কী খাবে, কেন খাবে, কীভাবে ট্রেনিং, পরামর্শের ঝুলি নিয়ে সুনীল এখন জাতীয় দলের মেন্টরও

কী খাবে, কেন খাবে, কীভাবে ট্রেনিং, পরামর্শের ঝুলি নিয়ে সুনীল এখন জাতীয় দলের মেন্টরও

সন্দীপ সরকার, ভুবনেশ্বর: রবিবার ঘড়িতে তখন ঠিক বিকেল ৫টা। ভুবনেশ্বরের সেভেনথ ব্যাটেলিয়ন মাঠ। ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপে (Intercontinental Cup 2023) ভানুয়াটুর বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে যে মাঠে প্রস্তুতি সারার কথা ভারতীয় দলের। ব্লু টাইগার্সের টিমবাস মাঠের বাইরে এসে দাঁড়াল। আর টিমবাস থেকে সকলের আগে নামলেন তিনি। ড্রেসিংরুমে গিয়ে প্র্যাক্টিসের জন্য তৈরি হয়ে সকলের আগে মাঠে ঢুকলেন। তারপর থেকে ফিজিক্যাল ট্রেনিং হোক বা বল নিয়ে ড্রিবলিং, সবেতেই সকলের আগে।

তিনি, সুনীল ছেত্রী (Sunil Chhetri)। ভারতীয় ফুটবলের কিংবদন্তি। দেখে কে বলবে যে, বয়স আটত্রিশ পেরিয়েছে? ভুবনেশ্বরের তীব্র গরমেও অক্লান্ত। অনেক রাতে ম্য়াচ খেলে উঠে পরের দিনই নেমে পড়ছেন প্র্যাক্টিসে। অফুরন্ত প্রাণশক্তি। ভারতীয় ফুটবল দলে এখনও চিরতরুণ সুনীল। মাঠে খেলার পাশাপাশি যাঁকে মাঠের বাইরে গুরুদায়িত্বও পালন করতে হচ্ছে। সতীর্থদের মেন্টর হিসাবে উৎসাহ ও পরামর্শ দেওয়ার দায়িত্ব। আগলে রাখা যেন অভ্যাসে পরিণত করেছেন বাংলার জামাই।

ভারতীয় দলের (Indian Football Team) হয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলে সর্বোচ্চ ৮৫ গোল করার রেকর্ড রয়েছে, এমন ফুটবলারের থেকে কী শেখার সুযোগ হচ্ছে?

প্র্যাক্টিসের আগে এবিপি লাইভের প্রশ্নে জাতীয় দলের তরুণ ডিফেন্ডার আকাশ মিশ্র যা বললেন, চমকে দেওয়ার মতো। উত্তর প্রদেশের ফুটবালর বললেন, ‘অনেক কিছু শিখতে পারছি। শুধু খেলা নিয়ে নয়। সুনীল ভাইয়ের মতো এতদিন খেলতে হলে কী করণীয়, সেটাও শেখা উচিত। শিখছিও। শুধু মাঠের ফুটবল নিয়ে নয়। মাঠের বাইরেও অনেক কিছু শেখা যায় সুনীল ভাইয়ের কাছে।’ তারপর রীতিমতো হতবাক করে দিয়ে বললেন, ‘এতই অমায়িক সুনীল ভাই যে, নিজে থেকে এসে পরামর্শ দেয়। সব সময় আমাদের যেতেও হয় না ওর কাছে। কী খাব, শরীরের জন্য কোনটা ভাল, কোনটা খারাপ, সেটাও শিখি। ধরে ধরে বলে দেয়।’

শুনলে মনে হবে, যেন গল্পকথা। ক্রিকেট হোক বা ফুটবল, দেশে হোক কী বিদেশে, মহাতারকা মানেই হাজার বায়নাক্কা আর ব্যক্তিত্বের সংঘাতের কাহিনি তো মুখে মুখে ফেরে। ব্যতিক্রম অবশ্যই আছে। আর সুনীলও সেই ব্যতিক্রম হিসাবেই আছেন ভারতীয় দলে। যিনি প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারদের কাছে দুঃস্বপ্ন হলে, সতীর্থদের কাছে ত্রাতা।

আকাশ বলছিলেন, ‘সুনীল ভাইয়ের নেতৃত্বে আমাদের ফরওয়ার্ডরা দারুণ ফর্মে রয়েছে। গোল পাচ্ছে। তাতে রক্ষণের ওপর চাপ কমছে।’ প্রশংসা করলেন কোচ ইগর স্তিমাচেরও। বললেন, ‘এখনকার ফুটবলে রক্ষণভাগের ফুটবলাররাও আক্রমণে অংশ নেয়। কোচও সেই স্বাধীনতা দিচ্ছেন। উইং ধরে আক্রমণ তুলে আনছি। বিপক্ষ বক্সে ক্রস বাড়াতে চাই। আক্রমণে অবদান রাখতে চাই। সুনীল ভাইও সব সময় সবরকমভাবে উদ্বুদ্ধ করে।’

আটত্রিশেও সুনীল যেন প্রমাণ করে চলেছেন, বয়স নিছকই একটা সংখ্যা…

(Feed Source: abplive.com)