স্পষ্ট দেখা যাবে বাষ্পীয় বলয়, রহস্যময় লাল বিন্দুও, চলতি মাসেই পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে বৃহস্পতি

স্পষ্ট দেখা যাবে বাষ্পীয় বলয়, রহস্যময় লাল বিন্দুও, চলতি মাসেই পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে বৃহস্পতি

নয়াদিল্লি: একদিনের জন্য হলেও, রাতের আকাশে এ বার আরও কাছে বৃহস্পতি (Jupiter)। তারা দেখার নেশা থাকলে, আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর এমনই সুবর্ণ সুযোগ আসতে চলেছে। ওই দিন সারারাত রাতের আকাশে শুধু বৃহস্পতির দেখাই মিলবে না, আরও বড় আকারে, সুস্পষ্ট ভাবে বৃহস্পতির দেখা মিলবে। শুধু তাই নয়, দূরবীক্ষণযন্ত্রে চোখ রাখলে বৃহত্তম গ্রহের তিন-চারটি উপগ্রহেরও (Jupiter Moons) দেখা মিলতে পারে (Jupiter Closest to Earth)।

চলতি মাসেই পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে বৃহস্পতি

আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর, পৃথিবীর সবচেয়ে কাছাকাছি আসছে বৃহস্পতি। কপক্ষপথে অবস্থান অনুযায়ী এমনিতে পৃথিবী থেকে বৃহস্পতির সর্বাধিক দূরত্ব ৬০ কোটি মাইল। ওই দিন পৃথিবী থেকে বৃহস্পতির দূরত্ব থাকবে ৩৬.৫ কোটি মাইল। গত ৭০ বছরে পৃথিবীর এত কাছাকাছি কখনও আসেনি বৃহস্পতি।

প্রতি ১৩ মাস অন্তর পৃথিবীর ঠিক বিপরীত অবস্থানে চলে আসে বৃহস্পতি। অর্থাৎ পশ্চিম দিকে সূর্যাস্ত ঘটে, পূর্বে থাকে বৃহস্পতি। ফলে অগাস্টের শেষ থেকে সেপ্টেম্বরে বৃহস্পতিকে বড় দেখায়। এক মাত্র পৃথিবী এবং বৃহস্পতিই বৃত্তাকার কক্ষপথে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে না। ফলে বছরভর তাদের মধ্যে দূরত্বের তারতম্য ঘটে প্রায়শই। এ বার একই সঙ্গে পৃথিবীর কাছাকাছি চলে আসছে বৃহস্পতি। তাই উত্তেজনা বাড়ছে।

তাই বৃহস্পতি এবং পৃথিবীর কাছাকাছি আসাকে ঐতিহাসিক মুহূর্ত বলে ব্যাখ্যা করছেন বিজ্ঞানীরা। আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা (NASA) জানিয়েছে, ভাল দূরবীক্ষণ যন্ত্র থাকলে, ওই দিন বৃহস্পতিকে শুধু স্পষ্ট ভাবে দেখাই যাবে না, তাকে জড়িয়ে থাকা বাষ্পীয় বলয়ও (অন্ত মাঝখানের বলয়টি) স্পষ্ট দেখা যাবে। বৃহস্পতির দক্ষিণ গোলার্ধে যে লাল বিন্দুটি রয়েছে, সেটি বৃহত্তম সৌরঘূর্ণি। বিগত ৩০০ বছর ধরে এক ভাবে সেটি দেখে আসছেন বিজ্ঞানীরা। শক্তিশাল দূরবীক্ষণ যন্ত্র থাকলে সেটিরও দেখা মিলবে।

এমনকি বৃহস্পতির তিন-চারটি উপগ্রহও দেখতে পাবেন মহাকাশপ্রেমীরা। ১৭ শতকে গ্যালিলিও প্রথম বৃহস্পতির তিনটি উপগ্রহ নিরীক্ষণ করেন। তাই সেগুলি গ্যালিলিয়ান উপগ্রহ নামেই পরিচিত। উঁচু জায়গায় দূরবীক্ষণ যন্ত্র বসালে সেগুলি স্পষ্ট দেখা যাবে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এখনএ পর্যন্ত বৃহস্পতির ৭৯টি উপগ্রহের সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এর মধ্যে ৫৩টির নামকরণ হয়েছে। এর মধ্যে বৃহত্তম চারটি, আইও, ইউরোপা, গ্যানিমিড এবং ক্যালিস্টো বৃহত্তম। এই চারটি উপগ্রহই গ্যালিলিয়ান উপগ্রহ।

বৃহস্পতিতেই লুকিয়ে সৃষ্টির রহস্য!

নাসা-র জুনো মহাকাশযান গত ছ’বছর ধরে বৃহস্পতিকে প্রদক্ষিণ করছে। বৃহস্পতির ভূপৃষ্ঠ, উপগ্রহ নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছে সেটি। বৃহ্স্পতির উপর পর্যবেক্ষণ চালিয়ে আগামী দিনে সৌরজগতের গঠন নিয়ে উল্লেখোগ্য অবিষ্কার উঠে আসতে পারে বলে আশাবাদী বিজ্ঞানীরা।

(Source: abplive.com)