কলকাতা: আরজি কর কাণ্ডে (RG Kar News) তোলপাড়ের মধ্যেই এবার আত্মহত্যার চেষ্টা (suicide) টলিউড ইন্ডাস্ট্রির কেশসজ্জা শিল্পীর (Hair Stylist)। অভিযোগ ‘কর্মক্ষেত্রে হেনস্থা’র জেরেই নিজের প্রাণ নেওয়ার চেষ্টা করেছেন তিনি। অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তী (Sudipta Chakraborty) নিজের প্রোফাইলে পোস্ট করে এই সাংঘাতিক খবর দেন। অভিনেত্রী দামিনী বসু লেখেন, ‘তুই আর একা নোস’।
স্টুডিও পাড়ায় ‘থ্রেট কালচার’? ঠিক কী ঘটেছে?
এবার টালিগঞ্জের স্টুডিও পাড়ায় ‘থ্রেট কালচার’! সিলেকশনের বদলে ইলেকশন চাওয়ায় কেশসজ্জা শিল্পীর কাজ বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল হেয়ার ড্রেসার গিল্ড ও ফেডারেশনের বিরুদ্ধে। কাজ না পেয়ে দেনার দায়ে জর্জরিত হয়ে গতকাল বাড়িতেই গায়ে কেরোসিন ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ওই হেয়ার ড্রেসার, এমনই অভিযোগ পরিবারের। এই ঘটনায় গিল্ডের ১১ জনের বিরুদ্ধে হরিদেবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে হেয়ার ড্রেসারের পরিবার। সম্প্রতি ফেডারেশনের সঙ্গে পরিচালকদের দ্বন্দ্ব মেটাতে হস্তক্ষেপ করেন মুখ্যমন্ত্রী। পরিচালকরা দাবি করেন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ কাউকে সাসপেন্ড বা বয়কট করা যাবে না। তারপরেও ফেডারেশনের বিরুদ্ধে কাজ বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠায় সরব হয়েছেন টালিগঞ্জের স্টুডিও পাড়ার অভিনেতা-পরিচালকদের একাংশ।
অভিযোগ ইলেকশন চাওয়ায় প্রথমে সাসপেন্ড, পরে একঘরে করে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। এই অভিযোগ হেয়ার ড্রেসারের সহকর্মী আরেক হেয়ার ড্রেসার চন্দ্রা মিত্রর। হাসপাতালে যে থ্রেট কালচারের কথা শোনা যাচ্ছে, তার থেকে বেশি হুমকি-হুঁশিয়ারি চলে স্টুডিও পাড়ায়, দাবি অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তীর। সাসপেন্ড করা বেআইনি, এভাবে কারও কাজ কেড়ে নেওয়া যায় না, প্রতিক্রিয়া পরিচালক সুদেষ্ণা রায়ের।
‘কর্মক্ষেত্রে হেনস্থা’র অভিযোগ তুলে আত্মহত্যার চেষ্টা টলিউডের হেয়ার স্টাইলিস্টের
শনিবার রাতের দিকে নিজের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডলে আক্ষেপের সুরে পোস্ট করেন অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তী। তিনি লেখেন, ‘আমাদের ইন্ডাস্ট্রির কেশসজ্জা শিল্পী, আমার হাত ধরেই এই ইন্ডাস্ট্রিতে যার আসা, এই মুহূর্তে হাসপাতালের এমার্জেন্সিতে শুয়ে। সুইসাইড নোট লিখে রেখে গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে নিজেকে শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কোনওরকমে ঠেকানো গেছে। ওকে বাঁচানো গেছে। চিকিৎসা চলছে। সন্ধ্যাবেলা মেসেজ করে আমার সাহায্য চেয়েছিল। ক্লাসে ছিলাম। সময়মতো উত্তর দিতে পারিনি। নিজেকে ক্ষমা করতে পারছি না।’
তবে একই পোস্টের শেষে তিনি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। অভিনেত্রী লেখেন, ‘কর্মক্ষেত্রে হেনস্থা কোন পর্যায়ে যেতে পারে, তার জ্বলন্ত উদাহরণ এই মুহূর্তে আমার চোখের সামনে। আমি এর শেষ দেখে ছাড়ব, কথা দিলাম।’ অভিনেত্রী দামিনী বেণী বসুও এদিন লেখেন, ‘যারা কর্মক্ষেত্রে নির্যাতনটাকে নিয়ম বলে চালিয়েই নিজেদের রাজা-রানী ভাবছেন, মানুষের পেটে লাথি মেরে, ভয় কায়েম করে, দেওয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে দিয়ে, একঘরে কোণঠাসা করে, চুপ করিয়ে রেখে বছরের পর বছর ভাবছেন – এমনি করে যায় যদি দিন যাক না – ভুলে যাবেন না দাদা-দিদিরা, সময়ের ঘড়ির কাঁটা আপনার দিকে তাক করে আছে। ঠিক যেমন আমরাও। সময় শেষ, প্রিয় টালিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রি। তুই আর একা নোস।’ সুদীপ্তার পোস্টের কমেন্ট থেকেই জানা যায় যে আগুন ধরার আগেই তাঁকে থামানো গিয়েছে। তবে ‘কর্মক্ষেত্রে হেনস্থা’, ‘কাজ না পাওয়া’র অভিযোগের শেষ দেখবেন তাঁর ইন্ডাস্ট্রির সহকর্মীরা, সোশ্যাল পোস্টেই স্পষ্ট জানাচ্ছেন তাঁরা।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রতিবাদে পথে যেসকল শিল্পীরা নেমেছিলেন তাঁদের অন্যতম সুদীপ্তা। বারংবার তাঁকে পথে নেমে গর্জে উঠতে দেখা গিয়েছে। এই আবহে টলিউড ইন্ডাস্ট্রির অন্দরে মহিলাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে একটি ফোরাম গড়ে তোলেন বিনোদন দুনিয়ার মহিলারাই। তারই মধ্যে এই ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছে সকলকেই।
(Feed Source: abplive.com)