শরীরে ৫৬ বছর পুরনো ভ্রূণ বৃদ্ধার, এড়ানো গেল না মর্মান্তিক পরিণতি

শরীরে ৫৬ বছর পুরনো ভ্রূণ বৃদ্ধার, এড়ানো গেল না মর্মান্তিক পরিণতি

কলকাতা: ৫৬ বছর পুরনো ভ্রূণ অপারেশন (Brazilian Woman Dies) করে বাদ দিতে যাওয়ার সময় মারা গেলেন ‘মা’। ব্রাজিলের ঘটনা। মৃতার নাম দানিয়েলা ভেরা, দাবি এক ব্রিটিশ ট্যাবলয়েডের। ৮১ বছর বয়সী দানিয়েলা যখন যুবতী, সম্ভবত তখনই ‘এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি’ হয়েছিল। কিন্তু এক্ষেত্রে গর্ভস্থ ভ্রূণের মৃত্যুর পরও তা প্রকৃতির নিয়মে মিশে যায়নি। তার পর, ৫৬ বছর ধরে দানিয়েলার শরীরের একাংশে রয়ে গিয়েছিল সেই ‘ক্যালসিফায়েড ফিটাস।’ বয়সকালে জটিলতা তৈরি হওয়ায় পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বিষয়টি ধরা পড়ে। অপারেশন করে বাদ দিতে যান চিকিৎসকরা।

বিশদে…
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, দানিয়েলার সাত সন্তান রয়েছে। কিন্তু এত বছর ধরে মৃত ভ্রূণটি শরীরের একাংশে পড়ে রইল, কোনও ভাবে টের পেলেন না বৃদ্ধা? দানিয়েলার সন্তানদেরই এক জন, ব্রিটিশ ট্যাবলয়েডকে জানিয়েছেন, কখনও-সখনও ‘মা’ বলতেন, পেটের ভিতর কিছু একটা যেন নড়াচড়া করছে। কিন্তু এমন যে হতে পারে, সে কথা কেউ স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেননি। ব্রাজিলের যে চিকিৎসক দানিয়েলার চিকিৎসা করছিলেন তিনি জানালেন, ‘এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি’-র ক্ষেত্রে অনেক সময় ‘মা’ বুঝতে পারেন না যে তিনি আসন্নপ্রসবা। সোজা করে বললে, সাধারণত, জরায়ুর মধ্যে বেড়ে ওঠাই ভ্রূণের নিয়ম। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে তা জরায়ুর বাইরেও থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে ‘মা’ অনেক সময় ‘প্রেগন্যান্সি’ টেরই পান না। কিন্তু জরায়ুর বাইরে ভ্রূণের বিকাশ সম্ভব নয়। তাই এসব ক্ষেত্রে তার মৃত্যু হয় এবং সেটি ‘ক্যালসিফায়েড’ হয়ে যায়। নিজের  নিয়মে এটি শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। দানিয়েলার ক্ষেত্রে এটাই হয়নি বলে ধারণা ডাক্তারদের।

বৃদ্ধার অভিজ্ঞতা…
পরিবারের দাবি, কয়েক সপ্তাহ ধরে পেটে অস্বস্তির কথা বলছিলেন অশীতিপর বৃদ্ধা। কিন্তু প্রথম বার তাঁর চেক-আপের পরও আসল সমস্যা বুঝতে পারেননি ডাক্তার। উল্টে সংক্রমণের চিকিৎসা করেছিলেন ডাক্তার। তাতে সুরাহা না হলে একটি থ্রি-ডি স্ক্যান করা হয়। তখনই ‘lithopedion’ কন্ডিশনটি ধরা পড়ে। গর্ভস্থ শিশুর পাথরে পরিণত হওয়াকে এক কথায় বলা হয় lithopedion। ডাক্তারদের মধ্যেও এই শব্দবন্ধই ব্যবহৃত। দ্রুত তাঁর অপারেশনের ব্যবস্থা করে হাসপাতাল। কিন্তু অপারেশনের পর দিনই আইসিইউ-তে স্থানান্তরিত করতে হয় দানিয়েলাকে। পরদিনই সেখানে সংক্রমণে মারা যান বৃদ্ধা। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, এই ধরনের ক্ষেত্রে চোখে পড়ার মতো উপসর্গও থাকে না অনেক সময়। ফলে সমস্যা নির্ণয়ে বহু দেরি হয়ে যায়। কতটা দেরি? ব্রাজিলের এই বাসিন্দার ক্ষেত্রে অর্ধশতকেরও বেশি সময় লেগে গেল।

(Feed Source: abplive.com)