‘…দায়ী মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁর দল’, চাকরি বাতিল প্রসঙ্গে বিস্ফোরক সুকান্ত

‘…দায়ী মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁর দল’, চাকরি বাতিল প্রসঙ্গে বিস্ফোরক সুকান্ত

ভেঙ্কটেশ্বর লাহিড়ী, কলকাতা: প্রাথমিকে এক সঙ্গে ৩৬ হাজার চাকরি বাতিল করেছে কলকাতা হাইকোর্ট৷ ২০১৬ সালে প্রাথমিকে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় প্রশিক্ষণবিহীন ৩৬ হাজার প্রার্থীর চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়৷ তিন মাসের মধ্যে নতুন নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি৷ তবে বিচারপতি এও জানিয়েছেন, যে প্রার্থীরা চাকরি পাওয়ার পর ইতিমধ্যেই প্রশিক্ষণ সম্পূর্ণ করেছেন, তাঁদের চাকরি থাকবে৷ এবার প্রাথমিকে ৩৬ হাজার অপ্রশিক্ষিত শিক্ষকদের চাকরি বাতিল প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সরকার এবং তাঁর দলকে কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।

শুক্রবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এখনই কারও চাকরি যাবে না৷ প্রশিক্ষণবিহীনরা আগামী চার মাস চাকরি করবেন৷ তবে পার্শ্ব শিক্ষকদের স্তরে বেতন পাবেন৷ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বেনিয়মের জন্য সংসদের তৎকালীন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকেই দায়ী করেছেন বিচারপতি৷ নির্দেশ দিতে গিয়ে তিনি বলেছেন, সরকার মনে করলে মানিক ভট্টাচার্যের থেকে টাকা নিয়ে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ার ব্যবস্থা করবে৷

এ প্রসঙ্গে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘ এই সরকার এবং শাসকদল  তৃণমূল কংগ্রেস দুর্নীতিটাকে এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছে যে আগামী ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। শিক্ষাৃসহ একের পর এক দুর্নীতির পাশাপাশি বাংলার আইন-শৃঙ্খলাও আজ বড়সড় প্রশ্নের মুখে। সবমিলিয়ে যে অরাজকতার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তার জন্য দায়ী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর দল’। সুকান্ত মজুমদারের কথায়, ‘পশ্চিমবঙ্গ যেদিকে এগোচ্ছে তাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় আগামী দিনে রাষ্ট্রপতি শাসন লাগু ছাড়া আর কোনও পথ থাকবে না’।

২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অ্যাপটিটিউড টেস্ট নেওয়ার নিয়ম ছিল৷ অভিযোগ, সেই টেস্ট নেওয়াই হয়নি৷ মামলাকারী পরিক্ষার্থীদের যুক্তি, অ্যাপটিটিউড টেস্টে নাম্বার তাদের দেওয়াই হয়নি। কেউ ০, কেউ ১ পেয়েছে। প্রশিক্ষণযুক্ত দের বঞ্চনার জন্যই অ্যাপটিটিউড টেস্টের নামে কারচুপি করে নিযোগ দেওয়া হয়েছে। প্রশিক্ষণহীনদের সুযোগ দিতেই এমন কারচুপি বলে অভিযোগ। মামলাকারীদের অ্যাপটিটিউড টেস্টের নম্বর দেওয়া হলে তাঁরা মেধা তালিকায় জায়গা পেতেন।

বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় রাজ্যের বিভিন্ন জেলার পরীক্ষকদের ডেকে বয়ান রেকর্ড করেন। অ্যাপটিটিউড টেস্ট নেওয়া হয়নি বলে তাঁকে সরাসরি জানান অনেক পরীক্ষক। এ ছাড়া সংরক্ষণ নীতিতেও অনিয়মের অভিযোগ সামনে আসে। এই সমস্ত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতেই নিয়ম মেনে নতুন করে ৪২৫০০ জনের নিয়োগ তালিকা তৈরির আবেদন করে মামলা দায়ের হয়৷

অপরদিকে, আদালত এই নির্দেশ দিলেও যাঁদের চাকরি প্রশ্নের মুখে, সেই শিক্ষকদের পাশেই দাঁড়ালো প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ৷ এ দিন পর্ষদ সভাপতি গৌতম পাল স্পষ্ট করে দিয়েছেন, কলকাতা হাইকোর্টের এই নির্দেশের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করতে চলেছেন তাঁরা৷ একই সঙ্গে গৌতম বাবু দাবি করেছেন, যে টেট উত্তীর্ণদের ২০১৬ সালে নিয়োগ করা হয়েছিল, তাঁদের প্রত্যেকেরই প্রশিক্ষণ সম্পূর্ণ হয়েছে৷ প্রত্যেক প্রার্থীর অ্যাপটিটিউড টেস্ট করা হয়েছে বলেও দাবি করেছেন পর্ষদ সভাপতি৷

(Feed Source: news18.com)