হুগলি: কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জুতো আবিষ্কার আমরা অনেকেই পড়েছি। অনেক নাটকও মঞ্চস্থ হয়েছে এই জুতো আবিষ্কার নিয়ে। এবার চন্দননগরের ক্ষুদে পড়ুয়ার যে জুতো আবিষ্কার করল তা বিজ্ঞানের পাতায় লিখে রাখার মত। হুগলি চন্দননগরের বারাসাত দেপারার নবম শ্রেণীর ছাত্র সৌভিক শেঠ। এমনই এক জুতোর আবিষ্কার করেছেন যা পড়ে হাঁটলেই তার থেকে উৎপন্ন হবে বিদ্যুৎ। সেই বিদ্যুৎ দিয়েই মোবাইলে চার্জ, জিপিএস ট্রাকিং থেকে ক্যামেরা সবকিছুই চার্জ দেওয়া যাবে।
পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ার সময় তার মামার কাছে ইলেকট্রনিক্সের কাজ দেখতো সৌভিক। সেখান থেকে তার এই ইলেকট্রনিক্সের প্রতি আগ্রহ। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি বিজ্ঞান প্রদর্শন পুরস্কার পেয়েছেন চন্দননগর কানাইলাল স্কুলের ইংরেজি বিভাগের এই পড়ুয়া। সৌভিকের দাবি ,জুতো পড়ে হাঁটলে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা যাবে। একটি ২ হাজার এম এ এইচ ব্যাটারি সহজে চার্জ হবে। শুধুমাত্র এক কিলোমিটার হাঁটলেই চার্জ হবে এই ব্যাটারি।
আপাতত এই স্মার্ট জুতো পুরো সিস্টেমটা বাইরে থেকে করা আছে। এক মাসের মধ্যে সমস্ত গ্যাজেটকে জুতোর সোলের মধ্যে ঢুকিয়ে তৈরি করা হবে। সেই কাজও শুরু করে দিয়েছে সৌভিক। আর এর জন্য প্রয়োজন একটি জুতো প্রস্তুতকারক সংস্থার। যারা আর্থিকভাবে সাহায্য করবে সৌভিককে। যা জুতোর দুনিয়ায় নতুন দিশা আনবে বলে মনে করে আবিষ্কারক। যার ফলে উপকৃত হবেন ভ্রমণে বা পর্বতারোহনে বেরোনো যাত্রীরা।
সৌভিক জানায়, ফেলে দেওয়া জিনিস দিয়ে এই স্মার্ট সু তৈরি করেছি। এই জুতার মধ্যে জিপিএস সিস্টেম রয়েছে যা শিশুদের ক্ষেত্রে অনেকটা সুবিধার। অনেক সময় শিশু চুরি হলে তা খুঁজে পেতে অনেকটা সময় লাগে। কিন্তু এই স্মার্ট শুরু পরানো থাকলে তা সহজেই খুঁজে পাওয়া যাবে। শুধু তাই নয় পরিবারের লোক দেখতে পাবে তার শিশু কোথায় রয়েছে। জুতোয় স্পাই ক্যামেরা লাগানো রয়েছে। কোন সন্দেহজনক ব্যক্তি থাকলে তা সহজেই দেখা যাবে। যদিও কোনভাবেই ওই সন্দেহজনক ব্যক্তি বুঝতে পারবেন না যে তার জুতোয় ক্যামেরা লাগানো রয়েছে।
এই ক্ষুদে আবিষ্কারক আরও জানিয়েছে, হাঁটার ফলে চলন শক্তি তৈরি হচ্ছে আর তা থেকেই এই বিদ্যুৎ উৎপন্ন হচ্ছে। অনেক সময় যারা পাহাড়ে চড়েন তাদের ক্ষেত্রে এটা অনেক সুবিধার হবে। ভবিষ্যতের আইটিআই নিয়ে পড়ার ইচ্ছা রয়েছে সৌভিকের। যদি কোন বড় কোম্পানি যোগাযোগ করে তাহলে তার এই কাজ সার্থক হবে বলে মনে করছে সৌভিক। আপাতত এই জুতোকে কীভাবে আরও আধুনিক করা যায় সেটাই লক্ষ্য সৌভিকের।
সৌভিকের মা সোমা শেঠ বলেন, ছেলে পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ার সময় মামার কাছে টুনি লাইটের কাজ দেখতো। সেখান থেকেই তার এই ইচ্ছা। প্রথমে ফেলে দেওয়া জিনিস দিয়ে সাইকেলের একটি কলিং বেল কে অভিনব ভাবে তৈরি করে। পরবর্তীকালে একটি স্পাই সু তৈরি করে, যার মধ্যে রয়েছে ক্যামেরা সহ নেভিগেশন লাগানো। এটি তৈরি করতে অনেক খরচ সাপেক্ষ যদিও তার বাবা স্বরূপ শেঠ একজন জুট মিল শ্রমিক। তার পক্ষে এতটা ব্যয় করা সম্ভব নয়। এর জন্য যদি কোন সংস্থা বা কোন কোম্পানি এগিয়ে আসে তাহলে ভালো হয়। পরিবার কোন সময় তার বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়নি বরং তাকে উৎসাহ জাগিয়েছি। যেন সে নিজের কাজে এগিয়ে যেতে পারে।
(Feed Source: news18.com)