বেইরুট: পেজার বিস্ফোরণ, ওয়াকি-টকি বিস্ফোরণের পর এবার সরাসরি রকেট বর্ষণ। প্যালেস্তাইনের পর এবার লেবাননে হামলা ইজরায়েলের। সোমবার এই হামলায় ৪৯২ জন মারা গিয়েছেন বলে খবর। নিহতদের মধ্যে রয়েছে ৩৫ শিশুও। লেবাননের স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, সবমিলিে ১৬৪৫ জন আহত হয়েছেন। এমন পরিস্থিতিত অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। লেবাননের উপর এই হামলার ফলে পশ্চিম এশিয়ার সামগ্রিক পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা তুরস্কের। (Israel-Lebanon War)
গত বছর ৭ অক্টোবর থেকে ইজরায়েল এবং প্যালেস্তাইনের হামাসের মধ্যে যুদ্ধ চলছে। গাজা, ওয়েস্টব্যাঙ্ক মিলিয়ে হাজার হাজার মানুষ মারা গিয়েছেন। নিহতদের মধ্যে একটি বড় অংশ আবার শিশু। গোড়া থেকে এই যুদ্ধে প্যালেস্তাইন এবং হামাসকে সমর্থন করে আসছে লেবানন। সেই আবহেই লেবাননে একের পর এক হামলা চালানো শুরু করল ইজরায়েল। গত ২৪ ঘণ্টায় লেবাননের দক্ষিণ এবং পূর্ব অংশে, দেশের সশস্ত্র সংগঠন হেজবোল্লার ১১০০ ঠিকানায় হামলা চালানো হয় বলে জানিয়েছে তারা। বেইরুটে রকেট হামলা চালানো হয়েছে। (Israel-Lebanon Conflict)
হেজবোল্লার তরফে জানানো হয়েছে, আলি করাকে এলাকায় সংগঠনের থার্ড কমান্ডকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। পাল্টা হেজবোল্লরা তরফেও ইজরায়েলের পাঁচটি জায়গায় রকেট বর্ষণ করা হয় বলে খবর। লেবানন থেকে রকেট উড়ে আসতে দেখেই সাইরেন বেজে ওঠে উপকূলবর্তী হাইফাতে। একদিন আগেও সেখানে হামলা হয়।
Over 100 killed—mostly women, children, and medics—and 400 wounded in today’s Israeli bombings of South Lebanon.
This is a massacre of civilians. pic.twitter.com/c81RTMHBnN
— sarah (@sahouraxo) September 23, 2024
এমন পরিস্থিতিতে ইজরায়েল এবং লেবানন, দু’পক্ষকেই যুদ্ধবিরতির আবেদন জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মহল। যদিও ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, দেশের জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থেই এমন পদক্ষেপ করছে তারা। ওই অঞ্চলে নিরাপত্তাজনিত ভারসাম্য গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি। অন্য দিকে, হেজবোল্লার উপপ্রধান নইম কাসেম জানিয়েছেন, ইজরায়েলের সঙ্গে সম্মুখ সমরে ঝাঁপিয়ে পড়তে প্রস্তুত তাঁরা।
এর আগে, পর পর লেবাননে পেজার, ওয়াকি-টকি হামলা ঘটে। সেই ঘটনাতেও ইজরায়েলের নাম জড়ায়। শুক্রবার আবার বেইরুটের দক্ষিণে রকেট বর্ষণ করা হয়। সেই হামলায় ৩৯ জন মারা যান। আহত হন প্রায় ৩০০০ মানুষ। ইজরায়েল এবং লেবানন সীমান্ত এলাকা ইতিমধ্যেই প্রায় খালি হয়ে গিয়েছে। ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। কহাঁতক এভাবে বাঁচা যায়, প্রশ্ন তুলেছেন দুই দেশেরই সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারীরা।
যদিও ইজরায়েলের দাবি, দেশের নিরাপত্তার জন্য হেজবোল্লার উপস্থিতি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। সীমান্ত এলাকা থেকে ঠেলে দূরে সরিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা চলছে। তাদের সমস্ত নির্মাণ, শিবির গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মহলের ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছেন লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি। রাষ্ট্রপুঞ্জের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন তিনি। ইজরায়েল লেবাননকে শ্মশানে পরিণত করতে চাইছে বলে অভিযোগ তাঁর।
পশ্চিম এশিয়ায় ইজরায়েলের বন্ধু দেশের ভূমিকা পালন করছে আমেরিকা। এখনও ইজরায়েলকে অস্ত্রশস্ত্রের জোগান দিয়ে আসছে তারা।
পেন্টাগনের মুখপাত্র মেজর জেনারেল প্যাট রাইডার ডানিয়েছেন, অতিরিক্ত বাহিনী পাঠানো হচ্ছে ওই অঞ্চলে। এর আগেও যুদ্ধজাহাজ, যুদ্ধবিমান এবং আকাশ প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি পাঠানো হয়েছিল ইজরায়েলকে। এই মুহূর্তে নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভার বার্ষিক অধিবেশনের প্রস্তুতি চলছে। তার আগে রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুটারেস সতর্কবার্তা দিয়েছেন। তাঁর মতে, লেবানন আর একটি গাজায় পরিণত হতে চলেছে। কোনও পক্ষই যে যুদ্ধবিরতিতে আগ্রহী নয়, তাও জানান তিনি। সদ্য ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া মাসুদ পেজেশকিয়ানের অভিযোগ, আসলে বৃহত্তর সংঘাতই লক্ষ্য ইজরায়েলের।
(Feed Source: abplive.com)