‘উইকেন্ডের চেয়ে সোমবার বেশি টিকিট বিক্রি হয়েছিল’, আক্ষেপ ‘দ্য কেরালা স্টোরি’র পরিবেশকের

‘উইকেন্ডের চেয়ে সোমবার বেশি টিকিট বিক্রি হয়েছিল’, আক্ষেপ ‘দ্য কেরালা স্টোরি’র পরিবেশকের

কলকাতা: ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ (The Kerala Story)। সুদীপ্ত সেন (Sudipto Sen) পরিচালিত এই ছবি এখন খবরের শিরোনামে। গত ৫ মে মুক্তি পেয়েছে এই ছবি। মুক্তির ঠিক চারদিনের মাথায় ছবিটিকে পশ্চিমবঙ্গে নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। যা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। কিন্তু হঠাৎ ছবির প্রদর্শনী নিষিদ্ধ ঘোষণা করায় একপ্রকার মাথায় হাত ডিস্ট্রিবিউটরের (Distributor)। বাংলায় ‘দ্য কেরালা স্টোরি’র ডিস্ট্রিবিউটর অর্থাৎ পরিবেশক শতদীপ সাহার গলায় আক্ষেপের সুর। জানালেন প্রথম চারদিনের বঙ্গে ব্যবসার পরিমাণ।

বাংলায় নিষিদ্ধ ‘দ্য কেরালা স্টোরি’, মাথায় হাত ডিস্ট্রিবিউটরদের

গত বছর ‘দ্য কেরালা স্টোরি’র ট্রেলার মুক্তি পাওয়ার পর থেকেই বিতর্ক শুরু হয় এই ছবি নিয়ে। একাধিক জায়গায় এই ছবি নিষিদ্ধ করার আবেদন উঠলেও তা খারিজ হয়ে যায়। এরপর ৫ মে দেশজুড়ে মুক্তি পায় এই ছবি। কিন্তু বিতর্কের আঁচ কমেনি। এরই মধ্যে গতকাল, সোমবার, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী এই ছবি বঙ্গে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। সেই নিয়ে আরও বাড়ে বিতর্ক।

প্রসঙ্গত, এই ছবি নিয়ে বিতর্ক যতই চলুক না কেন, বক্স অফিসে ছবির ব্যবসা ক্রমেই ঊর্ধ্বমুখী। এমনকী বাংলাতেও ভালই ব্যবসা করছিল এই ছবি। পশ্চিমবঙ্গে এই ছবির ডিস্ট্রিবিউটর শতদীপ সাহার সঙ্গে এদিন যোগাযোগ করা হলে তিনি এবিপি লাইভকে জানান প্রথম তিনদিনে দেড় কোটির ব্যবসা করে এই ছবি। রাজ্যজুড়ে ৯২টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় এই ছবি। মুহূর্তের ঘোষণায় ছবি নিষিদ্ধ হয়ে যাওয়ায় ঠিক কতটা ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে তাঁদের? শতদীপের কথায়, ‘কোটি কোটি টাকার ক্ষতি তো হবেই। ভাল বিক্রি শুরু হয়ে গিয়েছিল। শনিবার ও রবিবার যা টিকিট বিক্রি হয়েছিল, তার থেকে সোমবার বিক্রির পরিমাণ বেশি ছিল। মানে সবেমাত্রই টিকিট বিক্রিটা বাড়তে শুরু করেছিল। তখনই বন্ধ হয়ে গেল। বিপুল ক্ষতি তো অবশ্যই সবার প্রথম আমার হবে, আমার তো টাকা দিয়ে নেওয়া ছবি। এছাড়াও যাঁরা সিনেমা হলের মালিক তাঁদেরও বিশাল ক্ষতি হবে।’

যাঁরা আগেই টিকিট কেটে ফেলেছিলেন, তাঁদের কীভাবে রিফান্ড করা হবে? শতদীপের কথায়, ‘যাঁরা কাউন্টার থেকে টিকিট কেটেছিলেন, তাঁরা কাউন্টার থেকেই ফেরত পেয়ে যাবেন। আর যাঁরা অনলাইন কেটেছিলেন, তাঁরা ওয়েবসাইটের একটা ৭২ ঘণ্টার সময়সীমা থাকে, তার মধ্যে ফেরত পেয়ে যাবেন। সাইটগুলোর হেল্পলাইনে গেলেই বুঝতে পারবেন দর্শক।’

গোটা ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই হতাশ শতদীপ। প্রায় চারশো থেকে সাড়ে চারশো ছবি এই রাজ্যে ডিস্ট্রিবিউট করার পরেও এমন ঘটনা শতদীপের কর্মজীবনে প্রথম। দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে তিনি বলে চলেন, ‘ভাবতেও পারিনি কখনও যে এমন হবে। অবশ্যই যথেষ্ট খারাপ লাগছে। কিন্তু কিছু করারও নেই। মুখ্যমন্ত্রী যখন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তখন নিশ্চয়ই কিছু ভেবেই নিয়েছেন বলে মনে করি। সেটা তো মেনে চলতেই হবে।’ কিন্তু তিনি এও জানাচ্ছেন, গোটা রাজ্যে এই ছবি চলার জন্য প্রথম চারদিনে কোনও ঝামেলার খবর তাঁরা পাননি। শতদীপের কথায়, ‘যা ঝামেলা হয়েছে কাল রাত থেকে আজ সকালের দিকে একটু। তাও খুবই সামান্য। এর কারণ হচ্ছে যাঁরা অগ্রিম টিকিট বুক করে ফেলেছিলেন এবং ছবি নিষিদ্ধ হয়ে যাওয়ায় সেই টাকা ফেরত কীভাবে পাবেন বুঝতে পারছিলেন না, তাঁরা ক্ষোভ দেখান।’

অন্যদিকে, বিতর্কের আঁচ যতই বাড়ুক, দেশের বক্স অফিসে ছক্কা হাঁকাচ্ছে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’। ট্রেড অ্যানালিস্ট ও ফিল্ম সমালোচক তরণ আদর্শের ট্যুইট অনুযায়ী, মাত্র চার দিনে দেশে ৪৫.৭২ কোটি টাকা আয় করেছে এই ছবি। প্রসঙ্গত, বঙ্গে নিষিদ্ধ হলেও, প্রথমে মধ্যপ্রদেশ ও তারপর উত্তরপ্রদেশে করমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’কে।

(Feed Source: abplive.com)