East Bengal: ভুরি ভূরি গোল নষ্ট! তবুও দিমির সৌজন্যে তিন পয়েন্ট, টেবলে উঠল লাল-হলুদ

East Bengal: ভুরি ভূরি গোল নষ্ট! তবুও দিমির সৌজন্যে তিন পয়েন্ট, টেবলে উঠল লাল-হলুদ

জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: আইএসএলে জামশেদপুরের বিরুদ্ধে ইস্টবেঙ্গলের প্রথম পর্বের দ্বৈরথের সঙ্গে যদি শনি সন্ধ্যায় দ্বৈরথ পাশাপাশি রাখা হয়, তাহলে টাইমলাইনে দু’টি ফারাক চোখে পড়বে|

কার্লেস কুয়াদ্রাত লাল -হলুদের হেডমাস্টারি ছেড়ে দেওয়ায় অন্তর্বর্তী কোচ হিসেবে ডাগআউটে ছিলেন বিনো জর্জ| ছন্নছাড়া ইস্টবেঙ্গল ০-২ হেরেছিল তখন| আর সেই তখন আর এখনের অনেক ফারাক| চোট-আঘাতে জর্জরিত হলেও অস্কার ব্রুজোর টিমের অসাধারণ আত্মবিশ্বাস! আর সেটাই কথা বলল, ইস্টবেঙ্গল এদিন জিতল ১-০ ব্যবধানে|

লাল-হলুদের দল গোছানোটাই এখন চাপের, তবুও দিমিত্রিয়স দিয়ামানতাকোসের ফিট হয়ে যাওয়া এবং জিকসন সিংয়ের নির্বাসনমুক্তি ছিল দলের কাছে অক্সিজেনের মতো| এদিন গোলে প্রভসুখন গিল, রক্ষণে আনোয়ার আলি, লাল চুংনুঙ্গা, মহম্মদ রাকিপ, হিজাজি মাহের ও হেক্টর ইউস্তে, মাঝমাঠে নন্দ কুমার, সৌভিক চক্রবর্তী ও পিভি বিষ্ণু, ফরোয়ার্ডে দিমিত্রিয়স দিয়ামানতাকোস ও ক্লেটন সিলভাকে নিয়ে প্রথম একাদশ সাজিয়ে খালিদ জামিলের বিরুদ্ধে নেমেছিলেন অস্কার ব্রুজো|

শুরু থেকেই অল আউট ঝাঁপানোর মন্ত্রে দীক্ষিত ছিল মশালবাহিনী| ম্যাচের চার মিনিটেই দুরন্ত গোলের সুযোগ চলে এসেছিল ইস্টবেঙ্গলের| জামশেদপুরের দুই সেন্টার ব্যাকের মধ্যে দিয়ে, দিমিত্রিয়স দিয়ামানতাকোসের থ্রু বল চলে গিয়েছিল, বাঁ-দিক দিয়ে ওঠা পিভি বিষ্ণুর কাছে| তিনি লো ক্রস বাড়াতে গিয়েছিলেন ক্লেটন সিলভাকে, কিন্তু ক্রসে তেমন জোর না থাকায় জামশেদপুর গোলরক্ষক আলবিনো গোমেজ নীচু হয়ে ধরে ফেলেন| এরপরের তিন মিনিটের মধ্যেও জামশেদপুরের বক্সে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করে দিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল| প্রথমবার দিয়ামানতাকোস ও পরেরবার আনোয়ার, তাঁর শট যে বারে লেগে ফিরবে, এমনটা দুর্ঘটনা ছাড়া আর কী বলা চলে! ম্যাচের ১৬ মিনিটে ফের চোটের ধাক্কা, রাকিপ বেরিয়ে যান, আসেন নির্বাসনমুক্ত জিকসন সিং|  ৩৭ মিনিটে লাল-হলুদের কাছে চলে এসেছিল সুবর্ণ সুযোগ| আনোয়ারের মাপা এরিয়াল বলে ক্লেটনকে খুঁজে নিয়েছিলেন| ক্লেটন অসাধারণ নিয়ন্ত্রণে দুর্দান্ত থ্রু বল বাড়ান নন্দকে| তাঁর শুধু কাজ ছিল ছুটে গিয়ে, একা গোলকিপারকে পরাস্ত করে গোল করা! কিন্তু নন্দ সোজা মেরে দেন আলবিনোর হাতে| দেখতে গেলে প্রথমার্ধে ইস্টবেঙ্গলের নিশ্চিত তিন গোল হয়ে যেতে পারত, অল্পের জন্য ভুল ও আলবিনোর দস্তানায় তা আটকে গেল| বিরতির আগে গোলকিপার গিল দর্শক হয়েই ছিলেন, পুরো খেলাটাই হল জামশেদপুরের অর্ধে|

বিরতির পরেও ইস্টবেঙ্গল খেলার ঝাঁজ আরও বাড়িয়ে দেয়| ৫৪ থেকে ৫৭ মিনিটের মধ্যে নন্দ-দিয়ামানতাকোস, বিষ্ণুর জামশেদপুরের রক্ষণ ফালাফালা করে তিনবার গোলের সুযোগ তৈরি করেছিল| দিয়ামানতাকোস নিজেই দু’বার গোল করার রাস্তায় ছিলেন| যখন মনে করা হচ্ছিল যে দিমি মনে হয় গোলস্কোরিং বুটটা এদিন সাজঘরে রেখে এসেছেন, ঠিক তখনই গ্রিক গোলমেশিন মনে করিয়ে দিলেন, গত মরসুমে পুরো লিগে তার চেয়ে বেশি গোল কেউ করেননি| ম্যাচের বয়স তখন ৬০ মিনিট| ডানদিক থেকে নন্দর নীচু ক্রস চলে যায় বিষ্ণুর কাছে, তবে বিষ্ণু বলটি ইচ্ছাকৃত ছাড়েন না ধরতে পারেননি, তা বলা কঠিন! সেই বল দিয়ামানতাকোসের কাছে যেতেই তিনি অনেকটা সময়ে নিয়ে রয়ে সয়ে গোল করলেন| তবে গোলের পরেই দিয়ামানতাকোসকে তুলে নেন কোচ, নামান গত ম্যাচের গোলদাতা ডেভিড লালহানসাঙ্গাকে| এক গোলে এগিয়ে থাকা কখনই কোনও দলকে সুরক্ষিত রাখতে পারে না, লাল-হলুদও দ্বিতীয় গোলের জন্য মরিয়া ছিল| ৬৮ মিনিটে বিষ্ণুর অনবদ্য ড্রিবলিংয়ে গোল চলে আসতেই পারত, কিন্তু অল্পের জন্য হল না| নির্ধারিত সময়ের পর রেফারি অতিরিক্ত সাত মিনিট যোগ করেন, তবে স্কোর একই থাকে|

ইস্টবেঙ্গল জিতে তিন পয়েন্ট পেল, ১২ ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে লিগ তালিকায় ১১ নম্বর থেকে ১০ নম্বরে উঠে এল| এর সঙ্গেই প্রথম ছয়ে থেকে নক আউটের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখল ইস্টবেঙ্গল| মারাত্মক চোট পেয়ে বাকি মরসুমের জন্য ছিটকে গিয়েছেন লাল-হলুদের মিডফিল্ডার মাদি তালাল| আর সেই ফরাসি যোদ্ধার দ্রুত আরোগ্য কামনায় বিরাট টিফো টাঙা ইস্টবেঙ্গল| সাক্ষী থাকল ১৬ হাজারের উপর দর্শক| চলতি বছর ইস্টবেঙ্গলের আর কোনও ঘরের মাঠে ম্যাচ নেই| বছরের শেষ ম্যাচে লাল-হলুদ সমর্থকদের মন ভালো করে দিলেন অস্কার|

(Feed Source: zeenews.com)