)
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ‘অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস’ (The Academy Of Fine Arts) ছবির রিলিজ নিয়ে তরজা তুঙ্গে। সেন্সর বোর্ডের (Censor Board) সার্টিফিকেট পাওয়ার পরেও মুক্তির দু’দিন আগেই আটকে যায় ছবির রিলিজ। ৫ বছর ধরে সত্যজিত্ রায় ফিল্ম ইনস্টিটিউটের (SRFTI) ছাত্র ছাত্রীরা মিলেই তৈরি করেছে এই ছবি। প্রচারও করা হয়েছে জমিয়ে কিন্তু রিলিজের মাত্র দুদিন আগেই ফেডারেশনের (Federation) বাধার মুখে পড়ে এই ছবি ও অবশেষে আটকে যায় ছবি মুক্তি। এই প্রসঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিস্তারিত লেখেন পরিচালক জয়ব্রত দাস (Jayabrata Das)।
ফেডারেশনের দাবি এই ছবি শ্যুটিংয়ের ক্ষেত্রে মানা হয়নি নিয়ম। শুক্রবার ফেডারেশনের সঙ্গে মিটিংয়ে বসেও কোনও সমাধান হয়নি। রাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় জয়ব্রত লেখেন, “এইটুকুই বলতে পারব, রিলিজ কবে করতে পারব,সেই ডেট জানি না। একটাই কথা বলতে চাই, আমার কাছে অলরেডি পার্সোনাল অ্যাটাকের থ্রেট আসতে শুরু করেছে। তবে যদিও সেই কল গুলো ফেডারেশনের তরফ থেকে নয়। অনেকেই মাঝখান থেকে ইন্ডিপেন্ডেন্ট স্টুডেন্ট টিমের কাছ থেকে ফায়দা তোলার চেষ্টা করছেন। তাও জানিয়ে রাখতে চাই, আমাদের মিটিং ফলপ্রসূ হয় নি। যদিও শ্রী স্বরূপ বিশ্বাস আমাদের সাথে খুব ভালো ভাবে কথা বলেছেন। কিন্তু কথা বলার পর বুঝলাম, খুব ভুল করে ফেলেছি।সবকিছুই ভুল করেছি। ফিল্ম স্টুডেন্টরা ইন্ডিপেন্ডেন্ট কাজ করছে এটা ইন্ডাস্ট্রির কাছে প্রতারণার সমান। আমাদের গোটা টিম প্রতারক। আমরা প্রতারণা করেছি সিনেমা বানিয়ে। যখন আমাদের নিজস্ব ফান্ড শেষ তখন প্রমোদ ফিল্মসের থেকে পোস্ট প্রোডাকশনের আর্থিক সাহায্য নেওয়া ভুল হয়েছে, ওদের ফেডারেশনের সাথে অন্য সিনেমার , অন্য প্রোডাকশনের আর্থিক বকেয়ার হিসেব আমাদের আগেই করে নিতে হত”।
জয়ব্রত আরও লেখেন, “আমাদের জানানো হয়েছে, প্রমোদ ফিল্মসের কর্ণধার এসে কথা বললে রিলিজের পারমিশন নিয়ে ভাবনা চিন্তা করা হবে, অথবা, ওঁদের নাম পোস্টার, সিনেমা, ট্রেলার, সেন্সর সার্টিফিকেট সব কিছু থেকে নাম সরিয়ে নিতে হবে যেটার দুটোই যথেষ্ট সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। আজকে একটা কথাই বলতে চাই, আমরা নিজেরা সিনেমা বানিয়ে ভুল করেছি। আমরা প্রতারক। আমরা ভালো ভাবে রিলিজ করার চেষ্টা করছি । আমরা প্রতারক। আমরা সবাই যারা নিজের টাকা দিয়ে, বিনে পয়সায় কাজ করে সিনেমাটা বানিয়েছি তারা সবাই প্রতারক।”
ফেডারেশনের প্রশ্ন, যখনই কোনও ফিল্ম ইনস্টিটিউটের পড়ুয়ারা প্রযোজকের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে ছবি বানান, তখন সেটি আর শুধুই পড়ুয়াদের থাকে না। তা হলে তাঁরা কেন টেকনিশিয়ানদের নেবেন না? তাঁদের কাজ এবং ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করবেন? ইম্পার সভাপতি পিয়া সেনগুপ্ত সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন যে প্রযোজনা সংস্থা জুড়ে গেলে এবং রমরমিয়ে প্রচার হলে সেটি আর পড়ুয়াদের ছবি থাকে না। তাঁর মতে, একবার প্রযোজকের নাম জুড়ে গেলেই সেটি ‘কমার্শিয়াল মুভি’ হয়ে যায়। তাঁর দাবি, পরিচালক ও প্রযোজক উভয়েই সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন এবং টেকনিশিয়ানদের নির্দিষ্ট পাওনা না দেওয়ার উদ্দেশ্যে ‘পড়ুয়াদের ছবি’ বলে প্রচার করছেন। অন্যদিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় রব ওঠে ফেডারেশনের পক্ষ থেকে নাকি টাকা চাওয়া হয়েছে।
ফেডারেশন-এর সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস জানিয়েছেন, তাঁরা ছাত্র পরিচালকদের সহায়তা করতে আগ্রহী। তাঁর অভিযোগ মূলত পরিচালকের বিরুদ্ধে নয়, প্রযোজকের বিরুদ্ধে। তিনি দাবি করেছেন যে ছবি মুক্তির আগে সেন্সর সার্টিফিকেট থেকে প্রযোজকের নাম সরাতে হবে। সংগঠনের পক্ষ থেকে টাকা চাওয়ার অভিযোগ তিনি তীব্রভাবে অস্বীকার করেছেন। তিনি চ্যালেঞ্জ করেছেন, কেউ যদি প্রমাণ করতে পারে ফেডারেশন কাজ না করে এক পয়সাও নিয়েছে, তবে তিনি সভাপতির পদ ছেড়ে দেবেন।
এই বিতর্কের ফলে টলিউডের অন্দরে বড় প্রশ্ন উঠেছে, ভবিষ্যতে ফিল্ম ইনস্টিটিউটের ছাত্ররা পূর্ণদৈর্ঘ্যের ছবি বানিয়ে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির কথা ভাবতে ভরসা পাবে কি না। সোশ্যাল মিডিয়ায় তৈরি হয়েছে তীব্র প্রতিবাদ। সকলেই এখন ছবি মুক্তির অপেক্ষায়। কিন্তু কবে মুক্তি পাবে ‘অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস’ তা নিয়ে ক্রমশই বাড়ছে জল্পনা।
(Feed Source: zeenews.com)
