কলকাতা: গোড়ার দিকে দহরম মহরম চোখে পড়লেও, রাজভবন এবং রাজ্য সরকারের মধ্যে দূরত্ব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আর্থিক কার্যকলাপের উপর নজরদারি থেকে সাপ্তাহিক কাজের রিপোর্ট, ইদানীং কালে বেশ সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে (CV Ananda Bose)। সেই আবহেই এ বার নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে (Netaji Subhas Open University) অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ করলেন তিনি (VC Appointment)।
বুধবারই বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শনে যান রাজ্যপাল
বুধবার ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট ইউনিভার্সিটি পরিদর্শনে গিয়ে নেতাদের সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্যপাল বোস। উপাচার্যের অভাবে মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিক ও আর্থিক অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে বলে ওই প্রতিনিধিরা রাজ্যপালকে জানান। এছাড়াও একাধিক অভাব-অভিযোগের কথা তুলে ধরেন রাজ্যপালের কাছে।
রাজভবন সূত্রে খবর, ফিরে এসেই সমস্যা ঘোচাতে উদ্যোগী হন রাজ্যপাল। নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসেবে ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই এক প্রবীণ অধ্যাপককে নিয়োগ করেন। তবে রাজভবন থেকে ওই অধ্যাপকের নাম জানানো হয়নি। রাজ্যপালের এই অবস্থান ঘিরেই রাজ্যের সঙ্গে তাঁর সমীকরণ নিয়ে জল্পনা জোর পাচ্ছে।
গত বছরের শেষ দিকে বাংলায় দায়িত্বে আসার পর থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের সঙ্গে রাজ্যপাল বোসের সুসম্পর্কই ছিল। নবান্ন থেকে মিষ্টি পৌঁছে যেত রাজভবনে, বাংলা শিখতে আগ্রহী রাজ্যপালের জন্য প্রতীকী হাতেখড়ির আয়োজন, আবার রাজ্যপালের মুখে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশস্তি, চোখ এড়ায়নি বঙ্গবাসীর। কিন্তু রাজ্যপাল এবং রাজ্যের এই সখ্য মোটেই পছন্দ হয়নি বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বের। তা জানাতেও দ্বিধা করেননি তাঁরা।
তার পর থেকেই কিছু দিন ধরে রাজ্যের সঙ্গে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে দেখা গিয়েছে রাজ্যপালকে। বিশেষ করে শিক্ষাক্ষেত্রে রাজ্যপালকে বিশেষ ভাবে সক্রিয় হতে দেখা গিয়েছে। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় গুলির উদ্দেশে রাজভবনের তরফে বিশেষ নির্দেশিকাও জারি করা হয়। জানানো হয়, আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত কোনও বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে আগে আচার্য তথা রাজ্যপালের অনুমোদন নিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে কী কাজ হচ্ছে, তা রিপোর্ট আকারে, প্রতি সপ্তাহের শেষ কাজের দিনে, ইমেল করে রাজভবনকে জানাতে হবে।
শিক্ষাক্ষেত্রে রাজ্যপালের সক্রিয়তায় রাজ্যের সঙ্গে সমীকরণ নিয়ে প্রশ্ন
রাজ্যপালের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলে রাজ্য সরকারও। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, “রাজ্যপালকে সম্মান জানিয়েই বলব, এই নির্দেশিকা যেন প্রত্য়াহার করা হয়। আমাদের অন্ধকারে রেখে এটি পাঠানো হয়েছে।” ওই নির্দেশিকার বৈধতা এবং নৈতিকতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন ব্রাত্য। কিন্তু তার পরও নিজের অবস্থান পাল্টাননি রাজ্যপাল। দফায় দফায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলি পরিদর্শনে গিয়েছেন। এ বার উপাচার্যও নিয়োগ করলেন।
(Feed Source: abplive.com)