এই রাজ্যের ৫,৫০০ সরকারি স্কুলে প্রথম শ্রেণিতে কোনও শিশুই ভর্তি হয়নি

এই রাজ্যের ৫,৫০০ সরকারি স্কুলে প্রথম শ্রেণিতে কোনও শিশুই ভর্তি হয়নি

 

সরকারি স্কুলে এখন ব্যাপক ছাত্র সংকট। সন্তানদের শিক্ষিত করে তোলার জন্য, বেসরকারি স্কুলের প্রতি বেশি আস্থা রয়েছে বাবা মায়েদের। এ কারণে মধ্যপ্রদেশের হাজার হাজার স্কুলে একজনও পড়ুয়া নেই। জনশূন্য ক্লাস।

সরকারের সর্বশিক্ষা অভিযানের স্লোগান বলে – প্রত্যেকের পড়া উচিত, প্রত্যেকের বড় হওয়া উচিত। মধ্যপ্রদেশের শিশুরাও তাই পড়াশোনা করছে ঠিকই, কিন্তু সরকারি স্কুলে নয়। পরিসংখ্যানে যে চিত্র তুলে ধরা হয়েছে তা খুবই হতাশাজনক।

ভোপালের কাছে বেরাসিয়ার বাসিন্দা মঙ্গল তাওদে তাঁর মেয়েকে একটি সরকারি স্কুলে ভর্তি করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পাশের একটি সরকারি স্কুলে গিয়ে দেখেন, জরাজীর্ণ বিল্ডিংয়ের ছাদ থেকে বৃষ্টির জল পড়ছে। এ ছাড়া শিক্ষকের সংখ্যাও কম। এমন পরিস্থিতিতে মঙ্গল মেয়েকে একটি বেসরকারি স্কুলে ভর্তি করান। আসলে, মঙ্গলই একমাত্র অভিভাবক নন যিনি তাঁর সন্তানদের বেসরকারি স্কুলে ভর্তি করছেন। স্কুল শিক্ষা দফতরের রিপোর্ট এখন বাস্তবতা বলে দিচ্ছে।

মধ্যপ্রদেশের রাজ্য শিক্ষা কেন্দ্রের রিপোর্ট অনুসারে, রাজ্যের ৫,৫০০-এরও বেশি সরকারি স্কুলে এই বছর কোনও শিশুই প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হয়নি। মধ্যপ্রদেশে মোট ৯৪,০৩৯টি সরকারি স্কুল রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ২৩,০০০ স্কুলে মাত্র ৩ থেকে ৫ জন শিশু ভর্তি হয়েছে। আর সহজ হিসাব আরও দেখায়, ২৫,০০০ বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণীতে মাত্র এক-দুজন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে। আর ১১,৩৪৫টি স্কুলে পড়ছে ১০ জনেরও কম শিক্ষার্থী।

এই জেলাগুলির সরকারি স্কুলে পড়ুয়াদের সংখ্যা সবচেয়ে কম

প্রতিবেদন অনুসারে, বেতুল, বিদিশা, মন্দসৌর, দেওয়াস, সাগর, রাইসেন, নরসিংহপুর, সাতনা, সিওনি এবং খারগোনের মতো জেলাগুলির সরকারি স্কুলে পড়ুয়াদের সংখ্যা সবচেয়ে কম বলে রিপোর্ট করা হয়েছে।

দুর্বল পরিকাঠামোই চাপ বাড়াচ্ছে সরকারি স্কুলের

এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকারি স্কুলে শিক্ষার্থীদের ভর্তি না করার একটি কারণ হল দুর্বল পরিকাঠামো। এ কারণে অভিভাবকরা সরকারি বিদ্যালয়ের প্রতি বিশ্বাস হারাচ্ছেন।সরকারী নথিই দেখায় যে রাজ্যের ৭১৮৯ টি স্কুল মেরামতের প্রয়োজন। সরকার এ জন্য বাজেটও দিয়েছে কিন্তু কাজ এগোয়নি।

শিক্ষকেরও বড় অভাব

৪৬টি জেলার ১২৭৫টি বিদ্যালয়ে একজন শিক্ষকও নেই।

৪৭টি জেলার ৬৮৩৮টি বিদ্যালযয়ে একজন শিক্ষকই পড়ান।

  • মধ্যপ্রদেশে মোট ৯৪০৩৯টি সরকারি স্কুলে আনুমানিক ১ লক্ষ ৭০ হাজার অতিথি শিক্ষক রয়েছেন।

প্রসঙ্গত, রাজ্য শিক্ষক সমিতির সভাপতি উপেন্দ্র কৌশলের মতে, শিক্ষকদের প্রায়শই শিক্ষাগত কাজের বাইরের কাজও করতে হচ্ছে। এতে স্কুলের পড়াশোনায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। সামগ্রিকভাবে, অভিভাবকরা এখন মিড-ডে মিল কিংবা বিনামূল্যে ইউনিফর্মের মতো অফারগুলির পরিবর্তে জল, টয়লেট, জরাজীর্ণ বিল্ডিং এবং শিক্ষকদের উপস্থিতিতেই বেশি খুশি হন।

(Feed Source: hindustantimes.com)