Metaverse-এ গণধর্ষণ কিশোরীকে, কাঠগড়ায় ফেসবুক কর্তৃপক্ষ, শুরু হল তদন্ত

Metaverse-এ গণধর্ষণ কিশোরীকে, কাঠগড়ায় ফেসবুক কর্তৃপক্ষ, শুরু হল তদন্ত
নয়াদিল্লি: প্রযুক্তির দৌলতে বাস্তবের দুনিয়া আর কল্পবিশ্বের (Virtual Reality) মধ্যে ফারাক অতি সূক্ষ্ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই আবহেই এবার মারাত্মক অভিযোগ সামনে এল। অনলাইন গেম খেলার সময়, ভার্চুয়াল মাধ্যমে  এক কিশোরীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল ব্রিটেনে। অভিযোগ, ১৬ বছরের ওই কিশোরীর যে ডিজিটাল রূপ (Virtual Avatar/Digital Character) খেলায় অংশ নিয়েছিল, অন্য প্রান্তে থাকা অচেনা কয়েক জন ব্যক্তির ভার্চুয়াল রূপ তাকে গণধর্ষণ করে। এই ঘটনায় মানসিক ভাবে ওই কিশোরী আঘাত পেয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। (Viral News)

প্রযুক্তি যত সহজলভ্য হয়েছে, অজান্তেই কল্পবিশ্বের জগতে প্রবেশ করে গিয়েছি আমরা। কল্পনাযাপনের নিত্যনতুন গল্পকথাও সামনে আসে। কিন্তু কল্পবিশ্বে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের এই প্রথম। ব্রিটেনের এই ঘটনায় তাই সাড়া পড়ে গিয়েছে। জানা গিয়েছে, অনলাইন গেম খেলার সময় ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি হেডসেটও পরেছিলেন ওই কিশোরী। সেই সময় তাঁর যে ডিজিটাল রূপ খেলায় অংশ নিয়েছিল, অন্য দিক থেকে কয়েক জন অজ্ঞাত পরিচয় যুবকের ডিজিটাল চরিত্র মিলে তাকে ধর্ষণ করে। (Virtual Gangrape)

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কিশোরী শারীরিক ভাবে আহত না হলেও, এই ঘটনায় মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। মানসিক ভাবে এতটাই আঘাত পেয়েছে যে ট্রমায় চলে গিয়েছে। বাস্তবে ধর্ষণের ক্ষেত্রে নির্যাতিতা যেমন পাথর হয়ে যান, আতঙ্কিত হয়ে পড়েন, ওই কিশোরীরও একই অবস্থা। ভার্চুয়াল জগতে গণধর্ষণের এই অভিযোগই প্রথম মামলা, যা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। প্রথম ভার্চুয়াল যৌন অপরাধ হিসেবে তদন্ত শুরু হয়েছে।

পুলিশের এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, ধর্ষণের শিকার কোনও তরুণীর যে অবস্থা হয়, কল্পবিশ্বে যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়া ওই কিশোরীর অবস্থাও প্রায় এক। মানসিক ভাবে একেবারে ভেঙে পড়েছে।  এতবড় ধাক্কায় আতঙ্কিত হয়ে রয়েছে, যা শারীরিক আঘাতের চেয়েও দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে। কল্পবিশ্বে অপরাধমূলক ঘটনা ঘটলে কী করণীয়, তা নিয়ে পৃথক আইন নেই ব্রিটেনে। এই ঘটনায় তাই নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ ও প্রশাসন। ফেসবুকের ‘হরাইজন ওয়র্ল্ডস’ গেম খেলতে গিয়ে এই ঘটনা ঘটে বলে জানা গিয়েছে।

এই ঘটনায় মুখ খুলেছেন ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্র সচিব জেমস ক্লেভারলি। ওই কিশোরীর পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি। তাঁর মতে, প্রচণ্ড মানসিক আঘাত পেয়েছে ওই কিশোরী। কল্পবিশ্ব বলে অনেকেই বিষয়টি হয়ত ঝেড়ে ফেলতে আগ্রহী, বাস্তবে ধর্ষণ হয়নিও বলতে পারেন, কিন্তু কল্পবিশ্ব আসলে অত্যন্ত গুরুতর বিষয়। বাস্তব থেকে আলাদা করা যায় না কল্পনাকে। একবার ফাঁদে পা পড়লে নিমগ্ন হয়ে পড়েন যে কেউ। তাই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, ভার্চুয়াল মাধ্যমে কেউ বা কারা একটি কিশোরীকে এভাবে আঘাত করেছে, বাস্তবে যা বিভীষিকা হতে পারত, শুধুমাত্র এই বিষয়টি মাথায় রেখেও তদন্ত হওয়া জরুরি বলে জানান জেমস।

ফেসবুকের অভিভাবক সংস্থা Meta কল্পবিশ্বকে সহজলভ্য করে তুলেছে। তাদের ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি গেম ‘হরাইজন ওয়র্ল্ডস’ খেলায় অংশ নিয়ে যৌন অপরাধের শিকার হতে হয়েছে বলে আগেও একাধিক অভিযোগ সামনে এসেছে। তবে সেই নিয়ে মামলা দায়ের হয়নি। ব্রিটেনের এই ঘটনায় Meta-র তরফে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়, ‘যে আচরণের কথা সামনে আসছে, আমাদের প্ল্যাটফর্ম তাতে অনুমোদন দেয় না। পার্সোনাল বাউন্ডারি নামের স্বয়ংক্রিয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা রয়েছে গ্রাহকদের জন্য, যাতে অচেনা লোকজন কাছে ঘেঁষতে না পারে, কয়েক ফুট দূরে থাকে’।

কিন্তু ব্রিটেনের ন্যাশনাল পুলিশ চিফ ইয়ান ক্রিচলির মতে, মেটাভার্স এখন শিকারিদের কাছে খোলা ময়দান হয়ে উঠেছে। অনলাইন অপরাধ উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে। এর মোকাবিলা করতে হলে, সেই সংক্রান্ত আইন চালু করা প্রয়োজন। প্রযুক্তি সংস্থাগুলিকেও দায়িত্বশীল হতে হবে বলে মত তাঁর। ফেসবুকের অভিভাবক সংস্থা Meta-র ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই।

এর আগে, ২০২২ সালেও এমন একটি ঘটনা সামনে আসে। সেই সময় ৪৩ বছর বয়সি এক মহিলা জানান, ভার্চুয়াল মাধ্যমে তাঁকে গালিগালাজ করা হয়েছে। যৌন নির্য়াতনেরও শিকার হয়েছেন। Meta-র ‘হরাইজন ভেনুজ’-এর উল্লেখ করেন তিনিও। জানান, গেম-এ অংশ নেওযার ৬০ সেকেন্ডের মধ্যে চার পুরুষের অবতার ভার্চুয়াল মাধ্যমে গণধর্ষণ করে তাকে এমনকি ছবিও তোলে।

(Feed Source: abplive.com)