জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধের মাঝখানে বহুদিন ধরেই আমেরিকার ছায়া পড়ে আছে। এবং যুদ্ধের বিভিন্ন পর্বে ইউক্রেনকে নানা ভাবে সাহায্য করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। অস্ত্রসাহায্য তো আছেই, আছে মৌখিক সমর্থন জোগানো এবং রাশিয়াকে বাক্যবাণে সতর্ক করে রাখার প্রক্রিয়া। যা নিয়ে রাশিয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য়ে বহুমুখী উত্তেজনার পরত জমা হয়েছে এই গোটা পর্বটা জুড়ে। সেই পরত সম্ভবত আর এক প্রস্ত পুরু হল। কেননা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রকারান্তরে রাশিয়াকে হুমিকই দিয়ে রেখেছে। রাশিয়া যেন কোনও ভাবেই ইউক্রেনে পারমাণবিক অস্ত্র বা রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার না করে! পোশাকি ভাবে বলতে গেলে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে এই মর্মে অনুরোধ করলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। যদি রাশিয়া আমেরিকার কথা কানে না তোলে সে ক্ষেত্রে আমেরিকা এমন কিছু পদক্ষেপ করতে বাধ্য হবে, যা রাশিয়ার পক্ষে ভালো হবে না। এ জাতীয় সাবধানবাণী একরকম স্পষ্ট করেই দিয়েছেন বাইডেন।
রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধে সম্প্রতি কিছু অগ্রগতি লক্ষ করা গিয়েছে। প্রসঙ্গত, ইউক্রেনের উত্তর-পূর্বে রুশ আক্রমণ প্রতিহত করতে কিছুটা সক্ষম হয়েছে ইউক্রেনের সেনা। কিছু ক্ষেত্রে তারা প্রত্যাঘাতও করতে সক্ষম হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে ইউক্রেনকে হুঁশিয়ারি দিয়ে পুতিন জানিয়েছিলেন, রুশ বাহিনীর উপর আঘাত করলে রাশিয়া এমন জবাব দেবে, যা কেউ কল্পনাও করতে পারবে না! পুতিনের এই কথার মধ্যে পারমাণবিক কিংবা রাসায়নিক অস্ত্রের কৌশলগত প্রয়োগের একটা আশঙ্কা কেউ কেউ দেখছেন বলে মত সংশ্লিষ্ট মহলের। আর তারই জেরে সম্ভবত বাইডেন পুতিনকে উদ্দেশ্য করে এই কথা বলেন।
শনিবার আমেরিকার এক সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে জো বাইডেন এই কথা বলেন। তিনি বলেন, রাশিয়া যদি ইউক্রেনের উপর কোনও চরম পদক্ষেপ করে, তবে তা যুদ্ধের অভিমুখকে সম্পূর্ণ বদলে দিতে পারে। এবং তার যে পরিণতি হবে, তা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অভিঘাতকেও ছাপিয়ে যাবে। তাই রাশিয়াকে এমন কোনও পদক্ষেপ করা থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধের পাশাপাশি প্রচ্ছন্ন হুমকিও দিয়ে রেখেছেন বাইডেন।
অবশ্য পারমাণবিক অস্ত্র-ব্যবহার প্রসঙ্গে নিজেদের বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ প্রথম থেকেই অস্বীকার করে আসছে রাশিয়া। তাদের তরফে জানানো হয়েছে, পারমাণবিক অস্ত্র বা রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহার নিয়ে রাশিয়ার সম্বন্ধে বাকি বিশ্বকে বরং ভুল কথা বুঝিয়ে যাচ্ছে আমেরিকার মতো কিছু নাক-গলানো দেশ।
এর অনেক আগেই, রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের সূচনাকালেই ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়েছিলেন, পশ্চিমি বিশ্বের তরফে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে অযাচিত কোনও হস্তক্ষেপ করা হলে কিংবা অন্য কোনও দেশের কার্যকলাপের জন্য রাশিয়ার নিরাপত্তা কোনও ভাবে বিঘ্নিত হলে রাশিয়ার তরফে এমন জবাব দেওয়া হবে, যা বিশ্ব-ইতিহাসে আগে কেউ কখনও দেখেনি।
(Source: zeenews.com)