
বারংবার প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, সমুদ্রে মুখ থুবড়ে পড়ছিল রকেটগুলো। মহাকাশ জয়ের যে স্বপ্নটা দেখেছিলেন বর্তমানের ইসরো প্রধান, ধীরে ধীরে তা চোখের সামনেই ম্লান হয়ে যাচ্ছিল। ক্ষুন্ন হচ্ছিল মন। হতাশা ঘিরে ধরছিল তাঁকে। মনে হয়েছিল যে আর থাকবেন না এই মহাকাশ বিজ্ঞানের পেশায়। অন্য কিছু করবেন। যদিও এমন অবস্থার মধ্য দিয়ে বেশিদিন যেতে হয়নি, সহজেই পেরিয়ে গিয়েছিলেন কঠিন পথ। ভারত এখন মহাকাশ অনুসন্ধানের দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে এসেছে। তবে, এই পথটা যে কতটা দুর্গম ছিল ইসরো প্রধান এস সোমনাথের জন্য, সেই গল্পই এদিন শুনিয়েছেন তিনি।
ইসরো চেয়ারম্যান এস সোমনাথ বলেছেন যে রকেট সমুদ্রে অবতরণ করার সময় তিনি এতটাই হতাশ হয়ে পড়েছিলেন, যে সেই সময়ে তিনি ইসরো ছেড়ে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় বসার কথা ভেবেছিলেন। দেশের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে আইএএস অফিসার হতে চেয়েছিলেন তিনি। সেই সময় ইসরোর বেতনও খুব একটা বেশি ছিল না। বিজ্ঞানীদের মধ্যে তাই ইসরো ছেড়ে আমেরিকায় চলে যাওয়ার প্রবণতা দেখা গিয়েছিল। যা আরও বেশি করে হতাশা ডেকে এনেছিল সোমনাথের জীবনে।
সিভিল সার্ভিসের জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছিলেন সোমনাথ
সম্প্রতি, গোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ছাত্রদের ইসরো প্রধান বলেছিলেন যে তাঁর পরামর্শদাতা সুন্দরম রামকৃষ্ণান, বিক্রম সারাভাই স্পেস সেন্টারের প্রাক্তন পরিচালক, তাঁকে ‘কোনও মন্ত্রীর কেরানি বা পিএ’ হতে বাধা দিয়েছিলেন। সোমনাথ জানিয়েছেন, রামকৃষ্ণান যখন জানতে পারলেন যে সোমনাথ সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তখন রামকৃষ্ণান আরও বেশি করে তাঁকে কাজের চাপে রেখেছিলেন। অবশেষে পরীক্ষাটি পাস করতে পারেননি আজকের ইসরো প্রধান।
আসলে বিক্রম সারাভাই স্পেস সেন্টারের প্রাক্তন পরিচালক সুন্দরম রামকৃষ্ণানকে গুরু হিসাবে পেয়েছিলেন এস সোমনাথ। তাঁর কথায়, জীবনে চলার পথে একজন গুরু খুঁজে পাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় তাঁরা আপনাকে আপনার যোগ্যতার চেয়ে আপনার ত্রুটিগুলি সম্পর্কে বেশি বলেন। তাঁরা আপনাকে বিপথ থেকে পথে আসার পথ দেখান। ইসরো প্রধান এস সোমনাথের আরও বলেছিলেন যে তিনি ছোটবেলায় ডাক্তার হতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তাঁর বাবা তাঁর মধ্যে জীববিজ্ঞানের পরিবর্তে গণিতের প্রতি আকর্ষণ তৈরি করেছিলেন। আসলে, কোনও কিছুর ক্ষেত্রে কঠোর পরিশ্রম করে, একজন মানুষের পক্ষে সেই বিষয়ের প্রতি আবেগ তৈরি করা সম্ভব। এটি এমন একটি ক্ষমতা যা প্রত্যেকের মধ্যে বিকাশ করা দরকার। স্নাতক পড়ুয়াদের এমনই পরামর্শ দিয়েছিলেন এস সোমনাথ।
(Feed Source: hindustantimes.com)
