অবসরকালীন জীবনের জন্য NPS না মিউচুয়াল ফান্ড?কোথায় বিনিয়োগ করলে ভাল রিটার্ন মিলবে

অবসরকালীন জীবনের জন্য NPS না মিউচুয়াল ফান্ড?কোথায় বিনিয়োগ করলে ভাল রিটার্ন মিলবে

#কলকাতা: কর্মজীবনে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গেই ছকে ফেলতে হবে অবসরকালীন জীবনের পরিকল্পনা। তার জন্য বিনিয়োগ করা আবশ্যক। তবে কোথায় বিনিয়োগ করব, সেটা বোঝাটাও জরুরি। এনপিএস না মিউচুয়াল ফান্ড – কোথায় টাকা বিনিয়োগ করা যাবে, তা নিয়ে বর্তমানে জোর দ্বন্দ্ব রয়েছে। কারণ দুটোই মার্কেটের সঙ্গে যুক্ত এবং প্রায় একই ধরনের সুবিধা প্রদান করে থাকে। তবে এই দুইয়ের মধ্যে স্বল্প-বিস্তর ফারাক রয়েছে। তা-হলে জেনে নেওয়া যাক, কোনটা বিনিয়োগকারীর জন্য উপযোগী। তবে এটা বিচার করতে গেলে অবশ্য বিনিয়োগকারীর আর্থিক লক্ষ্য মাথায় রাখা জরুরি।

এনপিএস কী?

এনপিএস বা ন্যাশনাল পেনশন স্কিম আসলে কেন্দ্রীয় সরকারের একটি উদ্যোগ। যার সুবিধা যে কোনও সেক্টরের কর্মচারী পেতে উপভোগ করতে পারবেন। এই স্কিমের আওতায় বিনিয়োগকারী একটা এনপিএস অ্যাকাউন্ট খুলে রেকারিং ডিপোজিট করতে পারেন। অবসর গ্রহণের পর বিনিয়োগকারী বিনিয়োগকৃত অর্থের আংশিক টাকা তুলতে পারেন।

উপকারিতা:

সরকার সমর্থিত হওয়ায় এনপিএস-এর ঝুঁকি কম। ফলে সবথেকে নিরাপদ মাধ্যমও এটি।

দীর্ঘ মেয়াদে যাঁরা বিনিয়োগ করতে চান, তাঁদের জন্য আদর্শ।

এই স্কিমে ১৯৬১ সালের আয়কর আইনের ৮০সি এবং ৮০সিসিডি ধারার অধীনে ট্যাক্স সংক্রান্ত সুবিধাও মেলে।

এনপিএস বিনিয়োগকারীরা মোট চার ধরনের সম্পদে বিনিয়োগ করতে পারেন – ইক্যুইটি, কর্পোরেট ডেট, সরকারি বন্ড এবং অ্যানুইটিজ।

মিউচুয়াল ফান্ড:

মিউচুয়াল ফান্ড হল টাকার একটা বড় পুল, যা নিয়ন্ত্রণ করেন পেশাদার ফান্ড ম্যানেজাররা। আসলে এখানে একই আর্থিক লক্ষ্য রয়েছে, এমন ধরনের একাধিক বিনিয়োগকারী নিজেদের টাকা স্টক, বন্ড, মানি মার্কেট ইনস্ট্রুমেন্ট-সহ এই ধরনের আরও নানা সম্পদে বিনিয়োগ করতে পারেন। উপযুক্ত ফি এবং কর বাদ দিয়ে এই বিনিয়োগ থেকে যে আয় এবং লাভ হবে, তা আনুপাতিক ভাবে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ভাগ হয়ে যাবে।

উপকারিতা:

মানি ম্যানেজমেন্ট স্পেশালিস্টরা এটি নিয়ন্ত্রণের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে থাকেন।

যে কোনও সময়ে এই সম্পদ রিডিম করা যায়। যেহেতু এর কোনও লক-ইন পিরিয়ড নেই। তবে যদি ইএলএসএস বিনিয়োগ থাকলে সে-ক্ষেত্রে তিন বছরের লক-ইন পিরিয়ড হয়।

মিউচুয়াল ফান্ডে এসআইপি কিন্তু বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীর মধ্যে আত্মবিশ্বাস বাড়ায়।

অন্যান্য বিনিয়োগ প্রকল্পের তুলনায় মিউচুয়াল ফান্ড কিন্তু নমনীয়। যে কোনও সময় এখানে প্রবেশ তো করাই যায়, আবার বেরিয়েও যাওয়া যায়।

এনপিএস না মিউচুয়াল ফান্ড – কোনটা ভাল?

যেখানে ইএলএসএস ইক্যুইটি ওরিয়েন্টেড মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করা হয়, সেখানে এনপিএস ইক্যুইটি ওরিয়েন্টেড মিউচুয়াল ফান্ডে টাকার বরাদ্দ কমিয়েছে। যার ফলে ইএলএসএস-এর ক্ষেত্রে এনপিএস-এর তুলনায় উচ্চ রিটার্নের সম্ভাবনা থাকে।

এনপিএস-এর ক্ষেত্রে ঝুঁকি কম থাকে। তবে ইএলএসএস যে-হেতু ইক্যুইটি ওরিয়েন্টেড মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করে, তাই ঝুঁকিও থাকে তুলনায় বেশি।

বিনিয়োগের উভয় মাধ্যমেই কর সংক্রান্ত সুবিধা পাওয়া যায়। তবে এনপিএস-এর কর সংক্রান্ত সুবিধাগুলি ইক্যুইটি মিউচুয়াল ফান্ডগুলির তুলনায় কিছুটা হলেও বেশি।

এনপিএস হল অবসর গ্রহণের পরের সব থেকে সাশ্রয়ী নিয়ন্ত্রিত ফান্ড।

এনপিএস অ্যাকাউন্টধারীদের টাকা তোলার ক্ষেত্রে কিছু বিধিনিষেধ রয়েছে। যত দিন না বিনিয়োগ ১০ বছর পূরণ হচ্ছে কিংবা বিনিয়োগকারী ৬০ বছরে পা দিচ্ছেন, তত দিন বিনিয়োগকৃত পুরো টাকা দাবি করা যায় না। তবে যদি সমস্ত মানদণ্ড পূরণ হয়, বিনিয়োগকারী টাকার একটা অংশই শুধু তুলতে পারবেন। যা খুব বেশি হলে ২৫ শতাংশ।

কর সুবিধাযুক্ত ইএলএসএস মাধ্যমের ইক্যুইটি মিউচুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রে একাধিক বিকল্পের সুবিধা পেয়ে থাকেন বিনিয়োগকারীরা। বিভিন্ন রকম স্কিম, নানা মেয়াদ যুক্ত বিনিয়োগ ইত্যাদি। এই নমনীয়তাকেই অবসরকালীন সময়ের জন্য কাজে লাগানো যায়।

(Feed Source: news18.com)