এই মহাশূন্যের অপার একাকীত্ব বিষ্ময়কর। এটি যিনি চাক্ষুষ করেছেন, তিনিই পৃথিবীর গুরত্বকে সঠিকভাবে উপলব্ধি করেন। কিছুটা এমনই বলেছিলেন অ্যাপোলো ৮-এর কমান্ড মডিউল পাইলট জিম লাভল। নাসার প্রথম মানববাহী চন্দ্রাভিযানের নায়ক ছিলেন তিনি। পৃথিবীর মাটিতে পা রেখে নিজের মনের ভাবনা এভাবেই প্রকাশ করেছিলেন মহামানব।
এরপর প্রায় পাঁচ দশক পেরিয়ে গিয়েছে। ক্রমেই মহাকাশ অভিযানে উন্নতি করেছে মানুষ। হয়েছে অকল্পনীয় সব দৃশ্যের সাক্ষী। কিন্তু তারপরেও, কতটুকুই বা দেখেছি আমরা? আর সেই কারণেই মহাশূন্যের প্রতি মানুষের বিস্ময়ও অন্তহীন। আরও একবার সেই বিস্ময় উস্কে দিল ওরিয়ন। নাসার আর্টেমিস মিশনের এই মহাকাশযান থেকে তোলা ‘আর্থ-রাইজ’-এর দৃশ্য অবাক করেছে বিশ্বকে।
পৃথিবী থেকে তো আকাশে চাঁদ ওঠা, সূর্য ওঠা আমরা আকছার দেখি। কিন্তু ভাবুন তো, চাঁদের থেকে পৃথিবী ওঠা দেখতে কেমন লাগবে? কল্পনা শক্তি যতই প্রবল হোক, এর আসল সৌন্দর্য্য যেন শিল্পীর কাছেও অকল্পনীয়। বাস্তব যে কল্পনার চেয়েও বেশই সুন্দর, তা বারবার প্রমাণ করেছে বিজ্ঞান। আর সেই বিজ্ঞানের অন্বেষণেই ধরা পড়ল মায়াবী দৃশ্য। আরও পড়ুন: ২০৩০ সালের আগেই চাঁদে ‘ঘর-বাড়ি’ হবে! কারা থাকতে পারবেন?
চাঁদের নিকটে কক্ষপথে প্রদক্ষিণরত অবস্থায়, ‘পৃথিবী ওঠা’র দৃশ্য ফ্রেমবন্দি করল ওরিয়ন। আজকের মতো আপনার ইন্টারনেট ঘাঁটার অভ্যাস সার্থক করতে, এই ভিডিয়োটিই যথেষ্ট।
ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (NASA) শেয়ার করা ভিডিয়োতে পৃথিবীকে চাঁদের ছায়াময় পৃষ্ঠের আড়াল থেকে বের হতে দেখা যাচ্ছে। ওরিয়নের সোলার অ্যারের ডগায় ইনস্টল করা একটি ক্যামেরার মাধ্যমে এই দৃশ্য ক্যাপচার করা হয়েছে।
ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, দিগন্ত থেকে যেন সূর্যি মামার মতোই ধীরে ধীরে উঠে আসছে আমাদের পৃথিবী। সেই নীল পৃথিবী, যেখানে ৮০০ কোটি মানুষের বাস। অথচ চাঁদ থেকে যেন সে শুধুই একটি নীল পিংপং বল।
গত ১৬ নভেম্বর নাসার এই যানের উৎক্ষেপন হয়। সফলভাবে চাঁদের ৮০ মাইল পর্যন্ত কাছ দিয়ে ফ্লাই-বাই সম্পন্ন করেছে ওরিয়ন। আর্টেমিস সিরিজের এই প্রথম মিশনের উদ্দেশ্য হল, আগামিদিনে মনুষ্যবাহী অভিযানের জন্য প্রস্তুত হওয়া।
নাসা জানিয়েছে, এই ওরিয়নে করে সেন্সর ফিট করা ডামি-ও পাঠানো হয়েছে। এর মাধ্যমে মহাকাশচারীদের ঠিক কী কী অনুভূতি, সমস্যা হতে পারে, তা পর্যবেক্ষণ করছেন বিজ্ঞানীরা।