জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা শুরু করেছিল রাশিয়া। কেন করেছিল? হামলা শুরুর আগে রাশিয়া স্পষ্ট করে বলেছিল, ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগদান তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। সেটার জন্যই এই আক্রমণ কিনা, সেটা অবশ্য স্পষ্ট করে বলেনি তারা। কিন্তু অনুমান তেমনই ছিল। আর সেই প্রসঙ্গকে টেনেই সম্প্রতি রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান তথা রাশিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ তাৎপর্যপূর্ণ কথা বলেন। তিনি বলে দেন, ইউক্রেনের সামরিক জোট ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার আকাঙ্ক্ষা পরিত্যাগের কথা আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করলেও তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ বন্ধ করবে না রাশিয়া। দিমিত্রি মেদভেদেভকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু মনে করা হয়। ফলে তাঁর কথার একটা ওজন আছে, গুরুত্ব আছে, তাৎপর্যও আছে। ফ্রান্সের একটি টেলিভিশনকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময়ে এই কথা বলেন রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান মেদভেদেভ। তবে এর সঙ্গে তিনি এ-ও বলেন, একমাত্র কিছু সুনির্দিষ্ট শর্তেই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে কথা বলতে বসতে পারে রাশিয়া।
মেদভেদেভ বলেন, ইউক্রেনের পক্ষে নর্থ আটলান্টিক জোটে যোগ দেওয়ার আকাঙ্ক্ষা পরিত্যাগ এখন গুরুত্বপূর্ণ। তবে তাতেও শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে কিনা সেটা এখনই বলা যাচ্ছে না।
রাশিয়া বলেছে, তাদের লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত ইউক্রেনে তাদের এই সামরিক অভিযান অব্যাহত থাকবে। পুতিন বলছেন, তিনি ইউক্রেনকে নাৎসিমুক্ত করতে চান। যদিও কিয়েভ ও পশ্চিমি বিশ্ব তাঁর এই অভিযোগকে যুদ্ধের পক্ষে ভিত্তিহীন বলেই মন্তব্য করেছে। যুদ্ধ শুরুর পরে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে কয়েক দফা বৈঠক হয়, তবে এতে তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি। তা সত্ত্বেও মেদভেদেভ বলেন, সামনের ঘটনাপ্রবাহের উপরই এই কথা বলার বিষয়টি নির্ভর করছে। যদিও জেলেনস্কির সঙ্গে সাক্ষাতের ক্ষেত্রে আমরা প্রস্তুত।
ইউক্রেনের স্বাধীনতা দিবসে ইউক্রেনের রেলস্টেশনে রাশিয়ার হামলায় মারা গেলেন ২২ জন! কদিন ধরেই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট রাশিয়ার আক্রমণের আশঙ্কার কথা বলছিলেন। তবে তিনি বলেছিলেন ‘ভয়াবহ’ কোনও হামলার ছক কষছে রাশিয়া। সেটা হয়নি। সেই তুলনায় মোটামুটি ছোট আকারের একটা হামলা হয়েছে বলেই বলছে সংশ্লিষ্ট মহল। ইউক্রেনের একটি রেলস্টেশনে রুশ রকেট হামলায় ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রুশ হামলার ছমাস পূর্তির দিনে হামলার এই ঘটনাটি ঘটেছে। ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের চ্যাপলিন শহরে একটি গাড়িতে পাঁচজন পুড়ে মারা গেছেন। এঁদের মধ্যে একজনের বয়স ১১ বছর। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাষ্ট্রসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের মাঝেই এই হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। যদিও এই হামলা নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি রুশ কর্তৃপক্ষ। ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে বরং রেল স্টেশন বা ওই জাতীয় অসামরিক কোনও অঞ্চলকে লক্ষ্যবস্তু করার বিষয়টি আগাগোড়াই অস্বীকার করা হয়েছে।
(Source: zeenews.com)