লাল নোটিস থেকে মুক্ত পঞ্জাব ব্যাঙ্ক থেকে লোন নিয়ে উধাও হওয়া মেহুল, বিজেপি-র ‘প্রাণের বন্ধু’, খোঁচা মমতার

লাল নোটিস থেকে মুক্ত পঞ্জাব ব্যাঙ্ক থেকে লোন নিয়ে উধাও হওয়া মেহুল, বিজেপি-র ‘প্রাণের বন্ধু’, খোঁচা মমতার

কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতি থেকে গরু, কয়লাপাচারে যুক্ত থাকার অভিযোগে বিদ্ধ তাঁর দল। তা নিয়ে লাগাতার বিরোধীদের আক্রমণের মুখে পড়ছে তৃণমূল। সেই আবহেই কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিরুদ্ধে গৌতম আদানির মতো শিল্পপতিদের হয়ে কাজ করার অভিযোগ তুললেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি-র বন্ধু বলেই লুঠপাট সত্ত্বেও তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেই বলে কার্যত দাবি করলেন মমতা।

মঙ্গলবার দু’দিনের ওড়িশা সফরে রওনা দিলেন মমতা। তার আগে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন। সেখানে ১৪ হাজার কোটি টাকার পঞ্জাব ব্যাঙ্ক দুর্নীতি কাণ্ডে অভিযুক্ত, ফেরার শিল্পপতি মেহুল চোকসির নাম রেড কর্নার নোটিস থেকে সরিয়ে নেওয়ার প্রসঙ্গে মতামত চাওয়া হয়। জবাবে মমতা বলেন, “হাতেগোনা কিছু লোক দেশ চালাচ্ছে। ব্য়াঙ্কগুলি দেউলিয়া। কর্মসংস্থান নেই। এলআইসি-র ভাঁড়ার শূন্য। ফাঁকা হতে বসেছে স্টেট ব্যাঙ্ক। কিছু লোক বিপুল টাকা লুটে নিয়ে গিয়েছে। আদানি থেকে মেহুল, এঁরা বিজেপি-র প্রাণের বন্ধু। বিজেপি সরকার তাঁদের জন্য়ই কাজ করছে।”

এক কোটি, দু’কোটি নয়, ১৪ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ হিরে ব্যবসায়ী মেহুলের বিরুদ্ধে। পঞ্জাব ব্যাঙ্ক থেকে বিপুল ঋণ নেওয়ার পাশাপাশি, ভুয়ো LoP দেখিয়ে অন্যত্র থেকেও টাকা তোলার অভিযোগ। তবে বিষয়টি কানাকানি হওয়ার আগেই দেশ ছেড়ে চম্পট দেন তিনি। তাঁকে (ফেরার ঘোষণা করা হয়। তাঁকে খুঁজে বের করতে রেড কর্নার নোটিসও জারি করে ইন্টারপোল। কিন্তু মাত্র পাঁচ বছরের মাথায় ইন্টারপোলের (Interpol Database) তথ্যভাণ্ডার থেকেই গায়েব হয়ে গিয়েছেন মেহুল। তাঁর বিরুদ্ধে জারি হওয়া রেড কর্নার নোটিস তো দূর, মেহুলের নামই সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

দুর্নীতি মামলায় মেহুল এবং তাঁর ভাগ্নে নীরব মোদির বিরুদ্ধে পৃথক চার্জশিট জমা দেয় সিবিআই। বিশ্বের ১৯৫টি সদস্য দেশকে নিয়ে তৈরি ইন্টারপোল। দাগী অপরাধী, সন্ত্রাসবাদী, দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের প্রত্যর্পণ, আত্মসমর্পণ, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া চালুর ক্ষেত্রে ইন্টারপোলের তরফে রেড কর্নার নোটিস জারি করা হয়। এই রেড কর্নার নোটিস আসলে সর্বোচ্চ পর্যায়ের সতর্কতা, যার মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তদন্তকারী সংস্থার কাঁধে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে খুঁজে বের করার দায়িত্ব বর্তায়।

২০১৮ সালে মেহুলের বিরুদ্ধে রেড কর্নার নোটিস জারি করে ইন্টারপোল। তারও ১০ মাস আগে ভারত ছেড়ে পালিয়ে যান মেহুল। অ্যান্টিগুয়া ও বারবুডার নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন।  আজও তাঁকে প্রত্যর্পণ করাতে পারেনি সিবিআই। বরং ৫১ দিন জেলে থাকার পর ২০২১ সালের জুলাই মাসে ডমিনিকার আদালতে জামিন পান মেহুল। চিকিৎসার সুযোগ পান। ফিটনেস সার্টিফিকেট পেলে অ্যান্টিগুয়া ফিরে যাওয়াতেও মেলে ছাড়পত্র। এমনকি ডমিনিকায় বেআইনি বাবে প্রবেশের মামলাও প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।  এ বার ইন্টারপোলের তথ্যভাণ্ডার থেকেও নাম উঠে গেল তাঁর।

(Feed Source: abplive.com)