যৌনদাসী কেনাবেচায় মামলায় নাম! আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্টকে ঘিরে শোরগোল

যৌনদাসী কেনাবেচায় মামলায় নাম! আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্টকে ঘিরে শোরগোল
নয়াদিল্লি: যৌনদাসী হিসেবে নাবালিকা কেনাবেচায় একাধিক হাই প্রোফাইল ব্যক্তির নাম জড়িয়েছে আগেই। এবার সেই মামলায় নাম উঠে এল আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টনেরও। জেফ্রি এপস্টিন মামলার তদন্তের রিপোর্টে কমপক্ষে ৫০ বার তাঁর নামের উল্লেখ পাওয়া গিয়েছে বলে খবর আমেরিকার সংবাদমাধ্যমে। সে দেশের আদালতে তদন্তের রিপোর্ট জমা পড়েছে, তাতেই ক্লিন্টনের নাম রয়েছে বলে খবর। বিষয়টি সামনে আসতেই ক্লিন্টনের স্ত্রী তথা প্রাক্তন মার্কিন বিদেশ সচিব এবং প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিলারি ক্লিন্টন সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর পোস্টে মন্তব্য করার রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন। (Bill Clinton)

আমেরিকার ধনকুবের জেফ্রির বিরুদ্ধে মারাত্মক সব অভিযোগ ছিল। রোজগারের ব্যবস্থা করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি নাবালিকা মেয়েদের সঙ্গমে বাধ্য করতেন,ধর্ষণ- নিগ্রহ করতেন এবং বিশ্বের তাবড় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের যৌনদাসী সরবরাহ করতেন বলে অভিযোগ। নিজেকে ‘সংগ্রহকারী’ বলে উল্লেখ করেছিলেন জেফ্রি নিজেও।  ক্ষমতাশালী নেতা, শিল্পপতিদের তিনি মহিলা সরবরাহ করতেন, নাবালিকাও। তবে এমন ভূরি ভূরি অভিযোগ থাকলেও, মাত্র দু’টি মামলাতেই দোষী সাব্যস্ত হন জেফ্রি। জেলবন্দি থাকাকালীন ২০১৯ সালের ১০ অগাস্ট জেলের মধ্যে থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। তার আগেও জেলের মধ্যে আক্রান্ত হন তিনি। তাই রহস্যমৃ্ত্যু ঘিরে শোরগোল পড়ে যায়। (Sex Trafficking Probe Report)

প্রাথমিক তদন্তে জেফ্রি আত্মহত্যা করেছেন বলেই দাবি করা হয় সেই সময়। যদিও একাধিক প্রভাবশালীর নাম উঠে আসায়, তাঁকে খুন করা হয়ে থাকতে পারে বলেও দাবি উঠে আসে। সেই মামলাতেই এবার আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ক্লিন্টনের নাম জড়াল। জানা গিয়েছে, মুখবন্ধ খামে আদালতে একটি রিপোর্ট জমা পড়েছে। তাতে প্রায় ১৫০ জনের নাম রয়েছে। পরিচয় গোপন রাখতে এর আগে ‘Jane Does’, ‘Doe 36’, ‘John Does’ বলে যে যাঁদের উল্লেখ করা হয়েছিল, এবার তাঁদের পরিচয় প্রকাশ করার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। ওই তিন নামের মধ্যে নামের মধ্যে ‘Doe 36’ বলতে আসলে ক্লিন্টন বলেই খবর আমেরিকার সংবাদমাধ্যমে।

আমেরিকার ABC News জানিয়েছে, অভিযোগকারিণী ভার্জিনিয়া জিওফ্রের মামলার নথিতে প্রায় ৫০ বার ক্লিন্টনের উল্লেখ রয়েছে ‘Doe 36’ হিসেবে। এর আগে, ভার্জিনিয়া জানিয়েছিলেন, ব্রিটেনের যুবরাজ অ্যান্ড্রু-সহ আরও অনেক বিখ্যাত ব্যক্তির সঙ্গে তাঁকে সঙ্গমে বাধ্য করেছিলেন জেফ্রি। সংবাদমাধ্যমে এযাবৎ ভার্জিনিয়া ক্লিন্টনের দিকে আঙুল তোলেননি। তবে ক্যারিবিয়ানে জেফ্রির নিজস্ব দ্বীপে ক্লিন্টনের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন।

এর আগে, ২০১৬ সালে ভার্জিনিয়ার আইনজীবী ক্লিন্টনের সঙ্গে জেফ্রির সংযোগ তুলে ধরতে সচেষ্ট হয়েছিলেন। কিন্তু সেই সময় বিচারক রবার্ট সুইট এগোতে দেননি তাঁকে। জেফ্রির সহযোগী তথা বান্ধবী জিসলেন ম্যাক্সওয়েল ভার্জিনিয়াকে প্রচারলোভী বলে উল্লেখ করেছিলেন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম যদিও জেফ্রির সঙ্গে ক্লিন্টনের সংযোগের কথা তুলে ধরে সকলের সময়। আফ্রিকায় একটি সমাজসেবামূলক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাওয়ার সময় ক্লিন্টন জেফ্রির বিমানই ব্যবহার করেছিলেন বলে জানানো হয়। যৌন অপরাধ নিয়ে জেফ্রির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হওয়ার আগে, ২০০৫ সালেই তাঁর সঙ্গে ক্লিন্টন যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। ২০১৯ সালে গ্রেফতার হন জেফ্রি। নতুন করে ক্লিন্টনের নাম নিয়ে চর্চা শুরু হতেই সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডল X (সাবেক ট্যুইটার) হ্য়ান্ডলে তাঁর পোস্টে মন্তব্য করার রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন। পর পর এই দুই ঘটনা নেহাত কাকতালীয় নয় বলে মত আমেরিকার সংবাদমাধ্যমের।

এর আগেও বিতর্কে নাম জড়িয়েছে ক্লিন্টনের। প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন হোয়াইট হাউসের ইন্টার্ন মনিকা লুইন্সকির সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে ওঠে তাঁর। ১৯৯৫ সালে ক্লিন্টনের বয়স যখন ৪৯ এবং মনিকার ২২, সেই সময় দু’জনের মধ্যে শারীরিক সম্পর্কও হয় বলে সামনে আসে। বিষয়টি সামনে আসতে, প্রকাশ্যে সম্পর্কের কথা স্বীকারও করে নেন ক্লিন্টন, কিন্তু শারীরিক সম্পর্ক হয়নি বলে দাবি করেন। কিন্তু পরে গ্র্যান্ড জ্যুরির সামনে শারীরিক সম্পর্কের কথা মেনে নেন বলে জানা যায়। ওই ঘটনার জেরেই ১৯৯৮ সালের ১৯ ডিসেম্বর প্রেসিডেন্ট পদ থেকে অপসারিত করা হয় ক্লিন্টনকে। অ্যান্ড্রু জনসনের পর আমেরিকার ইতিহাসে ক্লিন্টনই অপসারণের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া দ্বিতীয় প্রেসিডেন্ট।

(Feed Source: abplive.com)