মাত্র ১ দিন ছুটি নিয়ে টানা ১০৪ দিন কাজ, বেঘোরে মৃত্যু

মাত্র ১ দিন ছুটি নিয়ে টানা ১০৪ দিন কাজ, বেঘোরে মৃত্যু

 

কাজের বিরাম ছিল না। টানা ১০৪ দিন কাজ করেছিলেন ব্যক্তি। ছুটি পেয়েছিলেন একদিন। শেষ রক্ষা হয়নি। একের পর এক অর্গান ফেল করে মারা গেলেন ব্যক্তি। জানা গিয়েছে, অত্যন্ত দুর্বল ইমিউন সিস্টেমের কারণে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে। এর ফলে গুরুতর সংক্রমণের কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

পূর্ব চিনের এক বাসিন্দার সঙ্গে এই ঘটনাটি ঘটেছে। তাঁর নাম ছিল আ’বাও। বয়স হয়েছিল মাত্র ৩০ বছর। আ’বাও-এর মর্মান্তিক মৃত্যু দেখে ঝেজিয়াং প্রদেশের একটি আদালত সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে কোম্পানিটি ওই ব্যক্তির মৃত্যুর জন্য মাত্র ২০ শতাংশ দায়ী। এই কারণেই আ’বাও-এর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য কোম্পানিটিকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

ঠিক কী ঘটেছিল

গত বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে এই বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত একটি কোম্পানিতে পেইন্টার হিসাবে কাজ করার কথা ছিল আ’বাও-এর। কন্ট্রাক্ট স্বাক্ষর করার পর, তিনি ফেব্রুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত টানা ১০৪ দিন কাজ করেন, ৬ এপ্রিল মাত্র একদিন ছুটি দেওয়া হয়েছিল আ’বাওকে। এরপর ২৫ মে, তিনি ভীষণ অসুস্থ বোধ করছিলেন, কাজ করতে পারেননি। সেই দিনটি ছুটি নিয়ে নিয়েছিলেন। এরপর, ২৮ মে, তাঁর স্বাস্থ্যের দ্রুত অবনতি হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে, তাঁর সহকর্মীরা তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসা করে ডাক্তাররা দেখতে পান যে আ’বাও-এর শ্বাসযন্ত্র কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে। ফুসফুসের সংক্রমণও ধরা পড়ে। এরপর তিনি ১ জুন মারা যান। এসসিএমপি জানিয়েছে এমনটাই।

সামাজিক নিরাপত্তা অধিকর্তাদের দাবি, টানা এতদিন কাজের কারণে আ’বাও-এর মৃত্যু হয়নি। কারণ তিনি যখন অসুস্থ হয়েছিলেন, তার ৪৮ ঘণ্টারও পর মারা গিয়েছিলেন। আ’বাও-এর মৃত্যুতে মর্মাহত পরিবার কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করলেও, কোনও লাভ হয়নি। এরপরেই পরিবার যুক্তি দিয়ে বলেছিল যে নিয়োগকর্তা তাঁর ভাল যত্ন নেননি। জোর করে বেশি কাজ করিয়েছিলেন। এই কারণেই প্রাণ গিয়েছে ছেলেটির।

বিচারে আদালত কী বলছে

চিনা শ্রম আইন অনুযায়ী, দিনে সর্বোচ্চ আট ঘণ্টা এবং সপ্তাহে মোট ৪৪ ঘণ্টা কাজ করাই নিয়ম। কিন্তু আদালত দেখেছে যে আ’বাও, সাধারণ নিয়মের বাইরে অনেক বেশি ঘণ্টা কাজ করেছিলেন। আদালত আরও উল্লেখ করেছে, মৃতের নিয়োগকর্তা তাঁর স্বাস্থ্যের তোয়াক্কা করেননি। এই কারণেই কোম্পানিটিকে তাঁর মৃত্যুর জন্য ২০ শতাংশ দায়ী করেছে আদালত। মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসাবে, ৪০০,০০০ ইউয়ান ($56,000) প্রদান করার আদেশ দেওয়া হয়েছে। মানসিক কষ্টের জন্য ১০,০০০ ইউয়ান দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।

কোম্পানির কী দাবি

আ’বাও নিজের ইচ্ছায় বেশি ঘণ্টা কাজ করেছে। আদালত আরও যুক্তি দিয়েছিল যে তাঁর মৃত্যু বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার কারণে হয়েছে। অসুস্থ হওয়ার পর চিকিৎসা পরিষেবা পেতে দেরি হওয়ার কারণে হয়েছে। কোম্পানিটি এই প্রসঙ্গে, আদালতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করেছিল ঠিকই। কিন্তু ঝোশান ইন্টারমিডিয়েট পিপলস কোর্ট অগস্টে তার রায় নিশ্চিত করেছে।

(Feed Source: hindustantimes.com)