ব্যস্ততার জীবনে একদিন একটু অট্টহাসি হয়ে যাক! শুরু থেকেই গুগলও তাই হাসাতে ভালোবাসে। গুগলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি পেজ এবং সের্গেই ব্রিন প্র্যাঙ্ক করতে খুব পছন্দ করতেন, কোম্পানি শুরু করার কিছু দিন যেতে না যেতেই, তাঁরা প্রতি এপ্রিল ফুল দিবসে মানুষকে শুরু করেছিলেন। গুগল এদিন এমন কিছু কথা কিংবা আপডেটের কথা বলে যে মানুষ বুঝতেই পারেন না, বোকা বানানো হচ্ছে তাঁদের। অবশেষে যখন বোঝেন তখন অনেক দেরি হয়ে যায়, এপ্রিল ফুল হয়ে যান।
এক বছর তো, গুগল চাঁদে কোপার্নিকাস গবেষণা কেন্দ্রের জন্য একটি চাকরির বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল। অন্য বছরে আবার, কোম্পানি বলেছিল যে তারা গুগলের সার্চ ইঞ্জিনে একটি ‘স্ক্র্যাচ এবং স্নিফ’ বৈশিষ্ট্য চালু করার পরিকল্পনা করেছে। কৌতুকগুলি এতটাই ওভার-দ্য-টপ ছিল যে মানুষ প্ৰথমে Google-র দুষ্টুমি বুঝে উঠতে না পারলেও পরে সেগুলি নিয়ে হাসতে শুরু করেছিল। আর সেই কারণেই পেজ এবং ব্রিন ২০ বছর আগে এমন কিছু নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যা কেউ বিশ্বাস করবে না। আর সেটি ছিল জিইমেইল।
জিইমেইল, একটি বিনামূল্যের পরিষেবা, প্রতি অ্যাকাউন্টে এক গিগাবাইট করে স্টোরেজ দেয়। কিন্তু এটি আজ থেকে ২০ বছর আগে মানুষের চোখে ছিল বিস্ময়ের সমান। কারণ, ইয়াহু এবং মাইক্রোসফ্ট দ্বারা পরিচালিত তৎকালীন নেতৃস্থানীয় ওয়েবমেল পরিষেবাগুলিতে মাত্র ৩০ থেকে ৬০টি ইমেল করলেই স্টোরেজ ফুরিয়ে যেত। সেখানে দাঁড়িয়ে ২৫০ থেকে ৫০০ গুণ বেশি ইমেইল পাঠানোর সুবিধা যথেষ্ট অবাক করেছিল মানুষকে। এছাড়াও স্টোরিজে কোয়ান্টাম লিপ ছাড়াও, গুগলের অনুসন্ধান প্রযুক্তির মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা পরিষেবাটিতে সঞ্চিত পুরনো ইমেইল, ফটো বা অন্যান্য ব্যক্তিগত তথ্য পুনরুদ্ধার করতেও পারেন। এটিও তো বিস্ময়ই।
এমনকী ২০০৪ সালে এপ্রিল ফুল দিবসের দুপুরে গুগল যখন জিমেইলের এই বহুগুণের গল্প সামনে এনেছিল, তা পড়ে গ্রাহকরা তো রীতিমত বিভ্রান্ত হয়ে নিউজ এজেন্সিকে গুলিকে কল করতে শুরু করে দিয়েছিলেন। দাবি জানাচ্ছিলেন যে, গুগলের প্রতারকরা প্রতারণা করেছে। প্রাক্তন গুগল প্রকৌশলী পল বুচেইট সম্প্রতি একটি এপি সাক্ষাৎকারে সময় জিমেইলকে তৈরি করার কথা স্মরণ করে বলেছিলেন, এটি ছিল আকর্ষণীয়, এমন একটি পণ্য যা মানুষের বিশ্বাস হবে না, অথচ এটি বাস্তব।
পেজ তখন মাত্র ৩১ বছর বয়সী, অত্যাধুনিক ভাবে জিমেইল তৈরি করে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে আগামীতে মানুষ এটি অত্যন্ত পছন্দ করবেন। পেজ ঠিক ছিলেন। Gmail-এ এখন আনুমানিক ১.৮ বিলিয়ন সক্রিয় অ্যাকাউন্ট রয়েছে — প্রতিটিই Google Photos এবং Google Drive-এর সঙ্গে যুক্ত করে মোট ১৫ গিগাবাইট বিনামূল্যের স্টোরেজ অফার করছে। তবুও এটি এখনও অনেক ব্যবহারকারীর জন্য যথেষ্ট নয়, ঠিক যেমনটি গুগল আশা করেছিল। তাই আরও ২০০ গিগাবাইট স্টোরেজের জন্য বার্ষিক ৩০ মার্কিন ডলার টাকা নেই গুগল। ৫ টেরাবাইট স্টোরেজের জন্য বার্ষিক ২৫০ মার্কিন ডলার পর্যন্ত চার্জ করে।
জিমেইলের পরে ওয়ার্ড প্রসেসিং এবং স্প্রেডশীট অ্যাপ্লিকেশন সহ গুগল ম্যাপ এবং গুগল ডক্স এসেছে। তারপরে ভিডিয়ো সাইট ইউটিউব, তারপরে ক্রোম ব্রাউজার এবং অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের প্রবর্তন হয়, যা বিশ্বের বেশিরভাগ স্মার্টফোনকে ক্ষমতাশালী করে তোলে৷
(Feed Source: hindustantimes.com)