একজন ১৯ বছর বয়সী বক্সারের মর্মান্তিক পরিণতির সাক্ষী থাকল সুরাট। করণ পিপালিয়া নামে এক বক্সার রাজ্যস্তরের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। সেখানেই ম্যাচ চলাকালীন আহত হয়ে ব্রেন ডেথের শিকার হলেন। শনিবার মেহসানায় গুজরাট রাজ্য বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপের আয়োজন করা হয়েছিল। মূলত সিনিয়র পুরুষ ও মহিলার বিভাগের প্রতিযোগিতা ছিল এটি। পিপালিয়া সেখানেই ৬৩.৫ কেজি বিভাগে অংশ নিয়েছিলেন। তাঁর প্রতিপক্ষ ছিলেন হর্ষবর্ধন রাঠোর। এই লড়াইটি আয়োজিত হয়েছিল সর্দার প্যাটেল স্পোর্টস কমপ্লেক্সে। বক্সার নির্বাচক দুষ্মন্ত প্যাটেল জানান, ‘যখন খেলা দ্বিতীয় রাউন্ডে পৌঁছয় তখন পিপালিয়া রাঠোরের কাছে পিছিয়ে ছিলেন। পরাজিত হওয়ার দিকে এগোচ্ছিলেন’।
তিনি জানান, ‘তৃতীয় রাউন্ডে রেফারি লড়াই থামাতে বাধ্য হন। সেই সময় পিপালিয়া শারীরিক ভাবে আর লড়াই চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার মতো অবস্থায় ছিলেন না। এরপরই লুটিয়ে পড়েন তিনি। দ্রুত তাঁকে মেডিক্যাল ট্রিটমেন্ট দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়’। প্যাটেল আরও বলেন, ‘যদি তিনি শারীরিক ভাবে অসুস্থতা বোধই করছিলেন তাহলে লড়াই থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করতে পারতেন’। পিপালিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে এরপর। তাঁকে ভর্তি করানো হয় স্থানীয় এক হাসপাতালে। সেখানে রবিবার অবস্থার আরও অবনতি হলে মাথায় অস্ত্রোপচার করা হয়। প্রাথমিকভাবে মনে করা হয় তাঁর ব্রেন হ্যামারেজ হয়েছে কোনওভাবে। পরবর্তীতে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য স্থানান্তর করা হয় সুরাটের SIMS হাসপাতালে।
এরপর SIMS হাসপাতালের চিকিৎসকদের তরফে জানানো হয়, ‘তাঁকে ব্রেন ডেথ অবস্থায় নিয়ে আসা হয়েছিল। বর্তমানে করণকে লাইফ সাপোর্ট সিস্টেমে রাখা রয়েছে। যদিও তাঁর পরিবার এখনও তাঁকে ফিরে পাওয়ার আশা ছাড়ছেন না’। অন্যদিকে করণের বাবা ভরত পিপালিয়া এই ঘটনার জন্য টুর্নামেন্টকে দায়ী করেছেন, তাঁর মতে সেখানে যথাযথ চিকিৎসা ব্যবস্থা ছিল না। তিনি বলেন, ‘যেখানে ১৫০ জনের উপর প্রতিযোগী অংশ নিয়েছেন সেখানে পর্যাপ্ত চিকিৎসা ব্যবস্থা নেই। একটি মাত্র অ্যাম্বুল্যান্স ছিল সেখানে। আমি আমার ছেলেকে একটি বেসরকারি গাড়িতে করে হাসপাতালে নিয়ে আসি। যদি অ্যাম্বুল্যান্স থাকত তাহলে হয়তো সঠিক চিকিৎসা পেয়ে আমার ছেলেটার এই অবস্থা হত না। আমি কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করব তাঁরা যাতে আগামী দিনে আরও বেশি অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করে। আমার ছেলে তো চলে গেছে, কিন্তু অন্য আর কারোর সঙ্গে যেন এমনটা না ঘটে’। যদিও রাজ্য বক্সিং অ্যাসোসিয়েশনের তরফে ব্রেন ডেথের জন্য তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। সংস্থার ওয়ার্কিং প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘লড়াইয়ের সময় কোনও আঘাত লেগে তাঁর এমন পরিণতি হয়নি। তাঁর শ্বাসকষ্ট হয়েছিল বিরতিতে, তখন সেই অনুযায়ী তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে লুটিয়ে পড়েন। সিটি স্ক্যান রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে আগে থেকেই তাঁর মাথায় রক্ত জমাট বেঁধে ছিল। সেই কারণেই হ্যামারেজ হয় এবং বর্তমানে ব্রেন ডেথ হয়েছে’।
(Feed Source: hindustantimes.com)