বুধেও ওয়াকফ-বৈঠক বয়কট বিরোধীদের, তারপরই JPC-র মেয়াদ বৃদ্ধির দাবি বিজেপি সাংসদের!

বুধেও ওয়াকফ-বৈঠক বয়কট বিরোধীদের, তারপরই JPC-র মেয়াদ বৃদ্ধির দাবি বিজেপি সাংসদের!

ওয়াকফ সংশোধনী বিলের প্রস্তাবগুলি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য নির্ধারিত সময়সীমা আরও বাড়ানোর আবেদন করলেন বিজেপি সাংসদ তথা সংশ্লিষ্ট যৌথ সংসদীয় কমিটির সদস্য অপরাজিতা সারাঙ্গি। বুধবার বিকেলে তিনি লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লার কাছে এই আবেদন জানান।

তাঁর আর্জি, ওয়াকফ সংশোধনী বিল সংক্রান্ত জেপিসি-র মেয়াদ আগামী বছরের জুলাই মাস, অর্থাৎ সংসদের পরবর্তী বাজেট অধিবেশনের শেষ দিন পর্যন্ত বর্ধিত করা হোক।

উল্লেখ্য, ওয়াকফ সংশোধনী বিলের বেশ কিছু প্রস্তাব নিয়ে বিরোধীদের আপত্তি রয়েছে। সেই কারণেই সেগুলি খতিয়ে দেখতে যৌথ সংসদীয় কমিটি বা জেপিসি গঠন করা হয়।

এর আগে, মঙ্গলবারই বিরোধী শিবিরের সাংসদরা ওম বিড়লার কাছে একই আবেদন রেখেছিলেন। তাঁদের বক্তব্য ছিল, ‘যুক্তিযুক্ত’ কারণেই জেপিসি-র সময়সীমা বাড়ানোর আবেদন জানানো হয়েছে।

এনডিটিভি-তে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, অপরাজিতা সারাঙ্গির দলীয় সহকর্মী তথা বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবেও বিরোধী সাংসদদের আবেদনে সহমত পোষণ করেছেন।

উল্লেখ্য, এর আগে ওয়াকফ সংশোধনী বিলের জন্য গঠিত জেপিসি-র চেয়ারম্যান জগম্বিকা পালের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ।

তাঁদের অভিযোগ ছিল, নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে, অর্থাৎ ২৯ নভেম্বরের মধ্যে জেপিসি-র কার্যাবলী শেষ করতে জোর করছেন জগদম্বিকা। তাই, বুধবার বিজেপি সাংসদ সারাঙ্গির তরফে জেপিসি-র মেয়াদ বৃদ্ধি সংক্রান্ত আবেদন যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

এই প্রেক্ষাপটে বুধবারও ওয়াকফ সংশোধনী বিল সংক্রান্ত জেপিসি-র বৈঠক থেকে রেগে বেরিয়ে আসেন বিরোধীরা। তাঁরা বলেন, বৈঠকে কার্যাবলী চালানোর নামে ছেলেখেলা হচ্ছে!

বিরোধী সাংসদরা বৈঠকের মাঝপথে বেরিয়ে এসে জানান, জগদম্বিকা পাল ২৯ নভেম্বরের মধ্য়েই কমিটির রিপোর্ট পেশ করতে চলেছেন। সেই কারণেই তাঁরা বৈঠক বয়কট করেছেন।

ঠিক এই ঘটনার পরই বিজেপি সাংসদ অপরাজিতা সারাঙ্গি জেপিসি-র মেয়াদ বাড়ানোর দাবি নিয়ে লোকসভার অধ্যক্ষের দ্বারস্থ হন বলে দাবি সূত্রের।

প্রসঙ্গত, ওয়াকফ সংশোধনী বিল নিয়ে গঠিত জেপিসি-র বৈঠকে এখনও পর্যন্ত অনেক ঘটনা ঘটেছে। একাধিকবার নানা কারণে বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছেন বিরোধী সাংসদরা। কখনও আবার পুনরায় সেই বৈঠকে যোগও দিয়েছেন তাঁরা।

বৈঠক চলাকালীন সরকার ও বিরোধী পক্ষের মধ্যে বাদানুবাদ থেকে শুরু করে ঝগড়া পর্যন্ত হয়েছে। এমনকী, কথা কাটাকাটির জেরেই জেপিসি-র বৈঠক চলাকালীন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপি সাংসদ জগদম্বিকা পালের দিকে কাচের বোতল ছোড়েন বলে অভিযোগ! তার জেরেই নাকি তাঁর আঙুল কেটে যায়!

তারপরও জগদম্বিকার ভূমিকা নিয়ে বিরোধীদের সমালোচনা থামেনি। এমনকী, জেপিসি-তে যেভাবে ‘পঞ্চসখা বাণী প্রচার’ নামে ওডিশার একটি সংগঠনের প্রতিনিধিদের ডেকে তাঁদের শুনানির আওতায় আনা হয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা।

বিরোধীদের বক্তব্য, ওডিশার ওই সংগঠনের সঙ্গে ওয়াকফ আইন বা সংশ্লিষ্ট সংশোধনী বিলের কোনও সম্পর্কই নেই। তাহলে তাদের কেন এই শুনানির অন্তর্ভুক্ত করা হল?

এই প্রেক্ষাপটে বিরোধী সাংসদরা ওম বিড়লাকে চিঠি লিখে জানান, তাঁরা ওয়াকফ সংশোধনী বিল সংক্রান্ত জেপিসি থেকে নিজেদের সরিয়ে নেবেন। কারণ, জগদম্বিকা পাল নিজের খেয়াল-খুশি মতো যা ইচ্ছা, তাই করছেন। একতরফা সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন এবং বিরোধীদের প্রতিবাদ ধামাচাপা দিয়ে যেকোনও মূল্যে সংশোধনী বিল পাস করাতে চাইছেন।

(Feed Source: hindustantimes.com)