#কলকাতা: ডিমের মতো সস্তায় পুষ্টিকর খাবার আর দুটি নেই। ভিটামিন ডি, ভিটামিন বি, জিঙ্ক এবং ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ ডিম শরীরের পুষ্টি তো যোগায়ই, সঙ্গে এতে থাকা সালফার এবং অ্যামিনো অ্যাসিড চুল এবং ত্বকও সুস্থ রাখে।
ডিমের স্বাদও অনন্য। ফলে বাচ্চা থেকে বুড়ো সবার প্রিয়। তবে গরমকালে অনেকে ডিম খেতে বারণ করেন। বিশেষ করে ডিমের কুসুম। তাঁরা বলেন, ডিম খেলে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। তা ছাড়া অম্বল, বদহজমের সমস্যাও দেখা যায়। আবার অনেকে বলেন, গরমকালে ডিম খেলে না কি হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তবে এসব কি আদৌ সত্যি? না কি ডিম নিয়ে বহু ভুল ধারণার মতো এগুলোও গুজব?
বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন: গবেষক এবং ডায়েটেশিয়ানরা স্পষ্ট করে দিয়েছেন, এসব নেহাতই গুজব। গরমকালে ডিম খাওয়া সম্পূর্ণ নিরাপদ তবে পরিমিত পরিমাণে। ডিম খেলে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়, এটা সত্যি। তবে পরিমিত খেলে এর মতো স্বাস্থ্যকর খাবার আর দুটি নেই, এটাও প্রমাণিত। ডিম মানবদেহকে সুপারফুডের সমস্ত সুবিধা দেয়। একটি সমীক্ষা অনুসারে, প্রখর গ্রীষ্মের মধ্যেও ডিম খেলে প্রাক-ডায়াবেটিস বা টাইপ ২ ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি কমায়।
গরমে ডিমের কুসুম খাওয়া কি নিরাপদ: গরমে ডিমের কুসুম খাওয়া আদৌ নিরাপদ তো? এই নিয়ে অনেক স্বাস্থ্য সচেতন মানুষই বিভ্রান্তিতে ভোগেন। ডিমের প্রায় ৯০ শতাংশ ক্যালসিয়াম এবং আয়রন থাকে কুসুমে। আর সাদা অংশে থাকে প্রোটিন। ফিটনেস সচেতন মানুষরা মনে করেন, ডিমের কুসুমের থেকে সাদা অংশ খাওয়াই বেশি স্বাস্থ্যকর, বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলেন, কুসুম খাওয়াও সমান নিরাপদ। ডিমের কুসুম চর্বি এবং গুড কোলেস্টেরল সমৃদ্ধ। শুধু তাই নয়, কুসুমে ফ্যাট দ্রবণীয় ভিটামিন, খনিজ এবং শরীরের প্রয়োজনীয় অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান থাকে।
কিছু স্বাস্থ্য উৎসাহী আবার যুক্তি দেন, ডিমের কুসুম ডায়েটরি কোলেস্টেরলের সমৃদ্ধ উৎস, তাই এটা হার্টের জন্য খারাপ। কিন্তু এটা মাথায় রাখতে হবে, ডায়েটরি কোলেস্টেরল মানে রক্তে উচ্চ কোলেস্টেরলের মাত্রা বোঝায় না। কুসুমে ডিমের বেশিরভাগ ভাল উপাদান যেমন আয়রন, ফোলেট এবং ভিটামিন থাকে। এতে লুটেইন এবং জেক্সানথিনও রয়েছে- যা চোখ এবং মস্তিষ্কের জন্য ভাল।
পরিশেষে: গ্রীষ্মকালে ডিমের কুসুম খাওয়া অস্বাস্থ্যকর, এমন কোনও বৈজ্ঞানিক প্রমাণ আজ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তাছাড়া বিশেষজ্ঞরা স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণের পরামর্শ দেন, নির্দিষ্ট খাদ্য বা পুষ্টির কথা বলেন না। তবে কোলেস্টেরলে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ডিমের কুসুম খেতে নিষেধ করা হয়। তাই সবসময় স্বাস্থ্যকর সংযম মেনে চলা উচিত।