‘অভিষেক লেভেলের ব্যাপার ছিল না, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যাপার ছিল’, RG Kar নিয়ে মন্তব্য মদনের

‘অভিষেক লেভেলের ব্যাপার ছিল না, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যাপার ছিল’, RG Kar নিয়ে মন্তব্য মদনের

কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা : অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেভেলের নয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যাপার, মুখ্যমন্ত্রীর ব্যাপার। আর জি কর-কাণ্ডে পরিস্থিতি সামলানো নিয়ে এবার ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য শোনা গেল মদন মিত্রের গলায়। যদিও এই মন্তব্যকে অবাঞ্চিত বলেছেন কুণাল ঘোষ। অন্যদিকে, দলের অন্দরেই ‘বিভীষণ’ রয়েছে বলেও চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানাচ্ছেন না কেন, পাল্টা প্রশ্ন করেছেন কুণাল ঘোষ।

আরজি কর মেডিক্য়াল কলেজে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের প্রতিবাদে যখন উত্তাল রাজ্য়, কোণঠাসা সরকার… তখন এই ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করলেন তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র। কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক বলেন, ‘অভিষেক বোধহয় অসুস্থ ছিল শুনেছি। অপারেশন করাতে গেছে। অসুস্থ অবস্থায় তো এগুলো পারে না। তাছাড়া যে লেভেলে ব্যাপারটা ছিল, সেটা অভিষেক লেভেলের ব্যাপার ছিল না। সেটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যাপার ছিল। মুখ্যমন্ত্রীর ব্যাপার ছিল। ওখানে তো যুব কংগ্রেসের সমাবেশ করে কিছু করা যেত না। ওখানে যদি ডাক্তারদের পাল্টা একটা যুব কংগ্রেসের সমাবেশ হত সেটা কখনই ভাল হত না, ভুল হত।’

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূলের নম্বর টু। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরেই তিনি। আর তাঁকে নিয়ে মদন মিত্রের এই মন্তব্য়কে ভাল চোখে দেখছেন না কুণাল ঘোষ। তৃণমূলের প্রাক্তন রাজ্য সাধারণ সম্পাদক বলছেন, ‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথমেই ট্যুইট করে তাঁর বক্তব্য জানিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে তাঁর চোখের অপারেশনের জন্য বিদেশ যেতে হয়েছে। সমস্তটা নজর রেখেছেন। এই কথাগুলো এই মুহূর্তে সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক। আমরা সবাই যাঁরা তৃণমূল কংগ্রেস করি, তাঁদের কাছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই শেষ কথা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেনাপতিত্বে তৃণমূল একটা পরিবার। নবীন-প্রবীণ প্রায় ৫টা প্রজন্ম একসঙ্গে লড়ছে।’

তৃণমূলের বহু উত্থান-পতনের সাক্ষী তিনি। আর এহেন মদন মিত্রই দলের একাংশ সম্পর্কে এখন বিস্ফোরক। তিনি বলছেন,  ‘একটা কথা মনে রাখবে বিভীষণ না থাকলে কিন্তু রাম রাবণকে মারতে পারতেন না। বিভীষণরা চিরকালই ছিলেন এবং খুব ভাল পজিশনে ছিলেন। রাবণের ভাই।’ তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, বিভীষণ কোথায় আছে? এর উত্তর মদন বলেন, ‘খুঁজলেই পাওয়া যাবে। চালের কাঁকর পাওয়া যায়। অত চালের মধ্যে থেকে কাঁকর বেছে দেয় মেয়েরা। কিন্তু আর একটা বিভীষণ লম্বা চওড়া, পরিষ্কার একটা মানুষের মতো, বিভীষণ খুঁজে পাওয়া যাবে না। আচরণ লক্ষ্য করলেই বিভীষণ পাবেন।’

দলেই ষড়যন্ত্রকারী ? বিস্ফোরক মদন মিত্র। তিনি বললেন, ‘সিরাজের সময় যেমন জগৎ শেঠ, উমিচাঁদ ছিল তেমন আজও তাঁরা সক্রিয় তৃণমূলের ভিতরে সিপিএমের ভিতরে, বিজেপির ভিতরে সবকিছুর ভিতরে। একটা সংসারের ভিতরে একটা গ্রুপ থাকেই বিশ্বাসঘাতকতা করাই যাদের কাজ এবং সবসময়ই চেষ্টা করে কী করে পার্টিটাকে ক্ষতি করা যায়। এটা তাঁরা বোঝে না পার্টিটার ক্ষতি হচ্ছে।’ এরপরই এবিপি আনন্দর প্রতিনিধির তরফে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিচ্ছেন না কেন ? উত্তরে তৃণমূল বিধায়ক বলেন, ‘শনাক্তকরণ কমিটি করে তাতে যদি আমাকে মেম্বার কর হয় আমি আমার মতামত দেব। অবশ্যই দেব। আমি লিখিতভাবে বলে দেব। কোথায় কোথায় ফুটো গুলো সিলিং লাগাতে হবে।’

এনিয়ে কুণাল ঘোষের বক্তব্য, ‘উনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে লিখিতভাবে জানিয়ে দিন। কোথায় কোথায় ছিদ্র আছে! কোন কোন পদ্ধতিতে উনি সেলোটেপ দেবেন! নাকি অন্য কোন পদ্ধতি আছে, সিমেন্ট টিমেন্ট দেবেন, জানিয়ে দিন।’

আর জি কর-কাণ্ডের আবহে মুখ খুলে ফের নতুন বিতর্কের জন্ম দিলেন কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক।

(Feed Source: abplive.com)