বয়সের সঙ্গে সঙ্গে কি উচ্চতাও কমে যাচ্ছে? এর জন্য কি দায়ী হতে পারে অস্টিওপোরোসিস?

বয়সের সঙ্গে সঙ্গে কি উচ্চতাও কমে যাচ্ছে? এর জন্য কি দায়ী হতে পারে অস্টিওপোরোসিস?

কলকাতা: অস্টিওপোরোসিস রোগের সম্পর্কে বেশির ভাগ মানুষই ওয়াকিবহাল। এটা আসলে হাড়ের সাধারণ একটা রোগ। এক্ষেত্রে হাড় দুর্বল হয়ে পড়ে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হাড় ক্ষয় হতে থাকলে তাতে চিড় ধরার আশঙ্কা বাড়ে। এই রোগ সম্পর্কে বিশদে আলোচনা করছেন বেঙ্গালুরুর রিচমন্ড রোডের বোন অ্যান্ড জয়েন্ট সার্জারি ফর্টিস হাসপাতালের ট্রমা অ্যান্ড অর্থোপেডিক্স বিভাগের এইচওডি ডা. সাই কৃষ্ণ বি নায়ডু

অস্টিওপোরোসিস কী?

হাড়ের ভর এবং ঘনত্ব হারিয়ে যাওয়ার কারণে হাড় দুর্বল হয়ে পড়ে। আর হাড়ে চিড় ধরতে শুরু করে। ভারতে প্রায় ১ কোটিরও বেশি মানুষ এই সমস্যায় আক্রান্ত। প্রাথমিক ভাবে কোনও উপসর্গ দেখা যায় না। ধীরে ধীরে ব্যাক পেন বা পিঠে ব্যথার সমস্যা হতে পারে। আর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে উচ্চতা কমতে থাকে রোগীর।

বয়সের সঙ্গে সঙ্গে উচ্চতা কি সত্যিই কমে আসে?

হ্যাঁ এটা ঠিক যে, রোগীর উচ্চতা কমে আসতে থাকে। আংশিক ভাবে ডিস্ক ডিহাইড্রেশনের কারণে এটা হয়। আর এর ফলে মেরুদণ্ডের কার্যকারিতা নষ্ট হয়। তীব্র অস্টিওপোরোসিসের ক্ষেত্রে একাধিক স্তরে ভার্টিব্রাল ফ্র্যাকচারের কারণে উচ্চতা কমে আসে।

কাদের ঝুঁকি বেশি?

সাধারণত বয়স্কদের মধ্যে এটা দেখা যায়। এমনকী মেনোপজের পরেও মহিলাদের এই রোগের ঝুঁকি বেশি। এখানেই শেষ নয়, আইটি চাকরিজীবী, অফিসে চাকরিজীবীদেরও এই রোগ হতে পারে দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করার কারণে। এমনকী শিশুরাও রয়েছে ঝুঁকির আওতায়। আসলে শিশুরা এখন ঘরেই সময় কাটায়। যার ফলে ওস্টিওপেনিয়ার আশঙ্কা বাড়ে। এর পাশাপাশি রোদে না বেরোনোর ফলে দেহে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি হবে। তাতেও হাড় দুর্বল হয়ে পড়ে। আসলে কাজ করতে থাকলে বা সচল থাকলে বোন রিমডেলিং হতে থাকে। তাই প্রতিদিন গড়ে ৫-৬ হাজার স্টেপ হাঁটা উচিত। ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি থাকা রোগীদের মধ্যে আবার গ্যাস্ট্রোইন্টেস্টিনাল রোগ, রেনাল ফেলিওরের আশঙ্কাও দেখা যায়। নিউট্রিশনাল ডায়েটের সাপ্লিমেন্টেশেনে এঁদের রোগ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

অস্টিওপোরোসিস এবং অস্টিওপেনিয়ার পার্থক্য কী?

অস্টিওপেনিয়া আসলে অস্টিওপোরোসিসের মৃদু অবস্থা। কাজকর্মের ঘাটতির কারণে এটা কমবয়সীদের মধ্যে মূলত দেখা যায়। এর পাশাপাশি পুষ্টি, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি-এর ঘাটতিও দায়ী। নির্দিষ্ট কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে এই ফারাক করা সম্ভব।

অস্টিওপোরোসিস কোন টেস্টের মাধ্যমে নির্ণয় করা হয়?

বয়স এবং রোগের ইতিহাস দেখেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা নির্ধারণ করা হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে DEXA স্ক্যানের মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করা হয়। FRAX টুল হল ফ্রি অনলাইন টুল, যার মাধ্যমে অস্টিওপোরোসিস ফ্র্যাকচারে সহায়তা পাওয়া যায়।

প্রতিরোধের উপায় কী?

প্রতিরোধের অন্যতম উপায় হল কাজ করে যেতে হবে। কাজ করা, হাঁটাচলা করা, রোদে বেরোনো এবং স্বাস্থ্যকর ডায়েটের মাধ্যমে ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি পূরণ করা যাবে। যা হাড় মজবুত করতে সহায়ক।

চিকিৎসার উপায় কী?

অবস্থা এবং রোগ নির্ণয়ের উপর চিকিৎসা নির্ভর করে। চিকিৎসা পদ্ধতির মধ্যে অন্যতম হল

ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী কমবয়সীদের ভিটামিন ডি এবং ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট প্রতিদিন গ্রহণ করতে হবে।

ঝুঁকির আওতায় থাকা পুরুষ এবং মহিলাদের বিসফসফোনেটের প্রয়োজন রয়েছে।

মেনোপজ পরবর্তীকালে মহিলাদের মধ্যে হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপির প্রয়োজন।

নির্দিষ্ট বোন বিল্ডিং ওষুধের মধ্যে অন্যতম টেরিপার্টাইড,আবালোপার্টাইড ঝুঁকি কমানো হয়।

(Feed Source: news18.com)