‘জিরো কোভিড নীতি’ শি-র, কড়া বিধিনিষেধ, বাধ্যতামূলক পরীক্ষা, ফের লকডাউনের দিকে এগোচ্ছে চিন!

‘জিরো কোভিড নীতি’ শি-র, কড়া বিধিনিষেধ, বাধ্যতামূলক পরীক্ষা, ফের লকডাউনের দিকে এগোচ্ছে চিন!

নয়াদিল্লি: বিরোধী বলতে নামমাত্র উপস্থিতি, হাতেগোনা কয়েকজন সরব। তাই তৃতীয় দফায় শি চিনপিংয়ের (Xi Jinping) ক্ষমতাদখলের পথ কণ্টকমুক্ত বলেই মনে করা হচ্ছে। কিন্তু এই মুহর্তে চিনে (China) সরকারের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন সাধারণ নাগরিকই। বড় শহরের রাস্তার মোড়ে, উড়ালপুলের গায়ে সরকার বিরোধী ব্যানার, পোস্টার চোখে পড়ছি ইতিউতি। নেপথ্যে রয়েছে নতুন করে চালু হওয়া কোভিড বিধি  (COVID Rules)এবং কড়াকড়ি। গোটা দেশ ফের লকডাউনের (Lockdown) দিকেই এগোচ্ছে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন একাধিক ছবি সামনে এসেছে। তাতে বেজিংয়ে এমনই পোস্টার, ব্যানার ঝুলতে দেখা গিয়েছে। তাতে লেখা ছিল, ‘আমরা খাবার চাই, পিসিআর টেস্ট নয়। আমরা স্বাধীনতা চাই, লকডাউন নয়। আমরা সম্মান চাই, মিথ্যাচার নয়। দাস হয়ে নয়, নাগরিক হয়ে থাকতে চাই আমরা।’ আর একটি ব্যানারে শি-কে ক্ষমতাচ্যুত করা এবং স্কুল-কলেজ বয়কটের ডাক দিতে দেখা গিয়েছে। 

চিনে এই ধরনের প্রতিবাদ খুব একটা চোখে পড়ে না। এমন কিছু ঘটলেও, কানাকানি হয়ে পৌঁছয় না দেশের বাইরে। তাই ক্ষমতাসীন চিনা কমিউনিস্ট পার্টির ২০তম কংগ্রেস অধিবেশনে সাধারণ সম্পাদক শি-র হাতে তৃতীয় বারের জন্য ক্ষমতা হস্তান্তরের আগে সরকারের উদ্বেগ বেড়েছে বলে খবর। একই সঙ্গে শি-র হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের আগে বর্তমান কোভিড পরিস্থিতিও মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদের।

এখনও পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, শাংহাই এবং শেনঝেংয়ের মতো বড় শহরে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। ফলে কোভিড পরীক্ষা এবং কোয়ারান্টিনের উপর বিশেষ জোর দিচ্ছে প্রশাসন। বেশ কিছু জায়গায় স্কুল, থিয়েটার, জিম, ক্যাফে, রেস্তরাঁ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: WB COVID 19: দীপাবলির আগে ফের চোখ রাঙাচ্ছে করোনা, রাজ্যে সংক্রমণ ২০০ ছুঁইছুঁই

বুধবার শাংহাইয়ে ৪৭ জন নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, গত ১৩ জুলাইয়ের পর যা এখনও পর্যন্ত সর্বাধিক। সোমবার একদিনে দেশে ২ হাজার ৮৯ জন করোনায় সংক্রমিত হয়ে পড়েন। তবে বুধবার নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৪০৬। 

আনুষ্ঠানিক ভাবে লকডাউন ঘোষণা না করলেও, শাংহাইতে সোমবার কয়েক হাজার মানুষ গৃহবন্দি ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। কারণ রবিবার একদিনে সেখানে ২ হাজার ১০০ জন সংক্রমিত হয়ে পড়েন।

এর আগে, এ বছর এপ্রিল-মে মাসেই শাংহাইতে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। সোমবার স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, আগামী ১০ নভেম্বর পর্যন্ত সেখানকার ১০ জেলায় সপ্তাহে দু’বার করোনা পরীক্ষা বাধ্যতামূলক। করোনা রোগীর সংস্পর্শে এলে তিন দিনের কোয়ারান্টিন এবং বাড়িতে থেকে চারদিন নিজের শরীরের উপর নজরদারি চালানোর কথা বলা হয়েছে।

তিয়ানজিনের নাকাই জেলাতেও বুধবার বাড়ি থেকে বেরোন নিষিদ্ধ ছিল স্থানীয়দের। গুয়াংঝৌতে বুধবার ১৩ জন সংক্রমিত হন। তার জন্য স্কুল, বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হয়। এক এক করে করোনা পরীক্ষা করা হয় সব নাগরিকের। ঝেংঝৌ এবং হেনান প্রদেশে লকডাউন জারি করা হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। শাংচি প্রদেশের ইয়ংজি শহরেও দু’দিনের লকডাউন জারি হয় বলে সামনে এসেছে।

অন্য দেশের থেকে এই মুহূর্তে চিনের করোনা পরিস্থিতি অনেকটাই হালকা। কিন্তু অতিমারির সময় অর্থনীতি এবং সমাজের উপর যে প্রভাব পড়েছিল, তা স্মরণ করেই কড়া বিধিনিষেধ চালু করা হয়েছে। তাতেই নাগরিকদের একাংশ অসন্তুষ্ট বলে জানা গিয়েছে।