এবার ওয়াকি-টকি, ল্যান্ডলাইন ফোন বিস্ফোরণ লেবাননে, বাড়ছে মৃতের সংখ্যা, দায় স্বীকার ইজরায়েলের

এবার ওয়াকি-টকি, ল্যান্ডলাইন ফোন বিস্ফোরণ লেবাননে, বাড়ছে মৃতের সংখ্যা, দায় স্বীকার ইজরায়েলের

বেইরুট: পেজার বিস্ফোরণের পর এবার ওয়াকিটকি বিস্ফোরণ লেবাননে। এতে এখনও পর্যন্ত ২০ জন মারা গিয়েছেন। আহতের সংখ্যা ৪৫০-র বেশি। লেবাননের বিভিন্ন জায়গায়, হেজবোল্লাকে নিশানা করে এই হামলা চালানো হয়েছে। ঠিক কতগুলি ওয়াকিটকি বিস্ফোরণ ঘটেছে এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট নয়। তবে একসঙ্গে শতাধিক ওয়াকি-টকি বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে খবর। ল্যান্ডলাইন ফোন বিস্ফোরণের খবরও মিলছে। হামলার দায় স্বীকার করেছে ইজরায়েল। (Walkie Talkie Explosions in Lebanon)

এর আগে, বুধবারই একসঙ্গে ৩০০০ পেজার বিস্ফোরণ ঘটে লেবাননে। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার ওয়াকি-টকি বিস্ফোরণ। শুধু ওয়াকি-টকি নয়, ল্যান্ডলাইন টেলিফোনেও বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে একাধিক জায়গা থেকে খবর উঠে আসছে। বিশেষ করে পূর্ব লেবাননের বিভিন্ন জায়গায় থেকে ল্যান্ডফোন বিস্ফোরণের খবর মিলেছে। বিস্ফোরণের জেরে আগুন জ্বলতে দেখা গিয়েছে বহুতলে। (Hezbollah News)

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, মাস পাঁচেক আগে ওয়্যারলেস রেডিও ডিভাইস, অর্থাৎ ওয়াকি-টকিগুলি কেনা হয়। ওই একই সময়ে ৫০০০ পেজার কেনা হয়, যেগুলিতে বিস্ফোরণ ঘটেছে একদিন আগেই। এবার শতাধিক ওয়াকি-টকি বিস্ফোরণ ঘটল একই সঙ্গে। মূলত দক্ষিণ লেবানন, বেইরুটের শহরতলি এলাকায় বিস্ফোরণগুলি ঘটে। গতকাল পেজার বিস্ফোরণে নিহত হেজবোল্লার এক সদস্যের শেষকৃত্য চলছিল, সেখানেও বিস্ফোরণ ঘটে আজ। ওই মুহূর্তের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে।

যে ওয়াকি-টকিগুলিতে বিস্ফোরণ ঘটেছে, সেগুলি জাপানের সংস্থা ICOM-এর তৈরি IC-V82 মডেল। লেবানন সরকার জানিয়েছে, ওই মডেলের ওয়াকি-টকি তৈরি অনেক আগেই বন্ধ করে দিয়েছে ICOM। নথিভুক্ত কোনও সংস্থার এজেন্টের মাধ্যমে সেগুলি সরবরাহ হয়নি এবং দেশের নিরাপত্তা সংস্থা সেগুলি পরীক্ষা করে দেখেওনি। সংস্থার ওয়েবসাইটে লেখা রয়েছে, ওই মডেল তৈরি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। যদি কিছু কিনতে পাওয়া যায়, সেগুলি নকল। যদিও ঘটনাস্থল থেকে ক্ষতিগ্রস্ত যে ওয়াকি-টকিগুলি উদ্ধার হয়েছে, তাতে IC-V82 মডেল নম্বর লেখা রয়েছে।

এর আগে, গতকাল পেজার বিস্ফোরণে অনেকে মারা যান। এখনও মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন শতাধিক মানুষ। ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, জনবহুল এলাকায় যেমন বিস্ফোরণ ঘটে গতকাল, আজও তার পুনরাবৃত্তি হয়েছে। ফলে নিরীহ মানুষকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো নিয়ে তীব্র নিন্দা শুরু হয়েছে। সরাসরি দায় স্বীকার না করলেও, এই হামলার নেপথ্যে ইজরায়েল যোগ নিয়ে নানা তত্ত্ব সামনে আসছে। প্রশ্ন উঠছে আমেরিকার ভূমিকা নিয়েও।

আমেরিকার সংবাদমাধ্যম CNN জানিয়েছে, বুধবারের হামলার কথা স্বীকার করে নিয়েছে ইজরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী IDF. দক্ষিণ লেবাননে হেজবোল্লাকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে বলে মেনে নিয়েছে তারা। হালতা, ফরকেলা, ওডেইসে, চামায় হেজবোল্লার শিবির, ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ কেন্দ্রে হামলা চালানো হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। যদিও সাধারণ মানুষ এই হামলায় মারা গিয়েছেন এবং আহত হয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে।

হেজবোল্লা জানিয়েছে, হামলার জবাবে ইরায়েলি সেনার একাধিক শিবিরে হামলা চালিয়েছে তারা। বুধবার রকেট ছোড়া হয়েছে একাধিক বার। প্যালেস্তাইন এবং গাজার সমর্থনে হেজবোল্লা এগিয়ে গিয়েছে বলেই ইজরায়েল হামলা চালাচ্ছে, দাবি হেজবোল্লার। বুধবার তাদের ১১ জন সদস্যের মৃত্যুর কথা জানিয়েছে হেজবোল্লা। দেশের দক্ষিণ সীমান্তে ইজরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষও চলছে তাদের। লেবানন সীমান্ত এলাকা থেকে নিজেদের নাগরিকদের সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে ইজরায়েলি সেনা।

(Feed Source: abplive.com)