ভগ্নপ্রায়, জরাজীর্ণ মহিষাদলের ৩০০ বছরের পুরনো রাম মন্দির, কবে হবে সংস্কার?

ভগ্নপ্রায়, জরাজীর্ণ মহিষাদলের ৩০০ বছরের পুরনো রাম মন্দির, কবে হবে সংস্কার?
বিটন চক্রবর্তী, পূর্ব মেদিনীপুর: ২২ জানুয়ারি অযোধ্য়ায় রাম মন্দিরের ( Ayodhya Ram Mandir )  উদ্বোধনে প্রস্তুতি ঘিরে যখন তৎপরতা তুঙ্গে, তখন ১ হাজার ৫১ কিলোমিটারেরও বেশি দূরে, পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলের ( Mahishadal Ramjiu Mandir ) রামজিউর মন্দিরের অবস্থা জরাজীর্ণ। ৩০০ বছর আগে মহিষাদল রাজ পরিবারের রানি জানকী দেবী রামবাগ গ্রামে এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।  রামমন্দির উদ্বোধনের প্রাক্কালে সেই মন্দির সংস্কারের দাবি যেমন উঠল, তেমনই তা নিয়ে শুরু হল রাজনৈতিক দড়িটানাটানি। 

এখানে রামচন্দ্র ও সীতার বিগ্রহ পাশাপাশি রয়েছে। সেই সঙ্গে রয়েছে জগন্নাথ-বলরাম-শুভদ্রার বিগ্রহ। সংস্কারের অভাবে বর্তমানে ১০০ ফুটের মন্দিরটির জরাজীর্ণ অবস্থা। মহিষাদল রাজ পরিবারের ৩০০ বছরের পুরনো এই যে রামজিউর মন্দির তা ক্রমশ জীর্ণ হয়েছে বছর-বছরে।  মন্দিরকে ঘিরে শ্রদ্ধা-ভক্তি থাকলেও এতবড় মন্দির সংস্কারের সাধ্য তো সাধারণ মানুষের নেই।  মন্দিরের সামনের অংশ ইতিমধ্য়েই ভাঙতে শুরু করেছে। মন্দির চত্বরে বট-অশ্বত্থ ভিড় । শিকড় বিস্তার করেছে ইটের গভীরে। স্থানীয় বাসিন্দারা চাইছেন অবিলম্বে যেন এই মন্দির সংস্কারের ব্য়াপারে সরকারি উদ্য়োগ নেওয়া হয়। তাহলেই এই প্রাচীন ঐতিহ্য়কে রক্ষা করা যাবে।

মহিষাদলের বাসিন্দা দিব্যেন্দু অধিকারী জানালেন, এই রামজিউর মন্দিরটা শুধু রামবাগের নয়। পূর্ব মেদিনীপুরের একটা ঐতিহ্য। সনাতন ধর্মের প্রতীক। জানকী দেবীর হাতে নির্মাণ হয়েছিল মন্দিরটা। আমরা চাই মন্দিরটা রক্ষা করতে। মন্দিরটা যে পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে আগামী ২-৩ বছরও যাবে না, ভেঙে পড়বে।

মহিষাদলের বাসিন্দা সীতারাম অধিকারী জানালেন, রামবাগ নামকরণ হয়েছিল রামচন্দ্রকে সামনে রেখে। আমরা চাই মন্দিরটার সংস্কার হোক।  রাজ্য় সরকার বা কেন্দ্রীয় সরকার সকলের কাছে আবেদন করব যাতে এরকম স্মৃতি রক্ষা করা যায়।

বিজেপি রাজ্য কমিটির সদস্য প্রদীপ দাসের অভিযোগের তির রাজ্য সরকারের দিকে।’ আমরা দেখেছি রাজ্য় সরকার রাম মন্দিরের পাল্টা কিছু করতে হোক যাই হোক দিঘায় জগন্নাথ মন্দির তৈরি করা হচ্ছে। কিন্তু, আমাদের মহিষাদলের যে রাম মন্দির এটা একটা প্রাচীন মন্দির। সাংসকৃতির আধার। রাম মন্দিরটা ঠিক ঠাক হচ্ছে না। এখানকার বিধায়ক মেলাখেলায় উৎসাহ দেখাচ্ছেন।’

মহিষাদলের তৃণমূল বিধায়ক তিলক চক্রবর্তী আশ্বাস দিয়েও পাল্টা কটাক্ষই করেছেন বিজেপিতে। ‘আমরা উদ্য়োগ গ্রহণ করেছি। আমাদের যতটুকু সামর্থ্য় করেছি। এটার জন্য় যে আর্কিটেক্টের প্রয়োজন, টেকনিক্য়াল সাপোর্টের প্রয়োজন। আমাদের ২০ হাজার কোটি টাকা খরচের ক্য়াপাসিটি আছে নাকি? এই মন্দিরের জন্য় যে টেকনিক্য়াল সাপোর্টের দরকার আমাদের সংগ্রহ করতে হবে। আমরা রোজই গোপালজির পুজো করি। কিন্তু, যারা রোজ রোজ রাম রাম করছে তারা অন্তর থেকে করছে না। ভোটের জন্য় করছে।’

অযোধ্যার রাম মন্দিরে রাম লালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা ঘিরে যখন সারা ভারতে সমারোহের আবহ, তখন কবে রামজিউ মন্দিরের সংস্কার হবে, কবে প্রাচীন ঐতিহ্যকে রক্ষণাবেক্ষণের উদ্য়োগ নেওয়া হবে, তা অন্ধকারেই। তবুও আশায় রয়েছে মহিষাদল।

(Feed Source: abplive.com)