#নয়াদিল্লি: ভ্লাদিমির পুতিন চাইছেন ভারত যেন আমেরিকার দিকে বেশি ঝুঁকে না পড়ে। কোয়াড সদস্য হিসেবে ভারত থাকুক পছন্দ নয় পুতিনের। এমনকি ভারত চিন সম্পর্ক ঠান্ডা করার ব্যাপারেও মস্কো ভূমিকা রাখতে চায়। সম্প্রতি ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল মস্কো গিয়ে রাশিয়ার নিরাপত্তা উপদেষ্টা নিকোলাইন পাট্রুশেভের সঙ্গে বৈঠক করেন।
ডোভাল তাঁকে বুঝিয়েছেন, রাশিয়ার অতিরিক্ত চিন-নির্ভরতা ভারতের জন্য প্রবল সমস্যার। দু বছরের বেশি হয়ে গেলও চিনের সঙ্গে সীমান্তে সংঘাত-পরিস্থিতি কাটেনি এবং অনেক চেষ্টা সত্ত্বেও চিনা সেনা পিছু হটছে না। সুতরাং মস্কোর বেজিং-প্রীতি নয়াদিল্লিকে বাধ্য করবে আমেরিকার দিকে যেতে।
ডোভাল আরও বলেছিলেন, ভারতের কৌশলগত মিত্র রাশিয়া এবং পশ্চিম ব্লকের কারণে এই অবস্থান থেকে ভারত পিছু হটতে চায় না। আমেরিকা, ভারত, জাপান এবং অস্ট্রেলিয়ার এই চতুর্দেশীয় অক্ষ বা কোয়াডের দিকে আগেও রাশিয়া আঙুল তুলেছে। মস্কোর বক্তব্য, কোয়াডকে ব্যবহার করে আমেরিকা সমুদ্রপথে নেটোর সম্প্রসারণ চায়।
Secretary of the Security Council of Russia Nikolai Patrushev held talks with National Security Advisor to PM of India Ajit Doval in Moscow. Issues related to security and regional & international agenda were discussed: Russian Embassy pic.twitter.com/9sZdHj2oUy
— ANI (@ANI) August 17, 2022
সম্প্রতি ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ব্যাঙ্ককের একটি অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলই কোয়াড-এর দ্বারা উপকৃত হতে পারে। কোয়াড থেকে কোনও অবস্থাতেই সরে দাঁড়াবে না ভারত। চিনের সঙ্গে বৃহত্তর ভূকৌশলগত দ্বন্দ্বে আমেরিকাকে ভবিষ্যতে আরও বেশি করে প্রয়োজন পড়বে ভারতের।
তাছাড়া, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের একচেটিয়া বাণিজ্যিক এবং কৌশলগত আধিপত্যের প্রয়াসে, অন্য দেশের মতো ভারতেরও ক্ষতি। সব মিলিয়ে এখনও রাশিয়ার থেকে সস্তায় অশোধিত তেল আমদানির পথ নয়াদিল্লির জন্য সুগম রয়েছে ঠিকই।
কিন্তু যুদ্ধ যত দীর্ঘায়িত হচ্ছে, চিনের উপর রাশিয়ার নির্ভরতা তত বাড়ছে। ফলে পাল্লা দিয়ে অস্বস্তি ও সমস্যা বাড়ছে ভারতের। কূটনৈতিক শিবিরের মতে, আর কত দিন ভারত পশ্চিম বিশ্ব এবং রাশিয়ার সঙ্গে সমান্তরাল লাভজনক কূটনীতি চালিয়ে যেতে পারবে, তা নিয়ে সংশয় আছে।
আসলে রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের মিত্রতা বহুদিনের। পাশাপাশি এশিয়াতে চিনকে একমাত্র পাল্টা জবাব দিতে পারে, এমন ক্ষমতা সম্পন্ন দেশ শুধু ভারত। তাই আমেরিকার কাছেও ভারতের গুরুত্ব অপরিসীম।