আদানিদের বিরুদ্ধে কারচুপি-জালিয়াতির অভিযোগ এনেছিল, বন্ধ হয়ে যাচ্ছে সেই Hindenburg Research

আদানিদের বিরুদ্ধে কারচুপি-জালিয়াতির অভিযোগ এনেছিল, বন্ধ হয়ে যাচ্ছে সেই Hindenburg Research

নয়াদিল্লি: শিল্পপতি গৌতম আদানির সংস্থার বিরুদ্ধে জালিয়াতি, কারচুপির অভিযোগ এনে সাড়া ফেলে দিয়েছিল তারা। এবার ঝাঁপ বন্ধ হওয়ার পথে আমেরিকার শেয়ার বিশ্লেষণকারী সংস্থা Hindenburg Research-এর। সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা নেট অ্যান্ডারসন বুধবার এই ঘোষণা করেছেন। জানিয়েছেন, অল্প সময়ের জন্য হলেও, হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ সংস্থায় জীবনের সবচেয়ে রোমাঞ্চকর সময় কাটিয়েছেন তিনি। (Hindenburg Research)

নেট বলেন, “হাতে যে কাজগুলি জমেছিল, সেগুলি শেষে করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরিকল্পনা ছিল আমাদের। আজই সেই দিন। আমি হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” সংস্থার ওয়েবসাইটে এই লেখা পোস্ট করেন তিনি। কারও হুমকি-হুঁশিয়ারি বা স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যার জেরে এই সিদ্ধান্ত নেননি বলে যদিও দাবি করেছেন নেট, কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কাটাছেঁড়া শুরু হয়েছে। জীবনে নতুন অধ্যায়ের সূচনা ঘটাতে চান বলে জানিয়েছেন। (Hindenburg Research Adani Report)

অর্থনৈতিক জালিয়াতি, কারচুপি, তছরুপ সংক্রান্ত বিষয়ের পর্দাফাঁসই মূল কাজ হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ সংস্থার। ২০১৭ সালে সংস্থাটির প্রতিষ্ঠা হয়। সেই থেকে গোটা পৃথিবীর কাছে কার্যত ত্রাসে পরিণত হয়েছিল তারা। তবে ভারতের অধিকাংশ মানুষই সংস্থাটির সঙ্গে পরিচিত হয়ে ওঠে ২০২২ সালে। ওই বছর ভারতীয় শিল্পপতি গৌতম আদানি এবং তাঁর সংস্থাকে নিয়ে বিস্ফোরক রিপোর্ট প্রকাশ করে তারা।

হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টের দাবি ছিল, আদানি গোষ্ঠী কারচুপি করে নিজেদের শেয়ার দর বাড়িয়েছিল নিজেদের সংস্থার। হিসাবে গরমিল করা, আমদানির খরচ বেশি দেখিয়ে নথি তৈরি এবং ঘুরপথে নিজেদের টাকাতেই নিজেদের সংস্থার শেয়ার লেনদেন করে কৃত্রিম ভাবে তার দাম বাড়িয়ে দেওয়া, এমন আরও একাধিক অভিযোগ তোলা হয়।

আদানিরা সেই অভিযোগ যদিও অস্বীকার করে। ভারতকে বদনামের চেষ্টা চলছে বলে দাবি করে তারা। কিন্তু ওই রিপোর্ট সামনে আসার পর আন্তর্জাতিক মহলে তাদের সুনাম যেমন নষ্ট হয়, দেশীয় বাজারেও শেয়ার পড়তে থাকে হু হু করে। নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা নিয়েও শরু হয় কাটাছেঁড়া। এমনকি ভারতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা SEBI-র তদন্ত, SEBI প্রধানে ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। এর পর সরকারি আধিকারিকদের ঘুষ দিয়ে বিদ্যুৎ প্রকল্পের বরাত হাসিল করার অভিযোগও সামনে আসে। সেই নিয়ে আদানিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আমেরিকার আদালত। সেই নিয়ে টানাপোড়েনের মধ্যেই হঠাৎই ঝাঁপ বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের।

এর আগে, নেট জানিয়েছিলেন, ধনী পরিবারের ছেলে নন তিনি। বিপুল টাকার জোগানও ছিল না। প্রভাবশালীদের সঙ্গে ওঠাবসা ছিল না তাঁর। তার পরও অনেক সাহস সঞ্চয় করে কাজে হাত দিয়েছিলেন তিনি। তাবড় শক্তিশালী মানুষ এবং সংস্থার দুর্নীতি ফাঁস করায় বিস্তর আইনি ঝামেলাও পোহাতে হয়েছে তাঁদের, এমনকি সদ্যোজাত শিশুকে বিয়ে বাড়িছাড়া হওয়ার উপক্রম হয়। তার পরও লড়াই চালিয়ে যান তিনি। তাই হঠাৎ সংস্থার ঝাঁপ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

(Feed Source: abplive.com)