সিএবি-র পদ নিয়ে দর কষাকষি তুঙ্গে, সৌরভ ও বিরোধী গোষ্ঠীর সমঝোতা হবে?

সিএবি-র পদ নিয়ে দর কষাকষি তুঙ্গে, সৌরভ ও বিরোধী গোষ্ঠীর সমঝোতা হবে?

সন্দীপ সরকার, কলকাতা: সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ই (Sourav Ganguly) কি সিএবি (CAB) প্রেসিডেন্ট পদে মনোনয়ন জমা দেবেন? নাকি তাঁর পছন্দের প্রার্থীর হাতে তুলে দেবেন ব্যাটন? বিরোধী শিবির কি শেষ পর্যন্ত সমঝোতায় রাজি হবে? নাকি সিএবি-র মসনদ দখলের লড়াই গড়াবে নির্বাচন পর্যন্ত?

সৈয়দ মুস্তাক আলি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে শুক্রবার বাংলা বনাম ওড়িশা ম্যাচ শেষ হয়েছে একপেশেভাবে। হেলায় ম্যাচ জিতেছেন লক্ষ্মীরতন শুক্লর ছেলেরা। অথচ বঙ্গ ক্রিকেট সংস্থার মসনদ দখলের লড়াই যেন সুপার ওভারে যাওয়ার দশা। এতটাই টানটান উত্তেজনা আর নাটক জড়িয়ে যাচ্ছে পরতে পরতে।

বৃহস্পতিবার সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রেসিডেন্ট পদে মনোনয়ন জমা দেওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে তোলপাড় পড়ে গিয়েছিল। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বিরোধী শিবিরের অন্যতম প্রধান এক কর্তার সঙ্গে বৈঠক করলেন সৌরভ শিবিরের প্রতিনিধি। যে বৈঠকে আলোচনা হল পদ বিতরণ নিয়ে। দেখা হল, সমঝোতা করে নির্বাচন ছাড়া দুই পক্ষের প্রার্থীরা মিলে বঙ্গ ক্রিকেটের প্রশাসন সামলাতে পারেন কি না।

শুক্রবার বিকেলের সেই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে ছিল শাসক ও বিরোধী, দুই গোষ্ঠীই। কী নির্যাস সেই বৈঠকের? বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তেই আসতে পারেনি দুই শিবির। বরং পদ নিয়ে হিসেব নিকেশ আর দর কষাকষি তুঙ্গে পৌঁছে গিয়েছে।

কীরকম?

শোনা গেল, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় শিবির থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, বিরোধী শিবিরের অন্যতম এক মুখকে সিএবি-র একটি শীর্ষপদ ছাড়া হবে। বাকি চারটি পদে থাকবেন সৌরভের পছন্দের প্রার্থীরাই। কিন্তু বিরোধীরা সেই প্রস্তাবে রাজি বলে খবর নেই। বরং বিরোধী শিবির থেকে বলা হচ্ছে, তাদের পছন্দের অন্তত দুজনকে বড় পদ দিতেই হবে। তবেই সমঝোতা সম্ভব।

শোনা যাচ্ছে, সৌরভ সরাসরি মনোনয়ন জমা না দিয়ে তাঁর দাদা স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়কে প্রেসিডেন্ট পদে দাঁড় করাতে পারেন। বিরোধী শিবির থেকে বিশ্ব মজুমদারকে সচিব করার কথা বলা হচ্ছে। শাসক শিবির থেকে যুগ্মসচিব হিসাবে ভাসিয়ে দেওয়া হচ্ছে জয়দীপ মুখোপাধ্যায়ের নাম। বর্তমান যুগ্মসচিব, সৌরভ ঘনিষ্ঠ দেবব্রত দাস তাঁর পদে থেকে যেতে পারেন বলেও শোনা যাচ্ছে সিএবি-র কোনও কোনও মহল থেকে। কোষাধ্যক্ষ ও ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে শোনা যাচ্ছে দুই শিবিরের বেশ কিছু নাম। যদিও সবই এখন জল্পনার স্তরে।

বিরোধী শিবিরের অবস্থান চূড়ান্ত করতে শুক্রবারই একটি বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। সেই বৈঠক হয়েছে। কিন্তু সেখানে থাকতে পারেননি বিরোধী শিবিরের অন্যতম মুখ, প্রাক্তন সিএবি কর্তা বিশ্বরূপ দে। বউবাজারে মেট্রোর কাজে ধস নামায় কাউন্সিলর হিসাবে শুক্রবার কার্যত দম ফেলার ফুরসত পাননি বিশ্বরূপ। তাই তিনি সরাসরি বৈঠকে যোগ দিতে পারেননি।

শোনা গেল, শনিবার আর একটি বৈঠক করবেন বিরোধী কর্তারা। সেখানে সৌরভ শিবিরের প্রস্তাব নিয়ে চূড়ান্ত আলোচনা হবে। তারপরই ঠিক হবে, কী অবস্থান নেবেন বিরোধীরা। সৌরভ-বিরোধী শিবিরের একজন বলছিলেন, ‘সিএবি-র শীর্ষ পাঁচটি পদে আমাদের অন্তত দুজনকে না মানা হলে সমঝোতা না-ও হতে পারে। পাশাপাশি অ্যাপেক্স কাউন্সিলেও আমাদের প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। শনিবারের বৈঠকের পরেই আমাদের অবস্থান বোঝা যাবে।’