মরাঠি যুবক শিখেছিলেন তামিল! কীভাবে শিবাজি থেকে হয়ে উঠলেন ‘থালাইভা’?

মরাঠি যুবক শিখেছিলেন তামিল! কীভাবে শিবাজি থেকে হয়ে উঠলেন ‘থালাইভা’?

কলকাতা: পেটের তাগিদে একসময় কুলির কাজ করতে হয়েছিল। তারপর আরও একটু রোজগারের জন্য বাসের কন্ডাকটরের কাজ। পরিস্থিতি কঠিন ছিল, কিন্তু লড়াইও ছিল জোরদার। ছিল চোয়ালচাপা জেদ, স্বপ্ন আর তার সঙ্গে অসম্ভব পরিশ্রম। এই মশলাগুলি মিশেলেই সেদিনের বাস কন্ডাকটর পরে হয়ে ওঠে জনতার নয়নের মণি। মরাঠি পরিবারের যুবক শিবাজি রাও গায়কোয়াড় হয়ে ওঠেন দক্ষিণী সিনেমার লিভিং লেজেন্ড আর গোটা ভারতের সিনেপ্রেমী মানুষের দি থালাইভা- রজনীকান্ত (Rajinikanth)। আজ, ১২ ডিসেম্বর রজনীকান্তের জন্মদিন (Rajinikanth Birthday)।

১৯৫০ সালের এই দিনেই বেঙ্গালুরুর একটি মরাঠি হিন্দু পরিবারে জন্ম রজনীকান্তের। পিতৃদত্ত নাম শিবাজি রাও গায়কোয়াড়। এই বছর তিনি পালন করলেন তাঁর ৭৩তম জন্মদিন। আর গোটা দিন জুড়ে কার্যত উৎসব পালন করল তাঁর তামাম ভক্তকুল। মাদুরাইতে তাঁর একটি মন্দিরও তৈরি করেছেন ভক্তরা। এদিন সেখানে তাঁর মূর্তিকে দুধ দিয়ে স্নান করার ভক্তরা।

সত্তর পেরিয়েও এখনও ‘যুবা’ রজনীকান্ত। তাঁর নাম থাকলেই হু হু করে বিক্রি হয়ে যায় তাঁর সিনেমার (Cinema) টিকিট। প্রথম শো দেখার জন্য কার্যত হুড়োহুড়ি চলে। তাঁর আইকনিক স্টাইল, দুরন্ত ডায়লগ থ্রোয়িং- সব কিছুই কার্যত দাপিয়ে বেড়াচ্ছে তামাম ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি।

যদিও শুরুটা কিন্তু একেবারে। অন্যরকম ছিল। লড়াই ছিল, আর ছিল অক্লান্ত পরিশ্রম। রজনীকান্তের পিতৃদত্ত নাম শিবাজি, তাঁর বাবা ছিলেন পুলিশ কনস্টেবল। স্কুলের পাঠ শেষ করেই কাজের দুনিয়ায় পা রাখতে হয় তাঁকে। ষাটের দশকের শেষ দিকে পেশার জন্য নানা ধরনের কাজ শুরু করেন তিনি। কুলির কাজ, বাস কন্ডাকটরের কাজ করেছেন। বাস কন্ডাকটরি করতে করতেই  বিভিন্ন পৌরাণিক কন্নড় নাটকে অভিনয় করতে শুরু করেন। অভিনয় ছিল তাঁর বরাবরের প্যাশন। সেই স্বপ্নকেই বেছে নিয়েছিলেন তিনি। কাজ করতে করতেই ভর্তি হয়েছিলেন সবেমাত্র তৈরি হওয়া মাদ্রাজ ফিল্ম ইন্সটিটিউটে। সেখানেই তিনি নজরে পড়েন বিখ্যাত তামিল চিত্র পরিচালক কে বালাচন্দ্রের (K Balachander)।

শিবাজি থেকে হয়ে উঠলেন রজনীকান্ত:
মাদ্রাজ ফিল্ম ইন্সটিটিউটেই তিনি নজরে পড়েন বিখ্যাত তামিল চিত্র পরিচালক কে বালাচন্দ্রের (K Balachander)। তিনিই শিবাজী রাও গায়কোয়াড়ের নাম রজনীকান্ত রাখার পরামর্শ দেন। আর শিখতে বলেন তামিল। ১৯৭৫ সালে রজনীকান্ত আত্মপ্রকাশ করেন কে বালাচন্দ্র পরিচালিত ‘Apoorva Raagangal’-এ। তারপর থেকে শুধুই রকেট উত্থান। এরপর টানা কয়েকবছর ধরে তামিল ফিল্ম দুনিয়ায় ক্রমশ নিজের জায়গা তৈরি করেন তিনি। এই সময় একাধিক ব্লকবাস্টার সিনেমা।

‘Bhuvana Oru Kelvi Kuri’, ‘Mullam Mararum’, ‘Billa’, ‘Moondry Mugan’ থেকে ‘Andha Kanoon’, ‘Geraftar’, ‘Padikkadavan’, ‘Hum’, ‘Phool Bane Angaray’  – প্রায় পাঁচ দশকে অজস্র এমন সিনেমা যার তালিকা শেষ হবে না। সম্প্রতি রজনীকান্তের ‘Jailor’ মুক্তি পেয়েছিল। সেটাও ব্লকবাস্টার হিট-তাঁর সিনেমা দেখার জন্য একদিনের ছুটি ঘোষণা হয়েছিল তামিলনাড়ুতে। চেন্নাই , বেঙ্গালুরুর বেশ কিছু বেসরকারি সংস্থাও সিনেমা দেখার জন্য কর্মীদের ছুটি দিয়েছিল। অভিনয়ের পাশাপাশি, প্রযোজনাও করেন তিনি। একাধিক বিনিয়োগও রয়েছে তাঁর।

একাধিক পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন তিনি। ২০০০ সালে পদ্ম ভূষণ ও ২০১৬ সালে পদ্ম বিভূষণে সম্মানিত হয়েছেন তিনি। ২০১৯ সালে দাদাসাহেব ফালকে সম্মানে ভূষিত হয়েছেন।

(Feed Source: abplive.com)