এমপ্লয়মেন্ট, পাবলিক না ভলান্টারি? কোন প্রভিডেন্ট ফান্ড আপনার জন্য সেরা, জেনে নিন

এমপ্লয়মেন্ট, পাবলিক না ভলান্টারি? কোন প্রভিডেন্ট ফান্ড আপনার জন্য সেরা, জেনে নিন

বর্তমানে বিনিয়োগকারীদের জন্য তিনটি ভাল যোজনা রয়েছে। যেখানে বিনিয়োগ করলে সুরক্ষিতভাবে ভাল টাকা রিটার্ন পাওয়া সম্ভব। সেই তিনটি যোজনা হল এমপ্লয়মেন্ট প্রভিডেন্ট ফান্ড, পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড এবং ভলান্টারি প্রভিডেন্ট ফান্ড। এই স্কিমে বিনিয়োগ করলে নিশ্চিত মোটা টাকা রিটার্ন পাওয়া সম্ভব। এছাড়াও এই তিনটি যোজনায় ট্যাক্স ছাড়ের সুবিধাও পাওয়া যায়। এই কারণেই বেশি সময়ের জন্য বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদের কাছে প্রভিডেন্ট ফান্ড যোজনা খুবই জনপ্রিয়।

কিন্তু এই তিনটি ফান্ডে আলাদা আলাদা সুবিধা পাওয়া যায়। এর জন্য বিনিয়োগকারীদের এই তিনটি ফান্ডের মধ্যে থেকে যে কোন একটি ফান্ড বেছে নিতে খুবই সমস্যা হয়। যাঁরা চাকরি করেন, তাঁদের বেতনের থেকে কাটা হয় এমপ্লয়মেন্ট প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা। পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড যে কোন ব্যক্তি নিজেরাই খুলতে পারেন। এক্ষেত্রে তাঁরা চাকরি না করলেও হবে। অন্য দিকে, ভলান্টারি প্রভিডেন্ট ফান্ড বিনিয়োগকারীরা নিজেদের ইচ্ছা অনুযায়ী খুলতে পারেন। এর জন্য আলাদা অ্যাকাউন্ট খোলার প্রয়োজন নেই। এমপ্লয়মেন্ট প্রভিডেন্ট ফান্ডের অ্যাকাউন্টেই এই ফান্ডের বিনিয়োগ করা যায়। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক এই তিনটি ফান্ডের সমস্ত খুঁটিনাটি।

এমপ্লয়মেন্ট প্রভিডেন্ট ফান্ড –
সিএনবিসি টিভি ১৮-এর একটি রিপোর্ট অনুযায়ী এমপ্লয়মেন্ট প্রভিডেন্ট ফান্ডে চাকরিজীবী কর্মীদের নিজেদের বেতনের একটি অংশ পিপিএফ অ্যাকাউন্টে জমা রাখা হয়। এক্ষেত্রে কোম্পানির মালিকও ইপিএফ অ্যাকাউন্টে কর্মীদের মতোই টাকা জমা রাখে। এমপ্লয়মেন্ট প্রভিডেন্ট ফান্ডে জমা টাকার উপর সুদ পাওয়া যায়। এমপ্লয়মেন্ট প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকার ওপর ট্যাক্স ছাড়ের সুবিধা পাওয়া যায়।

পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড –
পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড সরকারের গ্যারান্টিযুক্ত একটি বিনিয়োগ যোজনা। এই ফান্ডে রিটার্নের পরিমাণ ফিক্সড থাকে এবং ট্যাক্স ছাড়ের সুবিধা পাওয়া যায়। পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ডের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল এই ফান্ডে চাকরিজীবি ছাড়াও অন্যান্যরা বিনিয়োগ করতে পারেন। পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ডে কোম্পানির মালিকের কোনও যোগদান থাকে না। পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ডে চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ পাওয়া যায়। পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ডে ১৫ বছরের জন্য বিনিয়োগ করা যেতে পারে।

ভলান্টারি প্রভিডেন্ট ফান্ড –
ভলান্টারি প্রভিডেন্ট ফান্ড হল একটি স্বেচ্ছা বিনিয়োগ ব্যবস্থা। এই ফান্ডে বিনিয়োগকারীরা নিজেদের ইচ্ছা অনুযায়ী বিনিয়োগ করতে পারেন। এমপ্লয়মেন্ট প্রভিডেন্ট ফান্ডে নিজেদের ইচ্ছা অনুযায়ী বিনিয়োগ করলে সেই টাকা ভলান্টারি প্রভিডেন্ট ফান্ডে চলে যায়। কিন্তু এই টাকা এমপ্লয়মেন্ট প্রভিডেন্ট ফান্ডে থাকা টাকার ১২% বিনিয়োগের থেকে আলাদা হয়। ভলান্টারি প্রভিডেন্ট ফান্ডে এমপ্লয়মেন্ট প্রভিডেন্ট ফান্ডের মতোই সুদ পাওয়া যায়। এর সুদের হার প্রতি বছর পরিবর্তন হয়।

কোথায় বিনিয়োগ লাভজনক –
চাকরিজীবীরা এমপ্লয়মেন্ট প্রভিডেন্ট ফান্ডে বিনিয়োগ করে থাকেন। যাঁরা বেতনভুক্ত কর্মচারী তাঁদের অবসরের পর বেশি টাকার ফান্ড করতে চাইলে ভলান্টারি প্রভিডেন্ট ফান্ডে বিনিয়োগ করা প্রয়োজন। বিনিয়োগকারীরা পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ডে আলাদা করে টাকা জমা করতে পারেন। পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড এবং ভলান্টারি প্রভিডেন্ট ফান্ডের মধ্যে বিনিয়োগকারীরা যে কোনও একটি ফান্ডে বিনিয়োগ করতে পারেন। ভলান্টারি প্রভিডেন্ট ফান্ডে বেশি হারে সুদ পাওয়া যায়। এর ফলে এখানে বিনিয়োগ করলে তেজ গতিতে একটি ভাল ফান্ড গড়ে তোলা সম্ভব যা অবসরের পর কাজে লাগবে।

যাঁরা ১৫ বছরের জন্য একটি আর্থিক লক্ষ্য পূরণ করতে চান, তাঁদের পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ডে বিনিয়োগ করা দরকার। যাঁদের উপার্জন বেশি তাঁরা ট্যাক্স-ফ্রি সুদের জন্য ভলান্টারি প্রভিডেন্ট ফান্ড এবং পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড দুটিতেই বিনিয়োগ করতে পারেন। চাকরিজীবীদের জন্য পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড একটি ভাল বিকল্প। কারণ এখানে বেশি সময়ের জন্য বিনিয়োগ করলে ভাল টাকার ফান্ড গড়ে তোলা সম্ভব। একই সঙ্গে ট্যাক্সের ক্ষেত্রেও ছাড় পাওয়া যায়।

Published by:Suman Biswas

(Source: news18.com)