জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: অনেক দেরিতে বোধদয়। পাকিস্তানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরছে সংস্কৃত ভাষা। লাহোর ইউনিভার্সিটি অব ম্যানেজমেন্ট সায়েন্স চালু করেছে ক্লাসিক্যাল ল্যাঙ্গুয়েজের একটি কোর্স। তিন মাসের ওই ভাষার কোর্সের ব্যাপারে প্রবল উত্সাহ দেখিয়েছেন পড়ুয়া ও স্কলাররা। পড়ুয়ারা সপ্তাহের শেষের ওই কোর্সে সংস্কৃত শিখছেন, নিজের মধ্যে এনিয়ে আলোচনা করছেন। ভারতীয় টিভি সিরিয়াল মহাভারত-এর একটি অংশও উর্দু ভাষায় অনুবাদ করিয়ে দেখানো হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আলি ওসমান কাসেমি এক পাক সংবাদ পত্রে বলেন, সংস্কৃত অত্যন্ত ঋদ্ধ একটি ভাষা। পঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ে সংস্কৃতের একচি বিশাল আর্কাইভ রয়েছে। সেটি আজওপর্যন্ত অবহেলিত। পাম পাতার উপরে লেখা পান্ডুলিপি রয়েছে এখানে। এটি সংগ্রহ করেছিলেন বিখ্যাত স্কলার উলমার। কিন্তু ১৯৪৭ সালের পর থেকে তা আর উল্টেও দেখেননি পাকিস্তানের কোনও স্কলার। এখন একমাত্র বিদেশি স্কলাররা আসেন। তারাই এর খোঁজ খবর করেন। দেশের তরুণ প্রজন্ম সংস্কৃত শিখলে তারা হয়তো এনিয়ে চর্চা করবেন।
লাহোর বিশ্ববিদ্যালয় পরিকল্পনা করেছে তারা মহাভারত ও ভগবত গীতার উপরে একটা কোর্স চালু করবে। ড. কাসেমি বলেন, আগামী ১০-১৫ পর আমরা পাকিস্তানেই মহাভারত ও গীতার উপরে স্কলার দেখতে পাব। এক্ষেত্রে বড় উদ্যোগ নিয়েছেন অধ্যাপক সাহিদ রশিদ।
ড. ওসমানি আরও বলেন, ধ্রুপদী ভাষাগুলিতে বহু জ্ঞান লুকিয়ে রয়েছে। আমি আরবি এবং ফারসি ভাষা শেখা শুরু করেছিলাম। তারপর সংস্কৃত শিখি। অনলাইনে শেখার প্ল্যাটফর্মগুলির উপর নির্ভর করেছিলেন। এরপর কেমব্রিজের সংস্কৃত পণ্ডিত অ্যান্টোনিয়া রুপেল এবং অস্ট্রেলিয়ান ভারততত্ত্ববিদ ম্যাকোমাস টেলরের কাছেও পড়াশোনা করেছি। সংস্কৃত ব্যাকরণ শিখতে প্রায় এক বছর সময় লেগেছিল। আর আমি এখনও এটি পড়ছি।
বহু মানুষ ড. রশিদকে এখনও প্রশ্ন করেন, কেন সংস্কৃত শেখেন। রশিদ বলেন, আমি ওদের পাল্টা প্রশ্ন করি, কেন শিখব না? সংস্কৃত গোটা উপমহাদেশের যোগসূত্রকারী ভাষা। সংস্কৃত ব্যাকরণবিদ পাণিনির গ্রাম এই অঞ্চলেই ছিল। সিন্ধু সভ্যতার সময়ে এখানে আকর গন্থ তৈরি হয়েছিল। সংস্কৃত ভাষা একটি পাহাড়ে মতো। আমাদেরও এটা নিজের করে নেওয়া উচিত। সংস্কৃত আমাদেরও। কোনও নির্দিষ্ট ধর্মের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই।
রশিদ বলেন, ভেবে দেখুন যদি ভারতের মানুষ যদি আরও বেশি করে আরবি ভাষা শিখতে শুরু করেন, এবং পাকিস্তানের আরও বেশি মুসলমান সংস্কৃত শিখতে শুরু করেন, তবে তা দক্ষিণ এশিয়ার জন্য এক নতুন, আশাব্যঞ্জক সূচনা হতে পারে, যেখানে ভাষাগুলি আর বাধা না হয়ে সেতুর কাজ করবে।
(Feed Source: zeenews.com)
