বিগত অর্ধ-শতক ধরে নন-সার্জিক্যাল ক্যানসারের চিকিৎসার মধ্যে দুই ধরনের ট্র্যাডিশনাল থেরাপি খুবই জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। এই দুই ধরনের থেরাপি হল কেমোথেরাপি এবং রেডিয়েশন থেরাপি। এই উভয় ধরনের থেরাপির ক্ষেত্রে ক্যানসার কোষ ধ্বংস করা হয়। আর এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ফলস্বরূপ দেহের স্বাভাবিক কোষগুলিও দ্রুত বিভাজনের সম্মুখীন হয়।
বর্তমানে লক্ষ্য হল এমন ক্যানসার থেরাপি আনা, যার মাধ্যমে মূলত ওষুধের দ্বারাই ক্যানসারের বৃদ্ধি এবং ছড়িয়ে পড়া রোধ করা যায়। এই লক্ষ্যযুক্ত বা টার্গেটেড থেরাপির লক্ষ্য হল স্বাভাবিক কোষগুলির কোনও রকম ক্ষতি না করেই দেহের ক্যানসার কোষ থেকে একেবারে মুক্তিলাভ।
কারকিনোস হেলথকেয়ার প্রাইভেট লিমিটেডের কনসালট্যান্ট মেডিকেল অঙ্কোলজিস্ট ডা. শ্রেয়া মল্লিক বলেন, লক্ষ্য অনুযায়ী পরিবর্তনগুলি শনাক্ত করার জন্য টিউমারের আণবিক এবং জিনোমিক প্রোফাইলিং হল প্রিসিশন অঙ্কোলজি। এটাই এখন ধীরে ধীরে বাড়ছে। আর তা বিগত দশকের ক্লিনিক্যাল প্র্যাকটিসের মূলস্রোতে ঢুকে পড়েছে। প্রিসিশন মেডিসিনকে পার্সোনালাইজড অঙ্কোলজি বলে ডাকা হয়। সঠিক সময়ে সঠিক ওষুধের সঠিক ডোজ দেওয়াই এর মূল লক্ষ্য। প্রিসিশন অঙ্কোলজির প্রয়োগে অ্যাডভান্সড এবং মেটাস্ট্য়াটিক রোগীরা আরও বেশি সময় বেঁচে থাকতে পারেন। প্রিসিশন থেরাপির এই যুগ কিন্তু ফুসফুস, স্তন, কোলোরেক্টাল, মেলানোমা, কিডনি, ব্লাডার এবং লিম্ফোমার ম্যালিগন্যান্সির উপর বৈপ্লবিক প্রভাব ফেলছে।
ডা. শ্রেয়া মল্লিক
অঙ্কোজেনিক ড্রাইভার মিউটেশন থাকা রোগীদের শনাক্তকরণের ফলে প্রতিটি টিউমারের জিনোমিক তথ্য ব্যবহারের সুযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এতে অ্যাডভান্সড ক্যানসারের রোগীদের জন্য সঠিক থেরাপির সন্ধান পাওয়া যাবে। প্রিসিশন মেডিসিনের আলাদা আলাদা ভাগ রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, স্মল মলিকিউল টাইরোসিন কাইনেজ ইনহিবিটরস, মোনোক্লোনাল অ্যান্টিবডিজ, সেল সাইকেল ইনহিবিটরস, ইমিউন চেকপয়েন্ট ইনহিবিটরস (ইমিউনোথেরাপি) এবং অ্যান্টিবডি-ড্রাগ কনজ্যুগেটস (এডিসি) এবং সিএআর-টি সেল থেরাপি।
মোনোক্লোনাল অ্যান্টিবডিজ এবং স্মল মলিকিউল টাইরোসিন কাইনেজ ইনহিবিটরসের মতো টার্গেটেড থেরাপি ক্যানসার কোষের উপর বিভিন্ন টার্গেটের সঙ্গে প্রতিক্রিয়া সম্পাদন করে। আবার ইমিউনোথেরাপি ক্যানসার কোষ দূর করার জন্য ইমিউন সিস্টেমকে কার্যকর করে। অ্যান্টিবডি-ড্রাগ কনজ্যুগেটস হল নতুন ধরনের ক্যানসারের ওষুধ। মূলত সুস্থ এবং ম্যালিগন্যান্ট কোষের মধ্যে পার্থক্য করার জন্যই এডিসি তৈরি করা হয়েছে। রোগীরা দীর্ঘ সময় ধরে এই ওষুধ সেবন করলেও কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হবে না। স্তন ক্যানসার, লিম্ফোমা এবং লিউকেমিয়ার চিকিৎসায় কার্যকর হবে এটি।
(Feed Source: news18.com)