চন্দ্রযান তিনের সাফল্যে খুশি আমেরিকা, ভারতের ঝুলিতে বিজ্ঞানের সেরা পুরস্কারটি

চন্দ্রযান তিনের সাফল্যে খুশি আমেরিকা, ভারতের ঝুলিতে বিজ্ঞানের সেরা পুরস্কারটি

সারা বিশ্বে ভারতীয়দের মর্যাদা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। আগামী প্রজন্মকেও অনুপ্রাণিত করতে চলেছে ভারতই। চন্দ্রযান ৩ মিশনের সফল অভিযানের পর আরও একটি সুখবর ভারতের জন্য। জানা গিয়েছে, চন্দ্রযান তিন মিশনের সফলতার পিছনে যে প্রতিভাবান বিজ্ঞানীদের হাত ছিল, তাঁরা আমেরিকায় খ্যাতি অর্জন করেছেন। ওই বিজ্ঞানীদের টিম মহাকাশ অনুসন্ধানের জন্য ২০২৪ সালের মর্যাদাপূর্ণ জন এল. ‘জ্যাক’ সুইগার্ট জুনিয়র পুরস্কার পেয়েছে। হিউস্টনে ভারতের কনসাল জেনারেল ডিসি মঞ্জুনাথ কলোরাডোতে বার্ষিক মহাকাশ সেমিনারে ইসরোর পক্ষ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেছেন। এই পুরস্কার ভারতের বিস্ময়কর সাফল্যের গল্প বলে।

  • জন এল. ‘জ্যাক’ সুইগার্ট জুনিয়র পুরস্কারের তাৎপর্য

ইসরোর জন এল. ‘জ্যাক’ সুইগার্ট জুনিয়র পুরস্কার, প্রত্যেক ভারতীয়ের জন্য গর্বের বিষয়। জন এল. ‘জ্যাক’ সুইগার্ট জুনিয়র পুরস্কার হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক স্পেস ফাউন্ডেশনের একটি শীর্ষ পুরস্কার। মহাকাশ অনুসন্ধানের জন্য পুরষ্কারটি ২০০৪ সালে জন এল. জ্যাক সুইগার্ট, জুনিয়রের স্মরণে স্পেস ফাউন্ডেশন দ্বারা চালু করা হয়েছিল। জন এল. জ্যাক সুইগার্ট, জুনিয়র নাসার (ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) অ্যাপোলো ১৩ মিশনের অংশ ছিলেন।

  • ঠিক কী কারণে দেওয়া হয় এই পুরস্কার

জন এল. ‘জ্যাক’ সুইগার্ট জুনিয়র পুরস্কার মহাকাশের ক্ষেত্রে যুগান্তকারী কাজের জন্য দেওয়া হয়। একটি মার্কিন ভিত্তিক অলাভজনক সংস্থা স্পেস ফাউন্ডেশন, মহাকাশ অনুসন্ধান এবং আবিষ্কারের ক্ষেত্রে একটি স্পেস এজেন্সি, কোম্পানি বা সংস্থার কনসোর্টিয়ামকে সম্মান জানাতে এই পুরস্কারটি প্রদান করে। স্পেস ফাউন্ডেশন কর্তৃক আয়োজিত স্পেস সেমিনারে প্রতি বছর মহাকাশ-সম্পর্কিত প্রযুক্তি এবং প্রকৌশলে অসামান্য অর্জনের জন্য নিবেদিত এই পুরস্কার প্রদান করা হয়। নাসার এর জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ দল ২০২৩ সালে জ্যাক সুইগার্ট পুরস্কার পেয়েছিল।

  • চন্দ্রযান তিন-এর সাফল্যে ভারতের কী কী সুবিধা হবে

চন্দ্রযান ৩-এর মতো অভিযানের সাফল্য ভবিষ্যতে ভারতীয়দের অনেক সুবিধা দেবে। আবহাওয়া সম্পর্কিত সঠিক তথ্য পাওয়া যাবে এবং এটি যোগাযোগের উন্নতিতেও সাহায্য করবে। সাধারণ মানুষের মনে বছরের পর বছর ধরে থাকা প্রশ্নের উত্তর মিলবে। যেমন, মানুষ কি কখনো চাঁদে যেতে পারবে, চাঁদে জীবন আছে কি নেই, চাঁদে চাষাবাদ করা যাবে কি না বা চাঁদে আদতে কি আছে। চন্দ্রযান তিন অর্থনীতিতেও সরাসরি প্রভাব ফেলবে। মহাকাশ প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে কাজ বাড়বে, ফলে কর্মসংস্থানের সুযোগও বাড়বে।

জানুয়ারিতে পুরষ্কার ঘোষণা করে, স্পেস ফাউন্ডেশনের সিইও হিদার প্রিংল বলেছিলেন যে ‘মহাকাশে ভারতের নেতৃত্ব বিশ্বের কাছে একটি অনুপ্রেরণা।’ হিদার প্রিংল বলেছিলেন যে ভারতের চাঁদে অবতরণ আমাদের সবার জন্য একটি মডেল। অভিনন্দন, ভারত পরবর্তীতে আরও কী করতে চলেছে তা দেখার জন্য আমরা উদগ্রীব এখন এটা থেকে স্পষ্ট যে ভারত মহাকাশের ক্ষেত্রে দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। বিশ্বও স্বীকার করছে যে মহাকাশের ক্ষেত্রে ভারতের অবদান গুরুত্বপূর্ণ এবং আগামী সময়ে ভারত সাফল্যের নতুন অধ্যায় তৈরি করবে।

  • এক নজরে চন্দ্রযান ৩ মিশন

একটি GSLV-মার্ক III (LVM-৩) রকেট ব্যবহার করে গত বছরের ১৪ জুলাই, অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা থেকে চন্দ্রযান ৩ মিশন চালু করেছিল ইসরো। বিক্রম নামে একটি ল্যান্ডার এবং প্রজ্ঞান নামে একটি রোভার ছিল এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিল চন্দ্রযানকে। ল্যান্ডারটি ২৩ অগস্টে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফলভাবে অবতরণ করে। এরপর চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পা রাখা প্রথম দেশ হয়ে ওঠে ভারত। চন্দ্রযান ৩ ল্যান্ডার যে পয়েন্টে অবতরণ করেছিল তার নাম ছিল শিব শাক পয়েন্ট। আমেরিকা, রাশিয়া এবং চিনের পরে, ভারতই বিশ্বের চতুর্থ দেশ, যে সফলভাবে চাঁদে অবতরণ মিশন সম্পন্ন করেছে।

(Feed Source: hindustantimes.com)