন শুভ: আমি শুরু করেছিলাম ৮৪ কেজিতে, তারপর ধীরে ধীরে যত বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমানের বয়স বাড়ে, আমার ওজনও বাড়ে ৯৯ কেজি অবধি। তার উপর প্রস্থেটিক থাকত, দেড় থেকে তিন কেজির পেট লাগানো হত। বয়স অনুযায়ী কথা বা কন্ঠের পরিবর্তনের জন্য দাঁতে ডেঞ্চার ছিল।

প্রশ্ন: শ্যুটের সময় সবচেয়ে শক্ত অংশ কী মনে হয়েছে?

আরিফিন শুভ: পুরোটাই। আসলে শ্যাম বেনেগাল কাটেন না। সিন পাঁচ পাতা হোক বা দশ পাতা উনি এক টেকেই শ্যুট করেন। যতগুলো ক্যামেরার অ্যাঙ্গেল থেকে শ্যুট হয়, প্রতিবারই সবটা একটেকে করতে হয়। আপনারা যে পুরো ছবি দেখলেন, তার প্রতিটা সিন একটেকে করা।

প্রশ্ন: কিংবদন্তি পরিচালক শ্যাম বেনেগালের কাছ থেকে অভিনেতা আরিফিন শুভ কী শিখলেন?

আরিফিন শুভ: অনেক কিছু শিখেছি। তবে একটা জিনিস আমি চিরকাল মনে রাখব, উনি বারবার বলতেন, ‘অভিব্যক্তি জোর করে মুখে আনার প্রয়োজন নেই। হৃদয়ে অনুভব করো, সেখান থেকে যতটা মুখে আসে, তাতেই হবে।’ আমাদের সাধারণত বলা হয় যে মুখে এক্সপ্রেস করো কিন্তু শ্যাম বেনেগাল বললেন হৃদয়ে অনুভব করো।

প্রশ্ন: বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমানের মেয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছবি দেখেছেন?

আরিফিন শুভ: হ্যাঁ

প্রশ্ন: তিনি ছবি দেখে কী বললেন?

আরিফিন শুভ: আসলে আপনি যদি শেষ সিনের কথা মনে করে দেখেন তাহলে ওটা তো ওঁর পরিবারের ব্যাপার। এরকম একটা মুহূর্তে আসলে কী বলা যায়? অভিব্যক্তি কী প্রকাশ করা যায়? ওঁর চোখ ছলছল করছিল। উনি শুধু বললেন, ‘কী করে করেছ?’

প্রশ্ন: পরিচালক নন্দিতা রায় ছবি দেখে বেরিয়ে আপনার সঙ্গে কথা বলছিলেন, উনি কী বললেন?

আরিফিন শুভ: বললেন ভালো হয়েছে। অনেকেই প্রিমিয়ার শো দেখে বললেন ভালো হয়েছে। অনেকেই আবেগঘন হয়ে পড়ছেন। এটা শুধু বাংলাদেশের গল্প নয়, এপার বাংলার মানুষেরাও একইভাবে কানেক্ট করতে পারবেন। সারা ভারতে রিলিজ করেছে। আমি জানি সবচেয়ে বেশি প্রতিক্রিয়া পাওয়া যাবে পশ্চিমবঙ্গ থেকে।

(Feed Source: zeenews.com)