জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: হাতে এল আশ্চর্য তথ্য! এই ২০২৫ সাল বিশ্ব ইতিহাসে দ্বিতীয় (2025 second hottest year on record) বা তৃতীয় সর্বোচ্চ উষ্ণ বছর হতে চলেছে। সম্ভবত ২০২৪ সালটিই উষ্ণতার রেকর্ডে এযাবৎকালের সর্বোচ্চ হওয়ার জায়গাটা ধরে রাখবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোপার্নিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিসের (Copernicus Climate Change Service) বিজ্ঞানীরা মঙ্গলবার এমন আভাসই দিয়েছেন।
জলবায়ু এবং ভূরাজনৈতিক টানাপোড়েন
গত মাসে অনুষ্ঠিত জলবায়ু সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী দেশগুলি গ্রিনহাউস গ্যাসের নিঃসরণ কমানোর বিষয়ে আলোচনা করেছে, কিন্তু তারা উল্লেখজনক কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি। তবে, এর মধ্য দিয়ে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার ক্ষেত্রে ভূরাজনৈতিক টানাপোড়েনই আরও স্পষ্ট হয়েছে। আরও স্পষ্ট হয়েছে আমেরিকার মনোভাব। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জলবায়ু বিষয়ক উদ্যোগ কমিয়ে আনতে চাইছে। ওদিকে অন্য কয়েকটি দেশ কার্বন ডাই-অক্সাইডের নিঃসরণ কমানোর নিয়মটি শিথিল করার চেষ্টায় আছে।
শিল্পপূর্ব যুগের মতো
কোপার্নিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিস (Copernicus Climate Change Service) তথা C3S মাসিক বুলেটিনে বলেছে, সম্ভবত চলতি বছরও বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার শিল্পপূর্ব যুগের (১৮৫০–১৯০০) তুলনায় ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হতে পারে। এর মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো টানা তিন বছর এমন প্রবণতা দেখা যাবে। তাছাড়া জলবায়ু সংক্রান্ত যেসব তথ্য হাতে আসছে, তার মধ্যে দিয়ে বোঝা যাচ্ছে যে, কত দ্রুত জলবায়ুর পরিবর্তন হচ্ছে!
জলবায়ু পরিবর্তন
আসলে চলতি বছরও বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে আবহাওয়া চরমভাবাপন্ন থাকতে দেখা গিয়েছে। ফিলিপিন্সে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ২০০-র বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। স্পেনে গত ৩০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানলের ঘটনা ঘটেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই আবহাওয়া এমন ঝুঁকিপূর্ণ হচ্ছে।
পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে উষ্ণ বছর
গত বছর, অর্থাৎ, ২০২৪ সালটি পৃথিবীর ইতিহাসে ছিল সবচেয়ে উষ্ণ বছর। প্রাকৃতিক কারণে বছর-বছর তাপমাত্রা কিছুটা ওঠানামা করলেও বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন ধরে উষ্ণতা বৃদ্ধির প্রবণতা দেখেছেন। তাঁরা নিশ্চিত করেছেন যে, এই উষ্ণতাবৃদ্ধির প্রধান কারণ জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানো এবং তা থেকে তৈরি হওয়া গ্রিনহাউস গ্যাস। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা বলেছে, বিশ্বের তাপমাত্রা নথিভুক্তি শুরু করার পর থেকে করা হিসাব অনুসারে, বিশ্বে গত ১০ বছরই ছিল সবচেয়ে উষ্ণ বছর! C3S (সিথ্রিএস) ১৯৪০ সাল থেকে তাপমাত্রার তথ্য সংরক্ষণ করে আসছে। ১৮৫০-এর দিকের বিশ্ব-তাপমাত্রার পরিসংখ্যানের সঙ্গে মিলিয়ে এগুলি যাচাই করা হয়।
আর নয় ১.৫
২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তিতে অংশগ্রহণকারী দেশগুলি বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির হার ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস সীমার মধ্যে রাখার ব্যাপারে সম্মত হয়েছিল। সম্মত হয়েছিল কারণ, এতে উষ্ণতা বৃদ্ধির ভয়াবহতম প্রভাবগুলি এড়ানো সম্ভব হবে বলে মনে করা হয়েছিল। কিন্তু এখন রাষ্ট্রসংঘ বলছে, তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমিত রাখার লক্ষ্যটি বাস্তবে আর পূরণ করা সম্ভব নয়। তবে, দেশগুলিকে দ্রুত কার্বন নিঃসরণ কমানোর আহ্বান জানিয়েছে রাষ্ট্রসংঘ!
(Feed Source: zeenews.com)
