১২ বছরের খরা কাটাতে মরিয়া লাল-হলুদ,টানা ১৫ম্য়াচ অপরাজিত থাকা ওড়িশা আত্মবিশ্বাসী

১২ বছরের খরা কাটাতে মরিয়া লাল-হলুদ,টানা ১৫ম্য়াচ অপরাজিত থাকা ওড়িশা আত্মবিশ্বাসী

রবিবার ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে লড়াইটা নিঃসন্দেহে দুই দলের শিরোপা জয়ের। লড়াই দুই পড়শি রাজ্যের ক্লাবের সম্মান রক্ষারও। তবে সব কিছু ছাপিয়ে যেতে চলেছে ইস্টবেঙ্গল এফসি-র কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত এবং ওড়িশা এফসি-র কোচ সের্জিয়ো লোবেরার মস্তিষ্কের লড়াইও।

কয়েক মাস আগে মরশুমের শুরুতে ডুরান্ড কাপের ফাইনালে উঠেও চিরপ্রতিদ্বন্দী মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের কাছে হেরে যেতে হয়েছিল ইস্টবেঙ্গলকে। সেই আফসোসটা ষোল আনা রয়ে গিয়েছে লাল-হলুদের। ইস্টবেঙ্গলের কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাতও শিরোপা জেতার এই সুযোগটা আর হাতছাড়া করতে চান না। রবিবার ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ সুপার কাপের ফাইনালে ওড়িশা এফসি-র বিরুদ্ধে জিতে ট্রফি নিয়ে কলকাতায় ফিরতে মুখিয়ে রয়েছে ইস্টবেঙ্গল।

ফাইনালের আগের দিন সাংবাদিকদের কুয়াদ্রাত বলেছেন, ‘মরশুমের দ্বিতীয় ফাইনালে ওঠাটা আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ডুরান্ড কাপে প্রথম ফাইনালে জিততে পারিনি। তাই এই ফাইনালে জেতার জন্য নিজেদের সেরাটা উজাড় করে দেওয়ার চেষ্টা করব। আমরা খুব ভালো জায়গায় আছি। অনেক দিন ধরেই ভালো ফলের জন্য লড়ছি আমরা।’

অন্য দিকে, ওডিশা এফসি-র চাপটা আবার দ্বিগুণ। একেই তারা গত বারের চ্যাম্পিয়ন। সেই খেতাব ধরে রাখার প্রত্যাশার চাপ তো আছেই, তার উপর খেতাব বজায় রাখার লড়াইটা তাদের লড়তে হবে ঘরের মাঠে, নিজেদের সমর্থকদের চোখের সামনেই। যদিও এটা যেমন চাপ, তেমন একটা সুবিধেও। কঠিন লড়াইয়ে জেতার জন্য অন্তত হাজার দশেক সমর্থককে পাশে পাবে ওড়িশা। তবে এ সব নিয়ে বেশি না ভেবে তিনি দলের ছেলেদের সুপার কাপের ফাইনাল ম্যাচটা উপভোগের পরামর্শ দিয়েছেন লোবেরা।

তিনি বলে দিয়েছেন, ‘আমাদের সামনে একটা কঠিন ম্যাচ রয়েছে। সুপার কাপ বাইরে যেতে না দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। এই সুযোগটা পেয়ে আমরা খুবই খুশি এবং উত্তেজিত। এই ম্যাচটা উপভোগ করাই আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। দলের সবার কাছেই এটা বড় পরীক্ষা। খেলোয়াড়, কোচ, স্টাফ, সমর্থক সবার কাছেই।’

জাতীয় পর্যায়ে ১২ বছর কোনও ট্রফি জেতেনি ইস্টবেঙ্গল। ২০১২ সালে শেষ বার ফেডারেশন কাপ জিতেছিল তারা। শিলিগুড়িতে অতিরিক্ত সময়ে হারিয়েছিল ডেম্পোকে। ডুরান্ড জিতলেই জাতীয় পর্যায়ের ট্রফি জয় হয়ে যেত। তা হয়নি। তাই সুপার কাপের সুযোগ হাতছাড়া করতে চান না কুয়াদ্রাত। তবে গত ন’টি ম্যাচ তারা অপরাজিত। তার মধ্যে, ইস্টবেঙ্গল পাঁচটিতেই জিতেছে। এটাই আত্মবিশ্বাস জোগাচ্ছে পুরো দলকে।

ইস্টবেঙ্গল যেমন টানা ন’ ম্যাচ অপরাজিত থেকে সুপার কাপের ফাইনালে খেলতে নামছে, প্রতিপক্ষ ওড়িশা এফসি-র ধারাবাহিকতা আরও বেশি। তাই তাদের যথেষ্ট সমীহ করছেন কুয়াদ্রাত। বলেছেন, ‘দুই ফাইনালিস্টই খুব ভালো ছন্দে রয়েছে। আমরা যেমন ধারাবাহিক ভাবে ভাল খেলে আসছি, ওড়িশাও অনেক দিন ধরে অপরাজিত রয়েছে। তবে একটা দলকে তো হারতেই হবে। দুর্ভাগ্যবশত, এই ম্যাচে যে কোনও এক পক্ষের ছন্দপতন হবেই। আমাদের কাছে খুব কঠিন ম্যাচ এটা। কিন্তু আমরা সব সময়ই চাই জিততে। প্রতি ম্যাচেই গোল পাচ্ছি আমরা। এই ম্যাচেও পেতে হবে।’

গত বছর ২৭ অক্টোবর ইন্ডিয়ান সুপার লিগে কেরালা ব্লাস্টার্সের কাছে ১-২ হারার পর থেকে আর কোনও ম্যাচে হারেনি ওড়িশা। এই ১৫টি ম্যাচের মধ্যে তারা জয় পায় ১৩টিতে। দু’টি ড্র করে। দু’টিই কলকাতার দুই প্রধানের বিরুদ্ধে। মোহনবাগানের বিরুদ্ধে ২-২ এবং ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে গোলশূন্য। তাই ইস্টবেঙ্গলকে আলাদা নজরে দেখছেন লোবেরা।

এর আগেও সুপার কাপে দলকে চ্যাম্পিয়ন করার অভিজ্ঞতা রয়েছে লোবেরার। ২০১৯-এ চ্যাম্পিয়ন এফসি গোয়ার কোচ ছিলেন তিনিই। স্প্যানিশ কোচ বলছিলেন, ‘এএফসি কাপে আমরা মোহনবাগান এসজি, বসুন্ধরা কিংসের মতো ভালো ভালো দলকে হারিয়েছি। এই টুর্নামেন্টে আমরা এফসি গোয়া, মুম্বই সিটি এফসি-র মতো ভালো মানের দলকে হারিয়েছি। ফাইনাল নিয়েও আমি আত্মবিশ্বাসী। কারণ, আমি আমার দলের ছেলেদের ওপর দু’শো শতাংশ ভরসা করি। ওরা দেখিয়ে দিয়েছে যে, বড় বড় ম্যাচ খেলার জন্য ওরা প্রস্তুত। কালকের ম্যাচও সে রকমই।’

(Feed Source: hindustantimes.com)